• ঢাকা
  • রবিবার, ১২ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ; ২৬ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

ঢাকা  রবিবার, ১২ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ;   ২৬ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

আব্বাসী ইউটিউব হতে গণহারে তার অপ তৎপরতার ভিডিও মুছে ফেলছে ।

Nazmul Haque Bhuiyan
Daily J.B 24 ; প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ মে, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৬:৫৭ পিএম
আব্বাসী, এনায়েতুল্লাহ, জৈনপুরী , ইউটিউব ভিডিও,  পলায়ন

গনকমিশনের শ্বেতপত্র (বাংলাদেশ মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন-১ম খণ্ড) রিপোর্টের ৭৬১ পৃষ্ঠায় ওয়াজের মাধ্যমে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ান এমন ৩৫ জন ওয়াজিনদের নামের তালিকায় প্রথমেই আছে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসীর নাম। 
রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর পরই রিপোর্টে দেয়া আব্বাসীর বক্তব্যের ভিডিগুগুলো ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অথচ আব্বাসী টকশো'তে উল্লেখ করেছিল এই রিপোর্ট পড়ে দেখার তার কোন ইচ্ছা বা সময় নাই। অবশ্য ভিডিও ইউটিউব থেকে সরিয়ে লাভ নাই। এসব ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে, সবাই শুনেছে আর জায়গামত এর কপিও সংরক্ষিত আছে। এতে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে আব্বাসীর পেট-মোচড় দেয়া শুরু হয়েছে। না হলে সে ভিডিওগুলো সরাতো না। কত বড় বীরপুরুষ সে চিন্তা করা যায়!!


রিপোর্টে আছেঃ 
১. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসীঃ


এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী নামের এই ওয়াজ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অনলাইন প্লাটফর্মগুলােতে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও জঙ্গিবাদ প্রচারের অভিযােগ রয়েছে। তার উগ্র বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে যুবকরা জড়িয়ে পড়ছে সহিংস জঙ্গি কার্যক্রমে। এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী একজন ওয়াজ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তিনি ‘তাহরিকে খতমে নতুয়্যাত বাংলাদেশ’ নামক একটি মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সংগঠনের আমির। এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্দিরগঞ্জ থানার অন্তর্গত পাঠানটুলীতে ১৯৭৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাঠানটুলী আব্বাসী মঞ্জিল জৈনপুরী দরবার শরীফের বর্তমান গদ্দিনশীন পীর। এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী নিজেকে শাহ কারামত আলী জৈনপুরীর বংশধর দাবী
করেন এবং সেই সাথে সাইয়েদ বংশ বা নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ওয়ালাইহি ওয়াসল্লামের চাচা হযরত আব্বাস (রাদি.) এর বংশধর হিসেবে নামের শেষে আব্বাসী। ব্যবহার করে থাকেন। অনুসন্ধান বলছে তিনি আব্বাসী উপাধি ব্যবহারে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি প্রথমে স্কুলেই পড়াশােনা করেন। ১ম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত
জেনারেল লাইনে পড়াশােনা করেন। এইচএসসি শেষ করে তিনি ঢাকার ‘জামিয়া হােসাইনিয়া ইসলামিয়া' আরজাবাদ, মিরপুর ও মাদ্রাসা দারুর রাশাদ পল্লবী, মিরপুর হতে মিশকাত জামাত পর্যন্ত পড়ে চলে যান ভারতের নদওয়াতুল উলামা লক্ষৌ। সর্বশেষ তিনি দারুল উলুম করাচি পাকিস্তান হতে হাদিসের সনদ গ্রহণ করেন। তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযােগ রয়েছে।
২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর ‘Amontron TV' নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচারিত এক ভিডিওতে তিনি বলেন, 'এক বিচারপতি বলেছে মাদ্রাসা হচ্ছে সন্ত্রাসের আতুড়ঘর। বিচারপতি তুমি রিটায়ার্ড করেছো। তাই বেঁচে গিয়েছো। বিচারপতি তােমার মাথায় শয়তানে প্রস্রাব করেছে। শুনে রাখেন ডারউইনের আষাঢ়ে গল্প বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানাে হয়। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জ্ঞানী কেউ বের হয় না, নাস্তিক বের হয়। নাস্তিকদের গােমর এইবার ফাঁস হয়েছে। ইসলামপন্থীরা নাস্তিকদের গােমর ফাঁস করে দিয়েছে। মাদ্রাসার ছাত্ররা এখন সব জায়গাতে ফার্স্ট হয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা টিএসসিতে আড্ডা দেয়, গাঁজা-হেরােইন খায়।

বক্তব্যের লিংকঃ    https://m.youtube.com/watch?v=MbdVOLs8cNs

২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর ‘Real Muslim' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেন, "যারা সমাজে ওয়াজ বন্ধ করতে চায়, তারা আল্লাহর জিকির বন্ধ করতে চায়। আল্লাহর জিকির যেখানে বন্ধ হয়, শয়তান আর তাগুতের জিকির সেখানে শুরু হয়। স্বাধীন বাংলায় তা কোনদিন হবে। হতে দেয়া হবে না। এই দেশ ইসলামের বাংলাদেশ। কোনাে মন্ত্রীর কথায় দেশ চলবে না। বাংলাদেশ কোরানের বাংলাদেশ। এটা মুসলমানের বাংলাদেশ। ইসলামের বাংলাদেশ। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে দেশ থেকে বাদ দিবা তােমাকে এই দুঃসাহস কে দিয়েছে? ৩০ লক্ষ হিন্দুর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই, ৩০ লক্ষ মুসলমানের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হইছে। যতদিন পূর্বাকাশে সূর্য উদিত হয়ে পশ্চিমাকাশে অস্ত যাবে ততদিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে থাকবে, থাকবে।"
"দেশ স্বাধীন করতে ৩০ লক্ষ মুসলমান যদি রক্ত দিয়ে থাকে তবে এদেশে ইসলাম টিকিয়ে রাখতে ৭২ এর সংবিধানে বাংলাদেশ ফিরবে না। ১৪০০ বছর আগের মদিনার শাসনে বাংলাদেশ ফিরে যাবে ইনশাল্লাহ।


বক্তব্যের লিংকঃ  https://www.youtube.com/watch?v=WGxsThK-8fl

 

২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ে পূজা মন্ডপে কোরান পাওয়াকে কেন্দ্র করে কুমিল্লাতে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটে। অনেকগুলাে মন্দিরে আগুন দেয়া হয়। তার পরের দিন ১৪ অক্টোবর এক ভিডিওতে এসে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী কোন প্রকার প্রমাণ ছাড়াই অভিযােগ তােলেন, 
"মূর্তির পায়ের উপর কোরান রেখেছে উগ্রবাদী হিন্দুরা।"
তার এই বক্তব্যের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের মন্দির, বাড়িঘরে হামলা চালায় উগ্রপন্থী মৌলবাদীরা।

২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর MTV Bangla নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশিত ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, "আমরা দেখেছি কুমিল্লায় নানুয়ার দিঘিরপাড়ে হিন্দুদের পূজামন্ডপে মূর্তির পায়ের নিচে পবিত্র কোরান রেখে কোরানের অবমাননা করা হয়েছে। যেই কোরানুল করিমকে মুসলমানরা জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসে সেই কোরানকে কুমিল্লার উগ্রবাদী হিন্দুরা মূর্তির পায়ের নিচে রেখে কোরানের অবমাননার দ্বারা পৃথিবীর ২০০ কোটি মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত করেছে। পুলিশ এসে কোরানকে মূর্তির পায়ের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে। কিন্তু কোরান অবমাননার এতবড় ধৃষ্টতা উগ্রবাদী হিন্দুরা দেখিয়েছে, তাদেরকে কেন গ্রেপ্তার করা হলাে না। যেখানে আলেম ওলামাদেরকে বিভিন্ন অজুহাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেখানে এতবড় ধৃষ্টতা দেখানাের পরও উগ্রবাদী হিন্দুদেরকে কেন গ্রেপ্তার করা হলাে না। যদি সিসি ক্যামেরা অন্য কেউ সরিয়ে থাকে তবে পূজা কমিটির লােকজন হিন্দুরা সেটি প্রশাসনকে কেন জানায় নি?"
"তাহলে বােঝা যায় সম্পূর্ণ ঘটনাটি তাদেরই সাজানাে। কোরান করিমকে অবমাননার মাধ্যমে উগ্রবাদী হিন্দুরা তাদের সাম্প্রদায়িক বিষাক্ত বিষবাস্প বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চায় কিংবা বাংলাদেশে একটা গৃহযুদ্ধ চায়। অতএব আমরা সুস্পষ্টভাবে বলব উগ্রবাদী হিন্দু যারা কোরানের সাথে বেয়াদবি করেছে অনতিবিলম্বে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং কোরানের সাথে বেয়াদবি করার জন্য তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।"
"কতিপয় আলেম-ওলামারা বন্দী। এটা ভাবার কোন কারণ নেই যে, এজন্য আলেম ওলামারা চুপ থাকবে। যদি সমস্ত বাংলাদেশকে কারাগার ঘােষণা করে ওলামায়ে একরামকে বন্দী করা হয়, আর যদি তাদের ঠেকানাের জন্য সমস্ত বুলেট শেষ হয়ে যায়, তারপরও আল্লাহর কোরানের ইজ্জত রক্ষায় এদেশের মানুষ জানমাল নিয়ে নামতে বাধ্য হবে।"


বক্তব্যের লিংকঃ https://youtu.be/MuP4dNRjpJo

 

লেখকঃ Nazmul Haque Bhuiyan

 

 

Daily J.B 24 / জয় বাংলা২৪ নিউজ ডেস্ক

রাজনীতি বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ