বন্যায় সিলেট ডুবে যাচ্ছে আর আপনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন? আপনি সকালে নাস্তা করছেন? দু'বার ভাত খাচ্ছেন? এমন চুলকানি নিয়ে মানুষ ঘুমায় কিভাবে?
১. সারা বিশ্বে গবেষণা হয় রাস্তাঘাট ও ব্রিজের উপর বন্যার কি প্রভাব পড়তে পারে। খুব বেশি হলে ব্রিজের পিলার নদী চ্যানেলের প্রবাহ ধীর করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা হয়। আর আমরা গবেষণা করছি ব্রীজ ও রাস্তাঘাটের কারণে বন্যা হওয়া নিয়ে। হাওড়ে বন্যা স্বাভাবিক একটি বিষয়। ১৯৮৮ সালে যখন কিছুই ছিল না, তখন কেন বন্যা হয়েছে?
বহু দেশে বন্যা হয়। বন্যা বা জলাবদ্ধতা মোকাবেলায় অতিরিক্ত পানির ড্রেইনেজ ব্যবস্থা রাখতে হয় - এটা বোঝার জন্য বিজ্ঞানী হতে হয় না।
২. গুজব ছড়ানো এক শ্রেণীর মানুষের স্বভাবে পরিণত হয়ে গেছে। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে কোন দেশের কি ছবি পাওয়া যায়, তা এনে হাজির করে বর্তমান ঘটনার বিবরণ হিসেবে!
সুরমা নদী দেশের একমাত্র নদী যার সঙ্গে ভারতের কোনো নদীর সম্পর্ক নেই। অথচ ফারাক্কা ও টিপাইমুখকে সিলেট ভ্রমণ করাচ্ছে! ত্রাণ দেয়ার কথা বলে ডাকাতি হচ্ছে - এমন গুজবও ছড়ানো হচ্ছে।
৩. যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় শিশু একাডেমি শিশুদের সাঁতার শেখানোর প্রকল্প নিয়েছে। ১০ দিন আগের এই খবর এখন প্রচার করে গুজব ছড়াচ্ছে - বন্যার জন্য মাত্র ত্রিশ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে!
৪. রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। এর আগেও মঞ্চ তৈরি হয়েছে। এবার পদ্মাসেতুর আদলে মঞ্চ করা হয়েছে। কিন্তু গুজব ছড়াচ্ছে পদ্মাসেতুর স্প্যান বলে! মেট্রোরেল রাজু ভাস্কর্যের উপরে গেল কেন, স্প্যান(মঞ্চ) কেন রাজু ভাস্কর্যের নীচে গেল - এটাও নাকি ইস্যু!
বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। ভারত ও বাংলাদেশে এবার বন্যা হয়েছে পাহাড়ি ঢলের কারণে।
আমাদের নদীগুলোতে পলি জমে নাব্যতা হারিয়েছে। চোখে দেখা যায় না বলে নদীশাসন নিয়ে পুকুরচুরি হয়। বাধগুলোর সংস্কার হয় না যথাযথভাবে। টিপাইমুখের বিকল্প ভাবার পাশাপাশি ড্যাম তৈরির উদ্যোগ নেয়া উচিত। ইত্যাদি প্রয়োজনীয় পরামর্শ না দিয়ে গুজব ছড়িয়ে কি অর্জন হবে? গুজবীরা কি নিজেদের পোস্টগুলো পড়ে দেখে নাকি নিয়মিত মুছে ফেলে? আয়নায় মুখ দেখতে লজ্জা হয় না এদের?
আপনার মতামত লিখুন: