
যে জাতির কোন দক্ষ নেতা নেই, সেই জাতি পশ্চাতে গমন করতে বাধ্য। যে বাহিনীর দক্ষ সমর নায়ক নেই, যতো আধুনিক অস্ত্রই থাকুক তারা পরাজিত হতে বাধ্য।
আমরা আমাদের দেশে বিএনপি, জামায়াত, ইসলামের নামে গজিয়ে ওঠা নানান দলের দৃশ্যমান কোন নেতা দেখতে পাইনা। যারফলে তাদের যে কোন যুদ্ধে তারা পরাজিত।
সঠিক নেতা পায়নি ফিলিস্তিনি, সঠিক নেতা পায়নি কাশ্মীর, সঠিক নেতা পায়নি রোহিঙ্গা গোষ্ঠী যার ফলাফল দৃশ্যমান। মরছে তারা ঠিক, রক্ত কম দিচ্ছেনা কিন্তু জয় তাদের আসেনি।
তবে সঠিক নেতৃত্বহীন জাতি বা গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় জয় না পেলেও তাদের হিংস্র, কট্টরপন্থী, উগ্রবাদী করে তুলতে দুনিয়ার সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো অর্থ, অস্ত্র ও মেধা নিয়ে শ্রম দিয়ে যায় বছরের পর বছর। কারণ এটাই তাদের ব্যাবসা। তারা যা দেবে, কোন নেতৃত্বহীন জাতি গোষ্ঠীকে, তারবিনিময়ে তারা ক্রয় করে নেয় সময়। এই সময় যতো দীর্ঘ মেয়াদি, ব্যাবসায় লাভ ততোই বেশি। অস্থিতিশীল দেশটি হতে সাম্রাজ্যবাদী দেশ অবৈধ উপায়ে তুলে নেয় প্রদান করা অর্থের বহুগুণ। এই ক্ষেত্রে সাম্রাজ্যবাদীদের মেধায় থাকে সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনা।
বাংলাদেশ স্বাধীন হলো। বিশ্বের কোন কোন সাম্রাজ্যবাদী দেশ সেটা পছন্দ করেনি ভালো করেই জানেন। ১৯২১ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতে অক্সব্রিজ শিক্ষা ব্যবস্থা অনুসরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯২১ সালের ১ জুলাই। স্যার সলিমুল্লাহ'র নেতৃত্বে তারই দেয়া ৬০০ একর সম্পত্তির উপর যাত্রা শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
৩টি অনুষদের অধীনে (বিজ্ঞান, কলা ও আইন) ১২টি বিভাগ ও ৮৪৭ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে গবেষণা ধর্মি এক অনন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে।
সূচনালগ্নে বিভিন্ন প্রথিতযশা বৃত্তিধারী ও বিজ্ঞানীদের দ্বারা কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রিত হবার প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে স্বীকৃতি পায়। সেই প্রাচ্যের অক্সফোর্ড এখন মান হারাতে হারাতে অবশেষে তার নাম #বিশ্ববিদ্যালয় না হয়ে #বিশ্বমাদ্রাসা হতে চলেছে। হয়েও গেছে অনেকটা।
১৯৭১ সালের পরে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে ওঠে কট্টরপন্থী, মৌলবাদীদের অন্তরে। পাকিস্তানের নিকট হতে পূর্ব বাংলা বাংলাদেশ হোক সেটা চায়নি। ধর্মিয় আবেগ ছড়িয়ে দিয়ে, মনগড়া ফতোয়া দিয়ে একদিকে তারা দেশের সমগ্র অঞ্চলে রুট লেবেলে তৈরি করেগেছে মাদ্রাসা, অন্যদিকে বাংলাদেশের বাঙালি প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে গবেষণা ধর্মি, বিজ্ঞান ভিত্তিক মেধায় বেড়ে উঠুক সেটা চায়নি। ভয়ংকর ভাবে চুপিসারে সাম্রাজ্যবাদী দেশের সহায়তায় সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনা হাতে নিয়ে আঘাত করেছে বাংলাদেশের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার সর্ব বৃহৎ প্রতিষ্ঠানকে। এরপরে দেশের সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় সহ বুয়েট ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে কাজ করে গেছে। রাজনৈতিক বিভিন্ন দুর্বলতার ফাঁক দিয়ে চুপিসারে অনুপ্রবেশ ঘটেছে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কিন্তু ১০ বছর আগে যা ছিলো চুপিসারে, বর্তমানে এসে তাদের বহিঃপ্রকাশ বিদ্যমান। কিন্তু ততোক্ষণে সময় গড়িয়েছে অনেক। একটি প্রজন্ম চলে গিয়েছে প্রায়, আর একটি প্রজন্ম চলমান।
আজ সমগ্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেই সব উগ্র, কট্টরপন্থী, মৌলবাদ শুধু ছাত্র নয়। আজ সেখানে শিক্ষকদের সমাবেশ ঘটেছে। সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ গাছ বড় হয়ে ডালপালাও বৃদ্ধ হতে চলেছে। তাহলে অনুমান করুন শিকড়ের কি অবস্থা।
এখন স্বাধীনতার সরকার ক্ষমতায়। এখন যদি শিকড় ধরে টান না দেয়া যায় তাহলে আগামি ৫০ বছরে সেটা সম্ভব নয়। জাতির স্বার্থে এটা অবশ্যই করনিয়। কারন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড এখন তার জৌলুশ হারিয়ে নামও হারাতে বসেছে। বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় প্রাচ্যের সেই অক্সফোর্ড নেই। দিনে দিনে একটি অনগ্রসর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপ নেবে তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যাবস্থা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ার টেবিলে বসে ক্লাস করে, তখন সেই দেশের শিক্ষায় আর বড় আঘাত কি হয়।
সরকারের উচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড এ ফিরিয়ে নিয়ে ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির দিকে নজর রাখা। এবং সেখানে অবশ্যই তথাকথিত ওয়াজিগনের সিলেবাস নয়, আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন এবং সত্যিকার ইসলামের ইতিহাস নিয়ে সিলেবাস তৈরি করে দেয়া।
কিন্তু সেটা হবে কি?
#বিশ্বমাদ্রাসা #ঢাবি #বিশ্ববিদ্যালয় #SheikhHasina #Bangladesh #শিক্ষা_মন্ত্রণালয়
মোঃ তৈমুর মল্লিক
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: