
মাদ্রাসা সভাপতির মনোনয়ন পেলেন জামায়াতের সাবেক আমীর। সূত্র মোতাবেক জানা যায় সরকার দলীয় এমপির সুপারিশে তিনি উক্ত পদে অধিষ্টিত হলেন । ইতিপূর্বে তিনি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, বর্তমানে তিনি তার অধ্যক্ষ পদ হতে অবসর গ্রহন করেছেন। শোনা যায় তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির ২ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রাজাপালং এমদাদুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে আবুল হাসান আলীর এই নিয়োগ প্রদানকে অবৈধ দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারীরা। এমনকি নব মনোনীত পরিচালনা কমিটির ১২ জন সদস্যের মধ্যে ১১ জন সদস্য বিতর্কিত আবুল হাসান আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অনাস্থা প্রকাশও করেছে।
মাদ্রাসাটির শিক্ষক এবং পরিচালনা কমিটির ১২ সদস্য মিলে সভাপতি হিসেবে নাম প্রস্তাব করে পাঠানো হয় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইটির নাম। কিন্তু সরকার দলীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করেছেন উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও রোকন সদস্য এবং প্রতিষ্ঠানটির সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল হাসান আলীকে।
আজ রবিবার (২৬ জুন) সকালে কক্সবাজার শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অবৈধভাবে স্মারক জালিয়াতি করে উখিয়া উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর এবং রোকন সদস্য আবুল হাসান আলীকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি।
লিখিত বক্তব্য প্রদানকালে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী অধ্যাপক মহিব উল্লাহ জানান, নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইটিকে মনোনয়ন দেয়ার জন্য ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু ওই আবেদনের স্মারক মুলে দেয়া হয় সাবেক অধ্যক্ষ ও জামায়াত নেতাকে। এ মনোনয়ন অবৈধ বলে বাতিলের দাবি জানানো হয়।
নব মনোনীত পরিচালনা কমিটির ১২ জন সদস্যের মধ্যে ১১ জন সদস্য বিতর্কিত আবুল হাসান আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। এমতাবস্থায় মাদ্রাসার ২৭জন শিক্ষক/কর্মচারীর বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। ফলে সীমাহীন কষ্টে জীবন যাপন করছেন তারা।
তিনি জানান, অবসরে যাওয়ার পর পর আবারও জালিয়াতি করে সভাপতি হওয়ার মিশন নিয়েছেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষ থাকাকালীন আবুল হাসান আলী নানা অনিয়ম এবং অর্থ আত্মসাতে জড়িত ছিলেন। শুধুমাত্র তার দায়িত্ব পালনের শেষ ৯ বছরে ২ কোটি ৫ লাখ টাকার বেশি আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির ২৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ২৩ জন উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুল হক, সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ হাশেম, মো. মাহমুদুল হক, সহকারী শিক্ষক মোস্তাক আহমদ প্রমুখ।
এ ব্যাপারে সাবেক অধ্যক্ষ ও নব মনোনীত সভাপতি আবুল হাসান আলী জানান, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কোন ব্যাক্তিকে মনোনয়ন দিলে তাকে অবোইধ বলার কোন সুযোগ নেই । প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব দিয়ে যার নাম পাঠানো হয়েছে তার বাইরে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অন্য কোনো ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিতে পারেন। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় তা করেছে।
এতে তার করার কিছু নেই। মূলত উখিয়া-টেকনাফের ক্ষমতাসীন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শাহিন আকতারের দেয়া সুপারিশ পত্রের আলোকে তাকে সভাপতি হিসেবে মনোনীত করা হয়। উখিয়া উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর এবং রোকন সদস্য থাকার কথা স্বীকার করলেও তিনি বর্তমানে জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত নন বলে দাবী করেন।
তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা প্রমাণ করতে পারলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে।
জেবি/সারাদেশ
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: