
বগুড়া জেলার দুপচাঁচীয়া থানার নব-নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে টক অব দ্যা দুপচাঁচীয়া উপজেলা।
পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, পথে-ঘাটে, চায়ের স্টলে, রাস্তার মোড়ে, ক্ষেত-খামারে, ব্যাটারী চালিত অটো ভ্যানে, সিএনজিতে, টাউন সহ পুরো দুপচাঁচীয়া জুড়ে প্রশংসায় ভাসছেন ওসি আজাদ। কি ভাবে একজন পুলিশ জনমনে স্থান করে নিলো এবার সেই বিষয়ে আলোকপাত করা প্রয়োজন। আমাদের জয়বাংলা টুয়েন্টিফোর ডট লাইভ "ওসি দুপচাঁচীয়া"- নামক সোস্যাল মিডিয়ার আইডিটিতে নজর রেখেছিলো। সেই আইডি থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী শুরু গত মার্চ মাসেই দুপচাঁচীয়া উপজেলায় নব-নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ১৭৮ জন অপরাধীকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এর মধ্যে মাদক ব্যবসায়ী, জুয়াড়ী, ওয়ারেন্টের আসামী, মটর সাইকেল চোর চক্রের সদস্য, কষ্টিপাথরের মূর্তি বিক্রেতা, জাল নোট সরবরাহ চক্রের সদস্য আটক সহ হোন্ডা ও মোবাইল সেট উদ্ধারের পর প্রকৃত মালিকদের নিকট হস্তান্তরে জনসাধারণের মনে এক আস্থার নাম ওসি আজাদ।
তবে, মাদক কারবারী সিন্ডিকেটের চোখের বালিতে পরিণত হয়েছেন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। তারা কোন ভাবেই সুবিধে করতে না পেরে ইতিমধ্যে অনেক মাদক ব্যবসায়ী গা ঢাকা দিয়েছেন বলেও বিশস্ত সূত্রে তথ্য পেয়েছে জয় বাংলা টুয়েন্টি ফোর ডট লাইভ। শুধু তাই নয়, মাদক নির্মূলে এ সফল অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ইতিমধ্যেই একদল মাদক ব্যবসায়ী থানার কতিপয় অসাদু কর্মকর্তার সাথে যোগসাজশে অনৈত্যিক অর্থ লেনদেনেরও গুজব ছড়াচ্ছে। তবে, নব-নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ নিঃসন্দেহে অতি দ্রুত সেই কতিপয় সদস্যদের চিহ্নিত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এমনটিই প্রত্যাশা দুপচাঁচীয়াবাসীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জয়বাংলা টুয়েন্টিফোর ডট লাইভ - কে জানান, থানার পাশেই লতিফ সেতুতে মাদকের জমজমাট ধোঁয়া ওড়ে এবং মেয়েদের ইভটিজিং করা হয়। ওসি সাহেবকে এসআইরা সবকিছু জানায় না। কয়েকজন এসআই ওসি সাহেবের কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ! ওসি সাহেব আসাতে নাকি অনেকের ইনকামে ভাটা পড়েছে। ওসি সাহেব যদি নিজস্ব কিছু সোর্স বাড়াতেন তাহলে আরও নিরাপদে থাকতে পারতো দুপচাঁচীয়াবাসী।
অপর এক অভিভাবক জানান, নতুন ওসি সাহেব আসাতে আমার ছেলেটা মাগরিবের পর আর বাইরে বের হয় না।
তবে, এখনো প্রতি রাতেই তালুচ বাজারে জুয়ার বোর্ড বসার তথ্য পায় জয়বাংলা টুয়েন্টিফোর ডট লাইভ। এছাড়াও, তালুচ বাজার, চামরুল, ভেবড়া, শহরকুড়ি, ঝাঁঝিড়া, বেড়াগ্রাম বাজার, কামারু এবং গুনাহারের মাদকসেবী এবং কষ্টিপাথরের মূর্তি বেচাকেনার সদস্যরা এখনো সক্রিয় বলে তথ্যপ্রমাণ পায় আমাদের জয়বাংলা টুয়েন্টিফোর ডট লাইভ - এর অনুসন্ধানী টিম!
এদিকে, নব-নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের এমন কর্মকান্ডে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন দুপচাঁচীয়ার বিশিষ্টজনেরা। তারা বলছেন- মি. আজাদ দুপচাঁচীয়াবাসীর জন্য আশির্বাদ।
জয়বাংলা টুয়েন্টিফোর ডট লাইভের অনুসন্ধানে জানা যায়, ১ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত আটককৃত ১৭৮ জনের মধ্য ৪৭ জন মাদক কারবারী, ৩৫ জন জুয়াড়ী, ৫১ জন গ্রেফতারী পরওয়ানামূলে এবং ৪৫ জন সন্দেহমূলক আটকসহ বিভিন্ন মামলার এজাহারভূক্ত আসামী রয়েছে।
মার্চ মাসব্যাপী অভিযানে আটককৃত ওই ৪৭ জন মাদক কারবারীদের মধ্য গাঁজাসহ ৩১জন ও ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ ১৬ জন আটক হয়েছে। মাদকদ্রব্যসহ আটককৃত ব্যক্তিদের হেফাজত থেকে মোট ৭ কেজি ৩৮ গ্রাম গাঁজা, ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ১৬৫ পিস ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। মাদকদ্রব্যসহ আটককৃতদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথকভাবে মোট ৩১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়াও, দুপচাঁচিয়া উপজেলায় জুয়া নিরোধকল্পে মার্চ মাসব্যাপী ৫টি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে পৃথকভাবে মোট ৩৫ জন জুয়াড়ীকে আটক করা হয়। অভিযানকালে জুয়াড়ীদের হেফাজত থেকে নগদ ৮৪ হাজার ৬ শত ০৫ টাকা ও জুয়া খেলার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। জুয়াবিরোধী ০৫ টি অভিযানে আটককৃত জুয়াড়ীদের বিরুদ্ধে ১৮৬৭ সালের জুয়া আইনে পৃথকভাবে মোট ০৫ টি দায়ের করা হয়।
শুধু এসব অভিযানেই থেমে থাকেনি দুপচাঁচিয়া থানাপুলিশ। দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশের অভিযানে ০৩ টি ৫০০ টাকার জালনোটসহ ০৩ জন আন্তঃজেলা জাল টাকা সিন্ডিকেট সদস্যকে আটক করা হয়। ০২ জন মোটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের সদস্যসহ একটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। দশ লক্ষ টাকা মূল্যমানের কষ্টিপাথরের স্বরসতী মূর্তিও উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, মার্চ মাসে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোট ১২ জন ভিকটিম কে উদ্ধার করা হয়। ওই একই মাসে মোট ১২টি হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করে তা প্রকৃত মালিকের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করার অপরাধে মোট ০৪ জন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। জিআর ও সিআর গ্রেফতারী পরওয়ানামূলে পৃথকভাবে মোট ৫০ জন আসামী ও বিভিন্ন মামলার এজাহারভূক্ত মোট ৩৬ জন আসামীকে আটক করা হয়। অভিযানের ধারাবাহিকতায় ০১ (এক) বছরের সাজাপ্রাপ্ত ০১ জন আসামীকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মার্চ মাসে পুলিশি কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরে দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মি. আজাদ তার ফেসবুক পেইজেও ১৭৮ জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুপচাঁচিয়া থানা এলাকার আইন-শঙ্খলা সমুন্নত রাখতে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের সার্বিক দিক নির্দেশনা অনুসরণ করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ। সেইসাথে সাধারণ মানুষদের সেবা নিশ্চিত করতে পুলিশ বদ্ধপরিকর। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান নব-নিযুক্ত এই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রয়ারী দুপচাঁচিয়া থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসাবে যোগদান করেন আবুল কালাম আজাদ। তাঁর যোগদানের পর থেকে অপরাধ দমনে পুলিশের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করছে দুপচাঁচিয়ার সর্বস্তরের মানুষ। নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলায় জন্ম গ্রহণ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি লাভের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করেন।
Daily J.B 24 / মোঃ শাহীনুর ইসলাম নয়ন (ধ্রুব), ঢাকাঃ
আপনার মতামত লিখুন: