• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

ঢাকা  শুক্রবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ;   ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

দেরিতে হলেও বোঝাগেলো সংরক্ষিত মহিলা আসনই লেবেল প্লেইং ফিল্ড তৈরিতে বড় বাঁধা !

তৈমুর মল্লিক
Daily J.B 24 ; প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০১:১০ এএম
সংরক্ষিত মহিলা আসন,  লেবেল প্লেইং ফিল্ড , আওয়ামীলীগ , শেখ হাসিনা , রাজনীতি

 

"বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন" নামে দলটি সকলের চোখ খুলে দিয়েছে। বিএনপি এবং তার মিত্র সকল দল এতোদিন অযথাই এদিক ওদিক দৌড়া দৌড়ি করেছে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এবং শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য । বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছেনা নির্বাচনের জন্য কোন লেবেল প্লেইং ফিল্ড নেই বলে (তাদের ভাষায়) । 


বিএনপি এবং তার মিত্ররা এত বছর ক্ষমতার বাইরে রয়েছে শুধুমাত্র সঠিক বিষয় সনাক্ত করা ও সেই বিষয়ে কাজ না করার জন্য । তারা একচেটিয়া ভাবে দোষ দিয়েছে পুলিশের, সরকারের বিভিন্ন অর্গানকে । সর্বোপরি শেখ হাসিনাকে । সম্ভবত তারা সঠিক বিষয় ধরতেই পারেনি । আর তাই রয়েগেছে সেই ক্ষমতার বাইরে । এতো গোমূর্খ মানুষ হয় ? 

এতোদিন পরে "বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন" নামে দলটি ইসির সাথে সংলাপে বসে আসল ফাঁক খুঁজে বের করতে পেরেছে । যও দোষ এই নারীদের । নারীদের কেন এতো সুবিধা দেয়া হবে ? ওরা থাকবে বস্তাবন্দী , ওরা হবে তেতুলের টক , ওরা হবে যৌনদাসী , ওরা হবে কাজের বেটি , ওরা হবে সন্তান জন্ম দেবার মেশিন , ওরা হবে কৃতদাসী , ওরা থাকবে পুরুষের হাত পা টেপার জন্য, আর সুস্থ অসুস্থ যাই থাক ওরা হবে কামসূত্রের মহানায়ীকা । ওরা থাকবে অন্ধকারে । ওদের কোন আত্মা নেই , ওদের কোন সম্মান নেই, ওদের কোন অধীকার নেই , ওদের জন্য বরাদ্দ একটা বস্তা আর অন্ধকার একটা কুঠরি । ওরা হলো জাহান্নামের খড়ি । আরো কত কি । 


আর এতো বিশেষন যে নারীর , সেই নারীর জন্য কেন সংসদে সংরক্ষিত আসন হাকবে ? এটা বৈষম্য , এটা অন্যায়, এটা অপরাধ । ওরা সংরক্ষিত আসন পেলে পুরুষ কেন পাবে না । 
আমি "বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন" এর বক্তব্যকে একটু বিশ্লেষণ করলাম মাত্র ।

 

তারা বলেছে ইসির কাছে - 
"সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্ত করতে হবে, এটা আমাদের দাবি, নারীদের সরাসরি সব আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ থাকায় সিলেকশনের মাধ্যমে মহিলাদের জন্য সংসদে পৃথক আসন সংরক্ষণ করার কোন যৌক্তিকতা নেই। আসন সংরক্ষণের এই ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক বিধায় তা বিলুপ্ত করতে হবে।" 


ঘোড়ার আড়াই চালের একটা চাল তারা দিয়েছে মাত্র । সরাসরি বলতে পারছে না , শরিয়া আইনের কথা, আফগান তৈরির কথা , পাকিস্তান তৈরি করার কথা । হাতটা মাথার পিছন দিক দিয়ে ঘুরিয়ে মুখে খাবার খাওয়ার মতো করে যাত্রা শুরু করার চেষ্টা সংসদ থেকে । তারা ভালো করেই জানে  সরকারের মধ্যেই তাদের সৈন্যবাহিনী স্থান বেশ পাকা করে নিয়েছে । এই দাবি বাস্তবায়নে অনেক বড় ধরণের সমর্থন তারা হয়তো সরকারের মধ্যে থেকেই পাবে । (আমি সরকার বলতে সকল অর্গান সমূহকে বুঝিয়েছি) । তারা এটাও জানে তাদের সৈন্যবাহিনী থাকলেও এই দাবি বাস্তবায়ন হবে না । এই ধরণের দাবি করে তারা আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসতে চেয়েছে । এবং তারা যথেষ্ট ভালোভাবে মাঠ জরিপ করেই এমন দাবি তুলেছে । এই দাবি তাদের নিজেদের একক ভাবনার বহিঃপ্রকাশ নয় এটা আমি হলফ করে বলতে পারি , যদিও কথাটা বেরিয়েছে তাদের মুখ থেকে । কিন্তু দাবির জন্ম স্থান জামায়াত এর মধ্যে থেকে এবং বিএনপির পরিষ্কার ইন্দন রয়েছে এর মধ্যে । 


এই ধরণের দাবি মানেই - সারাদেশে মানুষের মধ্যে একটি ঝাকুনি দেয়া এবং সারা দেশের মাঠ জরীপে মাদ্রাসা কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যাবস্থায় আবেশিয় হয়ে থাকা সারাদেশের মুসলমান নামক সাধারণ মানুষের নিকট হতে একটি সফট কর্ণার আদায় করে নেয়া । 


বিষয়টিকে খুব ভালো করে যদি ভেবে দেখেন - তারা আওয়ামীলীগের বড় একটা উপকার করলো এমন বার্তা দিয়ে । বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে বড় ধরণের একটি বাতাসের সন্ধান দিয়েছে । আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বর্তমানে বাংলাদেশের নির্বাহী প্রধান । তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী । বিভিন্ন গোয়েন্দা ইনফরমেশন তিনি পাবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ইনফরমেশনে কোন ঘাটতি বা দুর্বলতা রয়েছে কি না সেই জাস্টিফিকেশনের জন্য "বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন" এর নারীদের সংরক্ষিত আসন বাতিলের দাবি ব্যাবহার করতে পারবেন । কারণ শেখ হাসিনার নিকট রয়েছে গোয়েন্দা ইনফরমেশন , অন্যদিকে "বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন" এর নিকট রয়েছে বর্তমান মাঠের সচিত্র প্রতিবেদন। যে প্রতিবেদন তাদেরকে দেয় - ইসলামপন্থী সকল দল , বিশেষ করে জামায়াত ।


ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জাতীয় নির্বাচনের আগে আমাদের প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর কার্টুন একে ক্ষেপিয়ে তুলেছিলো ফ্রান্সের মুসলমানদের । কিন্তু সে আর্ন করেছিলো, মুসলিম নয় এমন সকল মানুষদের বিশ্বাস । ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জানতেন মুসলিম নয় এমন সম্প্রদায়ের মানুষ সংখ্যায় অনেক বেশি, যারা তাকে পছন্দ করে না । মুসলমানদের কলিজায় একটা আঘাত করে সেই সকল মানুষদের তিনি কাছে টেনে আনতে পেরেছিলেন । এটা হলো রাজনৈতিক কৌশল । 


একিভাবে "বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন" জানে তাদের কোন আসন থেকে জয়ের সম্ভাবনা নেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে । তারপরেই তারা একটা ঝুঁকি নিয়েছে । যেহেতু তাদের নিকট রয়েছে বর্তমান মাঠের মাদ্রাসা কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যাবস্থায় সারাদেশে সহজ সরল মানুষের অবস্থানের চিত্র । রয়েছে জামাতের কট্টরপন্থী অবস্থানের ফসলের হিসাব, রয়েছে মামুনুল হকের হেফাজতে ইসলামের অবস্থানের হিসাব , সেহেতু "বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন" এমন দাবি তুলে প্রগতিশীল মানুষের বিরাগভাজন হলেও তারা আর্ন করতে পারবে ধর্মের নামে পরিচালিত জ্ঞানশূণ্য ও সহজ সরল সাধারণ মানুষের নৈকট্য । আর এই বিষয়টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে , তার কি করনিয় কি অকরণীয় । তাছাড়া গোয়েন্দা ইনফরমেশন কতটা বাস্তবতার কথা বলছে । 

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী 

আপনার নিকটে এই লেখা যাবে কিনা জানিনা , নাকি পথেই থমকে যাবে সেন্সরশিপে । আপনি যদি আমার লিখিত বিষয়কে একবার পড়তেন এবং চোখ বন্ধ করে ভাবতেন আমি কি বলতে চেয়েছি তাহলে স্বার্থক হতাম । 
এক কথায় "বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন" নারিদের সংরক্ষিত আসন বাতিল চেয়ে উপকার করেছে আওয়ামীলীগকে । তারা দেশের বর্তমান চিত্র বুঝিয়ে দিয়েছে । সেই ক্ষেত্রে গোয়েন্দা ইনফরমেশন যাই থাক , আর বিষয়টি বাস্তবায়ন হোক বা না হোক । ভোটের রাজনীতির একটি বাস্তব মাঠ জরিপের ফলাফল তারা তুলে ধরেছে । 
একই সাথে তারা বুঝিয়ে দিয়েছে তারা বাংলাদেশ চায় নাকি আফগান , পাকিস্তান চায় । 


মোঃ তৈমুর মল্লিক 
কলামিস্ট 

 

 

 

Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক

সম্পাদকীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ