
সিলেট- সুনামগঞ্জ অঞ্চলের প্রত্যন্ত এবং বিচ্ছিন্ন লোকালয়গুলোতে, অতি প্রয়োজনীয় জরুরী সরবরাহ এবং ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া এবং যোগাযোগ সচল রাখার উদ্দেশ্যে- একটি পরিষেবা চালু করা হয়েছে।
পরিষেবাটি ২৪ ঘণ্টা দেশের সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য খোলা। ঢাকা বা দেশের যেকোন স্থান থেকে বন্যা উপদ্রুত এই অঞ্চলে ত্রাণ, চিকিৎসা বা অন্য যেকোন পরিবহনে; সেবাটি ব্যবহার করা যাবে। আপাতত এ পরিষেবার আওতায় আছে- পুরো সুনামগঞ্জ জেলা। তবে খুব দ্রুত বৃহত্তর সিলেটকেও এই সেবার আওতায় আনা সম্ভব। স্থল পরিবহন, বিভিন্ন ধারণ ক্ষমতার নৌকা এবং পরিবহণ স্বেচ্ছাসেবীদের সমন্বিত একটি দল এই সেবা পরিচালনা করবে।
বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা, আবহাওয়া এবং দূরত্বকে বিবেচনা করে, রুট গুলো নির্মাণ করা হয়েছে। রুটের বিস্তারিতঃ
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন রুটে প্রায় তিনশত কিলোমিটার পথ- ত্রাণ সহ অন্যান্য সরবরাহ পরিবহণে খরচ হতে পারে - প্রতি ৫০০ কেজির জন্য আনুমানিক সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা। (সাধারণ তথ্য)
পরিষেবাটির এক একটা সমন্বিত যাত্রার নাম দিয়েছি আমরা- ‘তুফান’, সম্ভাব্য সবচেয়ে কম সময়ে জেলাগুলোর বিচ্ছিন্ন এক-একটা গ্রাম পর্যন্ত নিরাপদে সরবরাহ/ সেবা পৌঁছে দেওয়া- যার উদ্দেশ্য।
বলে রাখা প্রয়োজন, আবহমান ব্যবস্থার উপর ভরসা করে কেন্দ্র থেকে অতি দূরবর্তী জনপদগুলোর ভেঙ্গেপড়া অতি নাজুক একটি সিস্টেমকে আমরা শুধুমাত্র ‘যৌক্তিক সমন্বয়’ এর শক্তিতে সচল করার চেষ্টা করছি।
আমাদের অনুধাবন করা প্রয়োজন যে- সাগরের মত বিস্তীর্ণ জলভাগ, চোখের সামনে অবিস্মরণীয় ধ্বংস আর খাবারের অভাবে- জীর্ণ মানুষপূর্ণ যে জনপদ; সেখানে একসাথে দল হয়ে প্রবেশের নিয়ম। এক কিংবা একাধিক অতিমানব, এমনকী সুমহান কোন প্রতিষ্ঠানেরও একা এখানে বিশেষ কিছু করার নেই।
ত্রাণবাহী দলগুলোকে মানুষের উৎকণ্ঠাজনিত উশৃঙ্খলতা, অন্যান্য ঝুঁকি এবং যোগাযোগ-সমন্বয়হীনতাকে অতিক্রম করে- এখন সর্বোচ্চ সংখ্যক লোকের কাছে পৌঁছানো এখন সময়ের প্রয়োজন। সহস্র বছরের পুরানো আবহমান ব্যবস্থা, ইতোমধ্যে তাঁর প্রতিকারী ধরণে ফিরতে শুরু করেছে। তিন দিনের দীর্ঘ অনাহারী মানুষ, শরীরে বল পাওয়ার পর প্রথম কাজ হিসেবে, স্বজনকে খুঁজতে বের হয়েছে। মোবাইলফোনগুলো সচল হয়েছে। আমাদের এই প্রতিরোধী ধারাটার উপর ভর করে, দাঁড়াতে হবে।
এছাড়া দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা, ব্যক্তি বা সংগঠনের নিজস্ব জমাকৃত ত্রাণ ও কর্মী দল প্রস্তুত থাকলে- তাদের সাথে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদল যোগ করে, বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলোতে একে একে পাঠানোর মত নেটওয়ার্ক এখানে ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে। একে ব্যবহার করে, ত্রাণদলগুলোকে গ্রাম পর্যন্ত পরিবহণ এবং নির্দেশনা দেওয়ার কাজটুকু আমরা করে দিতে পারি।
জীবন বাঁচাতে জরুরী সরবরাহ এবং এ কাজে সংশ্লিষ্ট জনবলকে তথ্য দিয়ে সমন্বয়, এবং দলগুলোকে গ্রামগুলো পর্যন্ত নিরাপদ পরিবহণ সহযোগিতার নামই হচ্ছে- তুফান। 'তুফান' একটি অতি নবীন সমন্বিত সক্রিয় মেসেজ রিলে এন্ড ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম- যেটাকে সক্রিয় করলে ধীর, কিন্তু খুবই ট্র্যাকেবলভাবে বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলোতে নিরাপদ এবং কার্যকর উপায়ে ত্রাণগুলো পৌঁছানো সম্ভব। কাজটি সুসম্পন্ন করতে- এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশী যা প্রয়োজন- প্রচুর তথ্য, চারপাশ থেকে।
সকল ধরণের তথ্য, এই সিস্টেমে যোগ করার জন্য আমাদের নীচের জরুরী নাম্বারগুলো দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা খোলা আছে।
ট্রান্সপোর্টেশন এবং সড়ক সম্পর্কিত তথ্য অনুরোধের জন্যঃ
আশিকুর রহমান +৮৮০১৭১২৮২৪১১৫, আকাশ +৮৮০১৭০১০৭৯৪৮৮
ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ পরিবহণ সম্পর্কিত যেকোন অনুরোধের জন্যঃ
জাহিদ +৮৮০১৭৯৩৩০৯২০৬, +৮৮০১৯৮৯১০৯২০৭
আন্তঃজেলা সড়ক ও নৌ রুটগুলো সম্পর্কিত যেকোন তথ্য অনুরোধের জন্যঃ
নাফি +৮৮০১৭০৬৪৬৭৫, আশিকুর রহমান +৮৮০১৭১২৮২৪১১৫
সুনামগঞ্জ জেলার বিস্তারিত জানাতেঃ
ডাহুক +৮৮০১৭১৮৭৪৭২৪৩
আমাদের কাজ হচ্ছে- প্রাপ্ত সকল 'অনুরোধকে' সক্ষমতা অনুযায়ী যাচাই করে, এক একটা 'সমন্বিত যাত্রা' তুফানে পরিণত করা। এবং আপনাদের কাজ হচ্ছে- দিন রাত ২৪ ঘণ্টা আমাদের এ সমন্বয় সিস্টেমে তথ্য দিয়ে সংযুক্ত থাকা।
তুফানের ব্যবহারবিধিঃ
ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান জন্য- তিনটি তথ্য হাতে নিয়ে জাহিদকে ফোন করুন, কত জনের জন্য, কোথায় এবং কবে? 'কোথায়' এই প্রশ্নের না জানা থাকলে, জাহিদকে বলতে হবে, নোট রাখতে। জাহিদ তাঁর ফিরতি তথ্যে 'কোথায়' এর উত্তর জানিয়ে দেবে। এবং কলে স্বল্পতম সময়ে একটি সার্বিক পরিবহণ পরিকল্পনা প্রদান করবে।
পুরো সুনামগঞ্জ জেলার জন্যঃ ০১৭১৮৭৪৭২৪৩ এই নাম্বারে ফোন করে, অনুরোধ করা যাবে- যেকোন জরুরী সাহায্যের জন্য। সর্বশেষ অবস্থা জানতে ও জানাতে এই নাম্বারবহরে আরও পাঁচটি সংযোগ যুক্ত হচ্ছে, অতি শিঘ্রই। স্বেচ্ছাসেবী দলগুলোর অবস্থান জানতে ও জানাতে এই নাম্বারগুলো ব্যবহার করতে পারেন, জরুরী নাম্বার হিসেবে।
এ জনপদে চেনা পথ, আর তিন উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত ৮৬ জন স্থানীয় নৌকার মাঝিদের সচল নেটওয়ার্ককে সাহসের সাথে, আমরা বাকীদের ব্যবহার করতে দিতে চাই।
আমাদের সাতটি নাম্বার খোলা আছে। দিন রাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। জরুরী ত্রাণ এবং সেবা পৌঁছে দিতে, এই সাতটি নাম্বার ব্যবহার করে- ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানসমূহ,
পৌঁছে দেওয়ার বাকী কাজটা আমাদের। প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলের অনাহারী মানুষের জন্য আমরা, বেশ কয়েকটি সরবরাহ দরজা প্রায় খুলে ফেলেছি। এটাকে ব্যবহার করার কাজটা আপনাদের। আমরা জেগে আছি।
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: