
ডেইলি ষ্টারকে জিজ্ঞাসা করুন আমদানি ও দেশে উৎপাদিত তেলের শ্রেণিবিভাগ কি -
দেশের মধ্যে রাজনীতির নামে একটি রাজনৈতিক দল ও তাদের দোসররা কখনও ডলার রিজার্ভ, কখনও বিদ্যুত, কখনও জ্বালানী তেল, কখনও ভোজ্যতেল নিয়ে আন্দোলনের নামে দেশকে টেনে হিচড়ে শ্রীলঙ্কার দিকে নিয়ে যেতে উঠে পড়ে লেগেছে। তাদের উদ্দেশ্য একটাই - শেখ হাসিনাকে সরিয়ে এই দেশকে আবার তলাবিহীন ঝুড়ি তৈরি করা। মুখে তাদের দেশের কথা, বাস্তবিক ভাবে তাদের অতিত বলে ঘৃণিত ও নগ্ন দুর্নীতি, দখলদারিত্ব, জঙ্গিবাদ ও বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নের কথা। শেখ হাসিনাকে সরাতে বিগত ১০ বছরে তাদের কোন এজেন্ডাই বাস্তবে রূপ দেয়নি, কারন তাদের সকল বিষয়ের পুঁজি ছিলো গুজব নির্ভর, গনবিরোধী, মিথ্যা, ও চক্রান্তমূলক।
রাজনীতি আশাকরে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে প্রতিপক্ষের সাথে মোকাবেলা। কিন্তু রাজনীতির সেই পাঠ ব্যাতিরেকে ও তার যোগ্যতাহীন বহিঃপ্রকাশ একটা দলকে নিয়ে যায় খাঁদের কিনারে। করে দেয় দেউলিয়া। বিএনপি ও তার মিত্রপক্ষের তেমনই অবস্থা এখন দৃশ্যমান। আর তাই হারিকেন হাতে নিয়ে তারা আন্দোলন করার মতো গোমূর্খ ও শিক্ষাহীন আচরণ দৃশ্যমান করেছে। তাদের একবার মাথায় আসেনি, বর্তমান বৈশ্বিক সংকটে এই ধরণের আন্দোলন তাদের আরো ক্ষতি করবে।
যাইহোক গত মঙ্গলবার ডেইলি স্টার পত্রিকার বাংলা ভার্সন মিথ্যা ও গুজব রটাতে সহায়তা করার জন্য একটি নিউজ প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়েছিলো, দেশে তেলের মজুদ শেষ হয়ে আসছে
১। দেশে পেট্রল মজুত আছে ১৩ দিনের
২। অকটেন মজুত আছে ১১ দিনের।
এরপরেই মূলত গুজবটা বিএনপি ও তার মিত্ররা ছড়িয়ে দেয় সর্বত্র।
কিন্তু বিএনপি ও তার মিত্ররা এমনি অশিক্ষিত ও গোমূর্খ যে তারা এটা বিচার করেনি যে, আসলে বাংলাদেশে কোন কোন তেল আমদানি করা হয়, আর কোন কোন তেল দেশেই উৎপাদিত হয়।
ডেইলি স্টার পত্রিকা দেশে রিউমার ছড়াতে নাম উল্লেখ করেছে-
১। পেট্রোল
২। অকটেনের
অথচ এই দুই শ্রেনীর তেল দেশেই উৎপাদিত হয়, যা বিদেশি আমদানি নির্ভর নয়।
তেল উৎপাদন বা আমদানি একটা ধারাবাহিক চলমান পক্রিয়া। যেখানে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয় -
১। ডিজেল
২। জেট ফুয়েল
৩। ফার্নেস
তাও এই ৩ ধরনের তেল সরাসরি আমদানি করা হয়না, যা নিয়ে আসা হয় "ক্রুড" আকারে অর্থাৎ অপরিশোধিত তেল হিসাবে। সেটা পরিশোধন করে তৈরি হয়, ডিজেল, জেট ফুয়েল ও ফার্নেস।
পরবর্তীতে চাপে পড়ে নিউজটি ডেইলি ষ্টার সরিয়ে নেয়।
BPC বলছে আগামী ৩২ দিন পর্যন্ত কোন জ্বালানি সমস্যা আমাদের নেই। এরপরে আগামী ৬ মাসের জ্বালানী তেল পাইপ লাইনে রয়েছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে ৩২ দিন কেন, কেন সেটা ১ বছর বা ২ বছরের জন্য নয়।
উত্তর খুবই সহজ,
বাংলাদেশে একমাত্র তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি। যাদের স্বাভাবিক ধারণ ক্ষমতা ৪৫ দিনের। তাদের যে ডিপো আছে, তাদের যে রিসোর্স আছে, সেটা দিয়ে তারা ৪৫ দিনের সংরক্ষণ করতে পারবে।
যার সুবাধে বলা হয় এটি একটি চলমান পক্রিয়া। তাছাড়া ফার্নেস, জেট ফুয়েল এসব বেশিদিন সংরক্ষণ করে রাখার মতো উপাদান নয়।
ডেইলি স্টার গুজব তৈরী করেছে, স্প্রে করেছে বিএনপি ও তার মিত্ররা। কিন্তু কেউ একবার তলিয়ে দেখেনা যে, ডেইলি স্টার কি বলেছে।
ডেইলি স্টার বলেছে, ডলারের উচ্চ মূল্যের কারণে কেউ এল সি খুলতে পারছে না। অথচ পেট্রোল ও অকটেন বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়না, বাংলাদেশের গ্যাস ক্ষেত্র থেকে পাওয়া "কন্ডেনসেট" কে পরিশোধন করে তৈরি হয় পেট্রোল ও অকটেন। যার সাথে এলসি খোলার কোন সম্পর্ক নেই, বৈশ্বিক কোন হিসাব নিকাশ নেই।
গুজব বন্ধ করতে কন্ডেনসেট কি বাংলাদেশের কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে বলা উচিত।
কন্ডেনসেট (Condensate) বর্ণহীন অথবা ঈষৎ হলুদ বর্ণের তরল হাইড্রোকার্বন। প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকালে ভূগর্ভ থেকে গ্যাসের সঙ্গে কন্ডেনসেট বেরিয়ে আসে। গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদিত গ্যাসের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কন্ডেনসেট আহরিত হলে ওই গ্যাসকে ভেজা গ্যাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
বাংলাদেশে আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে ৭টি গ্যাসক্ষেত্রকে গ্যাস-কন্ডেনসেট ক্ষেত্র হিসেবে অভিহিত করা হয়। এগুলি থেকে প্রতিদিন প্রায় ১,৩২৫ ব্যারেল কন্ডেনসেট উৎপাদিত হয়। প্রধান প্রধান কন্ডেনসেট উৎপাদনক্ষেত্র হলো -
১। কৈলাসটিলা
২। রশিদপুর
৩। জালালাবাদ
৪। হবিগঞ্জ
৫। বিয়ানীবাজার।
গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদিত কন্ডেনসেট প্রক্রিয়াকরণ প্লান্টে পরিশোধন করা হয়। আনুমানিক প্রায় ৩৮,০০০ টন কন্ডেনসেট প্রতি বছর বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারীতে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম উৎপাদনের জন্য সরবরাহ করা হয়। গ্যাসক্ষেত্রসমূহ থেকে উৎপাদিত কন্ডেনসেট ২০০ কিমি দীর্ঘ এবং ৬´´ ব্যাস বিশিষ্ট পাইপলাইনযোগে আশুগঞ্জ রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কো. লিমিটেডডের স্টোরেজ ট্যাংক পর্যন্ত পরিবাহিত হয়। সেখান থেকে পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারী পর্যন্ত বার্জযোগে কন্ডেনসেট পরিবহণ করা হয়।
বর্তমানে পদ্মা, মেঘনা এবং যমুনা তেল বাজারতাককরণ এর কাজটি করে থাকে।
আমি আমার মত করে তথ্য প্রকাশ করলাম। গুজব প্রতিরোধে আমাদের দায়িত্ব রয়েছে সঠিক বিষয় উপস্থাপন করা।
এখন প্রশ্ন হলো বিএনপি ও তার মিত্ররা এবং মিত্র মিডিয়া চোখের সামনে বসে বাংলাদেশকে টানছে শ্রীলঙ্কার দিকে, সরকার সেটা চেয়ে চেয়ে দেখবে সেটা কি হতে দেয়া ঠিক?
যে সকল গুজব প্রচারকারী, মায়ে তাড়ানো, বাপে খেদানো, পড়া লেখা জানার নিকটে না গিয়ে কে কি বললো তাই নিয়ে লাফ দিয়ে পড়ে, তাদের উচিত কঠিন ভাবে আইনের আওতায় নেয়া। ছাগল ছেড়ে দিয়ে রাখলে অন্যের খেতে সে মুখ দেবেই।
ধন্যবাদ সবাইকে।
#জয়_বাংলা, #জয়_বঙ্গবন্ধু
Md Taimur Mollik
কলামিস্ট
#BNP #JamateIslami #PM #বিএনপি #প্রধানমন্ত্রী #শেখ_হাসিনা #আওয়ামীলীগ
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: