
সাম্প্রতিক সময়ে মিডিয়াতে বিএনপির বরপুত্র তারেক রহমানকে যারপর নেই সক্ষতা খুঁজে পাওয়া গেলো ইসরাইলের ভয়ংকর গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সাথে । শুধু তারেক রহমান নয় , ২০১৬ সালের পর থেকে বিভিন্ন ধাপে বিএনপির বিভিন্ন নেতাগনের সক্ষতারও প্রমান মিলেছে এটা কারো অজানা নয় । কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেই যোগাযোগ সীমাহীন হয়ে উঠেছে বলে বিভিন্ন মিডিয়ার তথ্যে প্রমাণ মেলে ।
পৃথিবীর খুব কম দেশই আছে, যেখানে মোসাদের হস্তক্ষেপ নেই । ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ বলা চলে সহোদর ভাই । বিশ্বব্যাপী অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যাবহার করে গোয়েন্দা নজরদারি ও তথ্যের আদান প্রদানে একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করে ।
আমরা জানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্রাজ্যবাদ কায়েম করে সকল দেশে বিভিন্ন প্রকার সমস্যা তৈরি ও পরবর্তিতে সেই দেশের অর্থনীতি, ভূরাজনীতি, আঞ্চলিক ক্ষমতায় নিজেদের প্রভু হিসাবে ধরে রাখে । আর এই সকল কাজের সহায়ক হিসাবে কাজ করে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ।
এই ধরনের কর্মকান্ডে তাদের প্রথম ও প্রাধান টার্গেট গণতন্ত্র নামক একটি বিভাজন পদ্ধতি সেই দেশে প্রতিষ্ঠা করা। পরবর্তিতে মার্কিন সরকারকে অর্থনিতি, ভূরাজনীতি, আঞ্চলিক ক্ষমতায় সহযোগীতা করার জন্য যে বা যারা চুক্তিবদ্ধ হবে তাদের দিকে নিজেদের সমর্থন জানানো , সেই লক্ষ্যে দেশের অভ্যান্তরে যে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য পূর্ণ সমর্থন, লজেস্টিক সাপোর্ট, অর্থনীতি প্রয়োগ ইত্যাদি কর্মকান্ডের জন্য কখনই আই এস আই, কখনও সি আই এ কখনও মোসাদ অথবা কখনও অন্যকোন গোয়েন্দা সংস্থাকে কিনে নিয়ে তাদের মাধ্যমে উক্ত দেশকে করে তুলবে অস্থিতিশীল। যে অস্থিতিশীলতার সামনে নাম থাকবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ।
এক কথায় যে কোন দেশের সরকার পরিবর্তনের মাধ্যমে নিজেদের দিকে পুতুল সরকার বসানোই সকল বিষয়ের কেন্দ্রবিন্দু ।
বর্তমানে মিডিয়ার বিভিন্ন নিউজের মাধ্যমে এটা পরিস্কার হয়েছে যে, পাকিস্তানের সি আই এ এর পাশাপাশি ইসরাইলের মোসাদ কে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটাতে বদ্ধপরিকর বিএনপি ও জামায়াত । আওয়ামীলীগের সাথে রাজনৈতিক দৌড়ে কুলিয়ে উঠতে না পেরে, তারা জনগণের সমর্থন আদায়ের চেয়ে উল্লেখিত সম্রাজ্যবাদীদের প্রতি বিএনপি , জামায়াত বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে । অথচ কথা ছিলো, রাজনীতিতে সাফল পেতে দেশের জনগণকে কাছে টানতে হবে, তারাই হবে মূল ভরসা ।
মোসাদ কতটা ভয়ংকর ?
ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার ১৯ মাসের মাথায় ১৯৪৯ সালে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডাভিড বেন গুরিয়ন ‘মোসাদ' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন৷ অত্যান্ত রহস্যে ঘেরা এই ভয়ংকর গোয়েন্দা সংস্থা । ‘মোসাদ' সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়৷ এমনকি এই সংস্থার সদর দপ্তরেরও কোন ঠিকানা বা টেলিফোন নম্বর নেই৷ কর্মীসংখ্যাও কারো জানা নেই৷
ইসরায়েলের আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র সংস্থার প্রধানের নাম প্রকাশ করা যায়৷ ‘মোসাদ'এর ওয়েবসাইটে সামান্য কিছু তথ্য ও যোগাযোগের জন্য ফর্ম রয়েছে৷ এমনকি ‘মোসাদ'এর হয়ে কাজ করতে চাইলে একটি ফর্মও রয়েছে৷ সরকারের জন্য কৌশলগত, রাজনৈতিক ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করার মত কাজের বাইরেও ‘মোসাদ'এর কাজের পরিধি অনেক বড় ।
সংস্থাটি অনেকটাই স্বঘোষিত উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে। যার মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের সীমানার বাইরে গোপনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা, শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলি যাতে বিশেষ ধরনের অস্ত্র তৈরি বা সংগ্রহ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা এবং দেশে-বিদেশে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলার ষড়যন্ত্র আগাম প্রতিরোধ করা৷
এছাড়া তালিকায় রয়েছে বিশেষ উদ্দেশ্য -
ইসরায়েলের সীমানার বাইরে বিশেষ অভিযানের পরিকল্পনা ও কার্যকর করার বিশেষ দায়িত্বও পালন করে ‘মোসাদ'৷
মূলত এই কাজটির জন্যই মোসাদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায় । বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড বা অপহরণের ঘটনায় ‘মোসাদ'এর এজেন্টদের হাত স্পষ্টভাবে টের পাওয়া গেছে কিংবা আঁচ করা গেছে৷ রাষ্ট্রের আদর্শে অনুপ্রাণিত এই সব এজেন্টদের রয়েছে উচ্চ মাত্রার পেশাদারীত্ব ও দক্ষতা । যা পৃথিবীর খুব কমেদেশের গোয়ান্দা সংস্থার রয়েছে ।
দুবাইয়ে এক হামাস নেতার হত্যার পেছনে ‘মোসাদ' জড়িত বলে সেদেশের প্রশাসন প্রায় নিশ্চিত৷
ভয়ংকর এই গোয়েন্দা সংস্থাকে ট্রেস করা খুবই মুশকিল শুধু নয়, অসম্ভব বলা চলে ।
বাংলাদেশে কি চায় মোসাদ ?
সহজ ভাষায় বললে বাংলাদেশের নিকট স্বীকৃতি চায় দেশটি । বাংলাদেশ এখনও দেশটিকে স্বীকৃতি দেয় নি । যার ফলে তাদের সাথে কোন কুটনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশের নেই । যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান বরাবর নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পাশে, সেহেতু তারা প্রায় নিশ্চিত বর্তমান সরকার তাদের স্বীকৃতি দেবে না। ফলে তাদের এখন সময় হয়েছে ভায়োলেন্স এর পথ বেছে নেবার ।
মিডিয়ায় প্রকাশিত - বিএনপির বরপূত্র তারেক রহমান ও তাদের নেতাকর্মিদের সরাসরি মেন্দি এন সাফাদির সাথে যোগাযোগ ইসরাইলের সেই পথকে সহজ করে দেবে । মেন্দি এন সাফাদি মোসাদের সেই তথাকথি এজেন্ট । অনেকে বলে থাকেন তিনি কি সেটার প্রমান কারো কাছে নেই ।
আপনারা উপরে লিখিত বক্তব্যে পেয়েছেন, মোসাদ রহস্যে ঘেরা এক গোয়েন্দা সংস্থা । যাদের ওয়েভ সাইটে তেমন কিছুই নেই । সদর দপ্তরের কোন টেলিফোন নাম্বার নেই । ওয়েভ সাইটে রয়েছে একটি ফর্ম মোসাদের হয়ে কাজ করার জন্য । তাহলে কি বাংলাদেশ সরকার এখন খুঁজে দেখবে, ঠিক কতজন বাংলাদেশি মোসাদের হয়ে কাজ করার জন্য ফর্ম পূরণ করেছে ? তারা কারা ?
শেষ কথা
পরিস্কার ভাবে বিএনপির সক্ষতা প্রমানিত । গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে দেশের মধ্যে ভায়োলেন্স ও টার্গেট কিলিং এর নিমিত্তে বিএনপি ও জামায়াত কি তবে ইসরাইলের রহস্যে ঘেরা মোসাদের সাথে হাত মিলিয়েছে ? যদি টার্গেট কিলিং উদ্দেশ্য হয় - তাহলে মেন্দি এন সাফাদির ভিডিওতে এবং তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এটা পরিস্কার যে, ১ নং টার্গেট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
ভিডিও বার্তায় তারেক রহমানকে জানানো বার্তায় মেন্দি এন সাফাদি বলেছে - "মিশন সাকসেস"। এই শব্দের মাধ্যমে তিনি কোন মিশনের কথা বলেছেন ? বিএনপির দলের সাথে আলোচনা ? না কি অন্য কোন মিশন ? বাংলাদেশের সাধারান ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধোকা দিয়ে যে ফিলিস্তিনির জন্য কাঁদে বিএনপি জামায়াত সেটা নিছক লোক দেখানো সেটাই প্রমানিত হলো ।
সময় থাকতে দেশের সকল মানুষ গর্জে উঠুন । কোন ভাবেই বিদেশি কোন ভয়ংকর খুনি কলোনি, গোষ্ঠি, ব্যাক্তির ঠাই এই দেশে নেই । শেখ হাসিনার নিরাপত্তায় আমাদের দায়িত্ব বিএনপি ও জামায়াতের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা , সাবধান হওয়া ।
#শেখ_হাসিনা #বিএনপি #তারেক_রহমান #রুমিন_ফারহানা #খালেদা_জিয়া #জামায়াত #ইসরাইল #মোসাদ #মেন্দি_এন_সাফাদি
Daily J.B 24 / মোঃ তৈমুর মল্লিক
আপনার মতামত লিখুন: