
নরসিংদি রেলস্টেশনের ঘটনাটা পূর্বপরিকল্পিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, ঘটনা-পরবর্তী বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণে আমার যা মনে হলো! দোষী নারীর পক্ষে অতিরিক্ত মসলাদার প্রচারণা দেখে বিকাশ নূরা গংদের সংশ্লিষ্টতা থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না!
১. ভিক্টিম মেয়েটা নরসিংদির লোকাল যে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে এসেছিল, তাদের সাথে নূরা গংয়ের লিংক থাকতে পারে! আধুনিক পোশাকে অভ্যস্ত বান্ধবীকে নরসিংদি ডেকে এনে অপদস্ত করার প্ল্যানে তাদের হাত থাকতে পারে।
২. শিরিন নামে নরসিংদির স্থানীয় একজন আইনজীবী সেই কালপ্রিট নারী (সরকার বিরোধী ও হুজুরদের ভাষায় "গর্বিত বাংলার জমিনে অশ্লীলতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী সাহসিনী মা - এর পক্ষে আইনী সহায়তা দেবে ঘোষণা করে হাইলাইটে আসতে চাচ্ছে ফেসবুক লাইভে এসে। প্রথম লাইভে এসে ভিক্টিম মেয়েটা ও তার মা-বাবার গুষ্টি উদ্ধার করে বিশিষ্ট সাধু সেজে জানাল, ঐ নারী সঠিক কাজটিই করেছে, স্পটে সে থাকলে আরও বেদম প্রহার করতো।
৩. দেশের এত প্রসিদ্ধ জায়গা থাকতে এত টাকা খরচ করে অখ্যাত দুই পয়সার ঝালমুড়ি খাইতে নরসিংদিতেই আসা লাগলো, যেখানে নূরা গংদের একজন আইনজীবী মুখিয়ে আছে ঐ একই এলাকাতেই?! তার লাইভের সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর দোষী নারী কিন্তু তার কাছে গিয়েছিল, তার সাথে যোগাযোগে ছিল! এত উকিল থাকতে নূরা গংয়ের উকিল নেত্রীর কাছেই যাওয়া লাগলো?!
৪. আইনজীবী হিসেবে তার এত অতিউৎসাহী হয়ে লাইভে আসা, কোন ভূমিকা ছাড়াই লাইভে দুই পাশে হিজাবপরিহিত দুই নারীকে দাড়িয়ে রাখা, ঘটনার ভিডিও কাটছাট করে আপলোড দিয়ে মিথ্যা দাবি করা "সেই নারী মেয়েটার গায়ে স্পর্শ পর্যন্ত করেনি, মিডিয়া প্রশাসন মিথ্যাচার করে অন্যায়ভাবে একজন মুমিন সাহসী মা'কে গ্রেফতার করেছে" প্রমাণ করে সে একজন রাজনৈতিক মতলবী। এই ঘটনা থেকে সে তার ইমেজ গ্রো করার প্রজেক্টে নেমেছে, বুঝতে আর বাকি থাকে না। আর তা অনুসন্ধানে গভীরে নেমে যা ভেবেছিলাম তাইই পাইলাম!
৫. শিরিন প্রত্যক্ষভাবে নূরা গংদের দল "গণ অধিকার পরিষদ" এর একজন সক্রিয় কর্মী বা নেত্রী! রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবে ভবিষ্যতে ক্ষমতার গদির আশায় নরসিংদিতে স্থানীয়ভাবে অনলাইনভিত্তিক লোকদেখানি জনকল্যাণমুখী কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে! মানে, কিছু করে "আমি অসহায়দের জন্যে এই করতেছি সেই করতেছি" ছবিসহ ফেসবুক পোস্ট দেয়া, অন্য নেতানেত্রীরা সাধারণত যেমনটা করে আরকি! নূরা গংদের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ফ্যান-ফলোয়ার বা ভোটার বাড়ানোর অনলাইন প্রমোশন প্রজেক্ট বলা যায়!
৬. সম্প্রতি মাথায় ওড়না জড়িয়ে এই ঘটনা সম্পর্কে লাইভে আসলেও ঘটনার পূর্বে কিন্তু তার পোশাকপরিচ্ছদ ও অনলাইন-অফলাইন কর্মকান্ড ধর্মীয় দৃষ্টিতে মোটেও শোভনীয় ছিল না, অশ্লীল বেপর্দাই বলা যায়! যেমন, সালোয়ার কামিজ পরতো ঠিকই কিন্তু ওড়নাটা ঐ ভিক্টিম মেয়েটার মতই জাস্ট দুপাশে ঝুলিয়ে রাখতো, পাতলা স্বচ্ছ শাড়ি পরে কোন প্রকার হিজাব ছাড়াই পরপুরুষদের গায়ে মেখে পাশে বসতো ছবি তুলতো, শাড়ি পরে পরপুরুষদের হাত ধরে হাত উচু করে ধরতো শয়ে শয়ে পরপুরুষদের ভিড়ে, কোন হিজাব ওড়না ছাড়াই সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে আইডিতে পোস্ট করে অন্য পরপুরুষদের চেহারা দেখার সুযোগ করে দিত! এগুলো আমার মতো মুক্তমনাদের কাছে কোন অপরাধ না, এগুলো বলার কারণ তার ভন্ডামি উন্মোচন করা! আপনাদের তথাকথিত অশ্লীল পোশাকে ও কর্মকান্ডে অভ্যস্ত একজন নারী কিভাবে আরেক নারীর পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাকে বেধড়ক পেটাতে চায় এবং তার মা-বাবাকে অকথ্য ভাষায় উপদেশ দিয়ে প্যারেন্টিং শেখায়?!
৭. অবশ্য এই ইস্যুতে লাইভে এসে তাদের প্ল্যান ফলপ্রসূ হচ্ছে, দেশের লাখ লাখ ভন্ড গা*ন্ডু হুজুর আর সরকার বিরোধী দলগুলোর নিকম্মাগুলোরে ফ্যান-ফলোয়ার হিসেবে পেয়ে গেছে! তার লাইভগুলো এই ভে*ড়াগুলোর ঈমানদন্ড খাড়া রাখতে যথেষ্ট সহায়তা করছে! কস্মিনকালেও কাজ না করা হুজুরদের প্রচুর ব্যর্থ দোয়া পাচ্ছে সাহসিনী মায়ের পাশে থাকার জন্যে! এ ক্ষেত্রে সে মহান নারী পর্দা করে কি করে না, অশ্লীল পোশাক পরে কি পরে না, পরপুরুষদের সাথে ঘ্যাশাঘ্যাশি করে কি করে না, ফেসবুকে পরপুরুষদের দেখাতে বেপর্দা ছবি পোস্ট করে জাহান্নামি হলো কি হলো না- এগুলো আপাতত ভন্ড কালপ্রিট হুজুরদের দেখার বিষয় না!
বিষয় হচ্ছে, তথাকথিত অশ্লীল পোশাক পরা মেয়েটাকে হেনস্তা করার অপরাধে গ্রেফতার নারীকে জাতীয় হিরোইন প্রমাণ করতে হবে, তাতে ইজরায়েল থেকে বিকিনি পরায় অভ্যস্ত আইনজীবী আনলেও ক্ষতি নেই! কি, ঠিক না?
বিঃদ্রঃ পোস্টটাতে একটু নোংরামি করা হয়েছে, জেনে-বুঝেই করেছি! আইনজীবী শিরিনই নোংরামিটা শুরু করেছে!
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: