
যে দেশের জাতীয় সম্পদ পাহারায় সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিতে হয়, সেই দেশের জনগণ নিয়ে শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরে প্রশ্ন উঠতেই পারে। এবং একথা তারা বলতেই পারে যে, কতটা অসভ্য, কতটা বর্বর, কতটা কুশিক্ষা এবং ২০০ টাকা, ১ প্যাকেট সিগারেটের ও একটু গাজার কাছে বিক্রি হয়ে যাই আমরা।
বলতে দ্বীধা নেই, ১৫ই আগষ্টের পর হতে যে প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে, সেদিন থেকেই প্রজন্মকে অকার্যকর, অথর্ব, অসভ্য, ও বর্বর হিসাবে গড়ে তোলার ক্লাস প্রত্যেকটা সেক্টরে পরিচালিত হয়েছে। এখন চলছে তাদের ২ য় #প্রজন্ম। অন্তত এদের দেশের প্রতি মনোনিবেশ করার কথা ছিলো। কিন্তু তখনও যখন আরো ভয়াবহ চরিত্র বিদ্যমান তখন বলতেই হয়, একটি সুশৃঙ্খল প্রজন্ম তৈরিতে বাংলাদেশ ব্যার্থ। বর্তমান সরকারও সেই প্রথাকে ভেঙে নতুন কিছু করতে পারেনি। বরং সরকারের মধ্যে থাকা কিছু রাজনৈতিক নেতা নিজেদের ব্যার্থতা ঢাকতে তাদেরকেই কাছে টেনেছে অকপটে। ফলাফল যা হবার তাই হয়েছে।
অতি স্থিতিশীলতার সাথে বলাযায় মূলতঃ রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বই প্রজন্ম ধ্বংসের প্রধান কারণ। যখন কোন উদিয়মান রক্ত বুঝতে পারে সুশিক্ষিত না হয়েও অর্থের মালিক হওয়া যায়। কোন নেতা হবার বাসনায় নয়, নিজ এলাকায় নিজের প্রভাব বিস্তারে এবং অর্থ উপার্জনের জন্য যখন কোন বয়ঃসন্ধিকালের মধ্যে থাকা উদীয়মান রক্ত রাজনৈতিক নেতার অনৈতিক সমর্থন পায় তখন তাকে সেই পথথেকে ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা মা বাবা অর্থাৎ পরিবারের থাকেনা। ওরা বুঝতে পারেনা যে, ওরা ব্যাবহার হচ্ছে, ওরা বুঝতে পারেনা যে, ওদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক নেতারা মসনদ পাকা পোক্ত করে।
বাংলাদেশে ৩০০ আসনের সংসদ, সেই সাথে কেন্দ্র, বিভাগ, জেলা, থানা, মহল্লায় মোট কতজন নেতা হয়, এই হিসাব কখনই ওরা করেনি। ওরা শুধু জানে অর্থ উপার্জনের সাথে সাথে নেতা হবার একটা রাস্তা রয়েছে। আর তখনই হয় নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা। কে কাকে পায়ে পিষ্ট করে নেতা হবে।
একবার ভেবে বলুনতো, কোন উদীয়মান তরুনের ২৪ ঘন্টাই যদি কাটে রাজনৈতিক নেতাদের ছুড়ে দেয়া এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য। তখন তার শিক্ষা বা সুশিক্ষিত হবার সুযোগ কোথায়? চরিত্র অভ্যস্ত হয়ে যায় একধরনের মারমুখী ও কূটবুদ্ধির হার্ড ডিস্ক।
অন্যদিকে বাংলাদেশকে পায়ের নিচে ফেলতে যে ১৫ আগষ্ট এসেছিলো, যারা এনেছিলো, দেশের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া যারা ছিলো তাদের দর্শন, তাদের বাসনা, তাদের ইচ্ছার প্রতিফলনতো আছেই। আছে যে, তার প্রমান #শেখ_হাসিনাকে ২১ বারের মতো প্রান নাশের চেষ্টা। তাহলে কি করে বলবেন সেই দেশে প্রজন্ম সঠিক পথে আছে?
কেউ নিজের ইচ্ছায়, কেউ নেতার ইচ্ছায়, কেউ এলাকার ভাইয়ের ইচ্ছায় রাজনৈতিক মঞ্চে আসতেই হবে। আর তাই বলা যায় দেশের ১৬ কোটি বা ১৮ কোটি বাঙালি সবাই রাজনীতি করে। তার অর্থই হলো বাংলাদেশ দিনকে দিন হারাচ্ছে মেধা, সঠিক শিক্ষা, নৈতিক জ্ঞান সমৃদ্ধ প্রজন্ম।
এই দেশে শেখ হাসিনা ভুল করে জন্ম নিয়েছে, হয়ত বলা যায় ভুল করে ভুল স্থানে জন্মেছে এই আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। সারা দুনিয়ায় আর ১ টি দেশ নেই, যে দেশে ভালো কিছু করতে গেলে রাজনীতিতে নাম লেখানো অথর্ব, অশিক্ষিত, বর্বর শ্রেনীর ১৮ কোটি মানুষের প্রায় অর্ধেকের বিরোধিতায় পড়তে হয়। মাথায় টুপি দিয়ে ইসলামের লেবাস লাগিয়ে যারা ধর্মকে ব্যাবসায়ী করে নিজেদের স্বার্থে, কারণ এরচেয়ে বেশি কোন যোগ্যতা তাদের নেই, যা দিয়ে জীবন অতিবাহিত করবে। তারাতো আছেই আগুন লাগা ঘরে কেরোসিন ঢেলে নিজের দলকে ভারি করতে।
ফলশ্রুতিতে কি হয়েছে সেটা দেখতেই পাচ্ছি। রাজনৈতিক ভাবে শেখ হাসিনাকে একজন পছন্দ করে না বলে, জাতীয় স্বার্থে নির্মিত জনমুখী কোন অকল্পনীয় বিষয় যখন বাস্তব হিসাবে ধরা দেয়, তখনও যদি দেখি সেই তারা যারা এই দেশকে চায়নি, এই দেশের উন্নয়ন চায়নি, যাদের পরিবার ৭১ এ হামলে পড়েছিলো শিল্প সাহিত্য ও মেরুদণ্ড ধ্বংস করতে তাদের প্রজন্ম একি ধারায় চলছে তখন বলতে দ্বিধা থাকেনা আসলেই আমরা বর্বর, আসভ্য, আসামাজিক, নিজের শত্রু নিজেই, কুশিক্ষিত। আর তাইতো পদ্মা সেতুর মতো স্থাপনা পাহারায় সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দিতে হয়। দেশের সর্বোচ্চ সামরিক পাওয়ারকে ডেকে আনতে হয়। এটা যে কতবড় লজ্জার, গ্লানিকর ও অপমানজনক সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আমাদেরকি একবারের জন্য প্রশ্ন জাগেনা যে, আমাদের জিনিস আমরা কেন সঠিক ভাবে ব্যাবহার করবোনা? আরে কুত্তাওতো কোথাও বসতে গেলে, শুয়ে থাকতে গেলে কয়েকবার জোরে জোরে শ্বাস ফেলে স্থান পরিস্কার করে নেয়। তাহলে কি আমরা কুত্তার চেয়ে অধম??
মোঃ তৈমুর মল্লিক
কলামিস্ট
প্রতিষ্ঠতা ও সাধারণ সম্পাদক
দুর্জয় বাংলা সাহিত্য ও সামাজিক ফাউন্ডেশন
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: