• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

ঢাকা  শুক্রবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ;   ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

কি করলে কি হত !

তৈমুর মল্লিক
Daily J.B 24 ; প্রকাশিত: বুধবার, ১৫ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১:৪০ এএম
আওয়ামীলীগ, বাজার নিয়ন্ত্রণ, শেখ হাসিনা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পুলিশ, র‍্যাব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রন

 

আমি বলছিনা, আপনি কাঁদেন বা হাসেন। আমি শুধু বলছি ঝিনুকের মধ্যে থেকে মুক্ত খুঁজে বের করুন । 


আমি যখন বাজারে যাই সংসারের খাবার ক্রয় করতে, তখন ভাবি এটাই কি মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ? যে দেশে পণ্যের উৎপাদিত স্থান হতে বাজারে এসে পৌছাতেই ক্রয়মূল্য হয়ে যায় প্রায় ৫ গুন ! এটা কেমন দেশ। কেমন মুসলমানের চরিত্র ! 


২০ টাকা বেড়ে ১শত টাকা হলে কিভাবে আয়ের সাথে সঙ্গতি থাকবে ক্রয়ের ? পৃথিবীর কোন ইতিহাসে কি এমন উদাহরণ দেয়া সম্ভব ? 
বিশ্বের অনেক দেশেই পণ্যের ঘাটতি দেখা যায়, তার পিছনে যথেষ্ট যৌক্তিক কারন থাকে । কিন্তু সেই দেশে পণ্যের ঘাটতির সুযোগে মূল্য বৃদ্ধি করে কালোবাজার তৈরি করা হয়েছে এমন নজীর নেই । 


সম্ভবত তার কয়েকটি কারণ রয়েছে- 

১। ব্যাক্তি হিসাবে প্রত্যেকটি মানুষ সুযোগের সৎ ব্যাবহার করার শিক্ষা পরিবার থেকেই পায়নি । 
২। মানবিক বিচারে প্রত্যেকটি মানুষ অন্যের প্রতি সমবেদনাশীল। 
৩। সামাজিক চরিত্র চুরি করা বা অন্যের সম্পদ দখল করার শিক্ষা দেয়ন।
৪। রাষ্ট্র যে নিয়মনীতি ও আইন দ্বারা অপরাধকে দমন করার জন্য সৃষ্টি করেছে সেটাকে মেনে চলা, মনেপ্রাণে লালন করা, ও সেই নিয়মনীতি, আইন অন্যকে মেনে চলতে বলার এক অনন্য উদাহরণ হিসাবে তারা কাজ করে ।   

   
তখন ভাবি, যেই বাজারে গিয়েছি, সেই বাজারের যে কোন ব্যাবসায়ী, সাধারণ মানুষকে আমাদের শিক্ষা, কালচার, নিয়মনীতি, আইন এসব বলতে গেলে নিশ্চিত ভাবে কপালে জুটবে অপমান, এমনকি শারিরীক লাঞ্চনা । আর তাই হয়তো কাউকেই এই বিষয়ে কথা বলতে দেখা যায় না । 
আমরা বিগত ৫০ বছরে পারিনি ছোট থেকে বড় কোন ব্যাবসায়ীকেই পাকা রশিদ ব্যাবহারে বাধ্য করতে । ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় নিয়ে আসতে । 


বলার অপেক্ষা রাখেনা, আমি বাজারে গিয়ে, কোন নিয়মনীতির কথা বললে -আমার দিকে যেমন তেড়ে আসে ১জন ব্যাবসায়ী ও তার দল । সরকারের কোন দল বাজারে গিয়ে একি কথা বললে তেড়ে আসে সমগ্র বাংলাদেশের ছোট থেকে বড় সকল বাজার ব্যাবসায়ী দল । 


প্রশ্ন জাগে তাহলে সরকার করবে কি ? কি তার করার আছে থাকে ? আমার ধারনা সরকারের তখন একটাই পথ খোলা থাকে আইন হাতে নিয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহন করা । যা আমি একক ভাবে পারিনা, অন্য কেউ সেটা পারার কথা নয় । 
কিন্তু সরকার কঠোর হলে তার ভাগ্যে একটাই কথা জোটে, এই সরকার মানুষের সুবিধা বিরোধী, ডিক্টেটর, স্বার্থবাদি ইত্যাদি। এই সরকার হটাও ।

 
বিষয়টি তখন সুকৌশলে আস্তে আস্তে গড়াতে থাকে । একটা সময় পরে হারিয়ে যায় আমি বাজারে গিয়ে ক্রয় করতে পারছিনা কোন পণ্য এই সমস্যা । সামনে চলে আসে তখন রাজনীতি, বিশ্বনীতি, আঞ্চলিক ক্ষমতার ব্যাবহার, সরকার পরিবর্তন, আগ্রাসী শক্তির আগ্রাসন ইত্যাদি । 


মনে মনে হাসি, এটাই হয়তো আমাদের বাংলাদেশ। যেখানে রাস্তায় দুর্ঘটনা সরকার বিরোধী আন্দলনে রূপ নিয়ে খালি হয় অন্য মায়ের কোল। বাজার দর ক্রয়সীমার বাইরে অথচ এর ফলাফল সরকার বিরোধী আন্দলনে রূপ নিয়ে খালি হয় অন্য মায়ের কোল। হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় মারা গেলো কোন ব্যাক্তি ফলাফল সরকার বিরোধী আন্দলনে রূপ নিয়ে খালি হয় অন্য মায়ের কোল। এভাবে বলতে থাকলে দেখা যাবে, রাতে স্বামী ও স্ত্রী মশারী টানানো নিয়ে ঝগড়া হয়েছে ফলাফল সরকার বিরোধী আন্দলনে রূপ নিয়ে খালি হয় অন্য মায়ের কোল। 


যাই কিছু লিখি, যাই কিছু বলি তবুও দায় নিতে হবে সেই সরকারকেই । কারন আমি আমাকে শুধরাতে রাজি নই, আমাকে শিক্ষিত, মানবিক করতে রাজি নই । আমরা মুসলমান দাবি করি কিন্তু এই বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর বাণী মেনে চলতে রাজি নই । ভোগ বাদি সমাজথেকে বেরিয়ে আইন মেনে চলতে রাজি নই বরং সেটাকে আরো দৃঢ় করতে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ফতোয়া দেই- সরকারই দায়ি । 


নিজেদের স্বার্থে সমস্যা নিজেরাই তৈরি করি ফলাফল সরকার বিরোধী আন্দলনে রূপ নিয়ে খালি হয় অন্য মায়ের কোল।


কোন ব্যাক্তি, কোন পরিবার, কোন সমাজ কোন দুর্নীতিবাজকে বলে না, দুর্নিতি করে ঘরে আসলেই, এই দরজা বন্ধ, সমাজের দরজা বন্ধ । বলাচলে আরো দুর্নীতির জন্য ব্যাক্তি , পরিবার, সমাজ তাকে উৎসাহিত করে । ফলাফল সরকার বিরোধী আন্দলনে রূপ নিয়ে খালি হয় অন্য মায়ের কোল।


এই সব আজগুবি ভাবনা ভাবতে ভাবতে চাহিদার সিকি অংশ কোন ভাবে ক্রয় করে ঘরে ফিরি ।

 
সারাংশঃ সরকার কঠোর হন। আমরা আপনাদের সহযোগিতা করবোনা এটাই সিদ্ধান্ত, চরিত্র ও রক্তের ধারা । তাই আপনারা কঠোর হন। স্টিম রোলার চালিয়ে দিন সমাজের বুকে । রক্তাক্ত হোক এই জনপদ। ভেসে যাক দুর্নীতির রক্তে সকল বাজার ঘাট । হয়তো প্রথমে একটু সমস্যা হবে । তবে সুদিন ফিরবেই । গণতন্ত্রের ধ্বজা ধরে ঝুলে থেকে লাভ নেই । ডিক্টেটর হন, চরম স্বৈরাচারী অবস্থা কায়েম করুন । কারন বাংলাদেশি জনগন লাঠির আঘাত, যাতাকলে পিষ্ট না হওয়া পর্যন্ত সোজা হয়না । কারন বেঈমানি আর বেঈমানি রক্তের সাথে মিশে আছে বংশপরম্পরায় । 

সেই রক্ত নিংড়ে বের করে নিতে চরম কোঠোর হন। কারো চোখের দিকে তাকিয়ে নয়, কোমরের নিচের অংশে তাকিয়ে দেশ পরিচালনা করুন । চোখের দিকে তাকালেই আপনারা আর পারবেন না কারন সেখানে মায়া, ভালোবাসা, স্বজনপ্রীতি সামনে চলে আসতে বাধ্য ।

 


মোঃ তৈমুর মল্লিক 
কলামিষ্ট 

 

 

Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক

সম্পাদকীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ