• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

ঢাকা  শুক্রবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ;   ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপি'র কথিত সর্ববৃহত জনসভার জনসমাগমের পোষ্টমার্টেম

তৈমুর মল্লিক
Daily J.B 24 ; প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৮:৩২ পিএম
বিএনপি,  কথিত সর্ববৃহত জনসভা,  জনসমাগমের পোষ্টমার্টেম, খুলনা, আওয়ামীলীগ, রাজনীতি, তারেক জিয়া

 

সাম্প্রতিক #খুলনায় হয়েগেলো বিএনপির দেয়া বিবৃতি মোতাবেক তাদের সবচেয়ে বৃহৎ সমাবেশ ।  
দৈনিক ইনকিলাব লিখছে, খুলনায় জনসমুদ্র ।  ডেইলি স্টার লিখেছে, বিএনপির সমাবেশ স্থানের ২ কিলোমিটারজুড়ে লোকে লোকারণ্য । যুগান্তর লিখেছে, বাধা পেরিয়ে খুলনায় জনস্রোত । এইভাবে বিভিন্ন পত্রিকা শিরোনাম দিয়েছে । কিন্তু উক্ত পত্রিকা গুলো এটা দেখেনি বা আড়াল করেছে যে, বিএনপির সমাবেস স্থলের সামনে স্থান কতটুকু , এবং কার্যত বিএনপির সমাবেশে আগত মানুষের উপস্থিতি কতটা এরিয়া নিয়ে ছিলো। 


একটু দেখার চেষ্টা করি, বিএনপির সমাবেশ স্থল ও তার আশে পাশে কতটা স্পেস আছে এবং সেই স্পেসে লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ আদেও দাঁড়াতে বা বসতে সক্ষম কি না । 
খুলনা ডাকবাংলা মোড় ও ফেরিঘাটের মোড়ের প্রায় মধ্যবর্তি স্থানে সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিএনপির মূল সমাবেশ স্থল । ডাকবাংলা মোড় হতে ফেরিঘাটের মধ্যবর্তি দুরত্ব 0.4km । যার সম্পূর্ন স্থান খুলনার সবচেয়ে বৃহৎ সড়ক । খুলনার কোন সড়কই ৪ লেনের অতিরিক্ত নয় (যাওয়া ও আসা) অর্থাৎ যাওয়া ও আসার ২ পাশে ২ লেন করে । এরসাথে যুক্ত ফুটপাত । এছাড়া রাস্তার উভয় পাশে স্থাপনা , যেখানে কোন মানুষের দাঁড়ানো সম্ভব নয় ।  আপনারা হিসাব করে দেখবেন কি, 0.4km রাস্তায় একজনের পিঠের উপরে আর একজন দাঁড়ালেও কতজন দাঁড়াতে পারবে? 

 


দৃশ্যমান যেটা ছিলো, সমাবেশের মূল সড়কে মানুষ বসেছিলো প্রায় সবাই। সেই ক্ষেত্রে লোক সংখ্যা আরও কম হবে । 
এখন আসি স্টেশন রোড এর দিকে, সোনালী ব্যাংকের চত্বর থেকে স্টেশনের দিকে যে রাস্তা গিয়েছে সেই রাস্তায় উভয় পাশে ২ লেন করে । যার দুরিত্ব 0.35km । এই সামান্য রাস্তায় কতজ মানুষ একে অন্যের পিঠে দাঁড়াতে পারে প্রশ্ন থেকে যায় । তাছাড়া রেল স্টেশনের সামনে পুলিশ কাউকে বসতে দেয়নি দেশের সম্পদ নিরাপত্তার জন্য । 


অন্যদিকে ফেরিঘাটের মোড়ের পরে পিচারপ্যালেস মোড় অবধি যারা অবস্থান করছিলো তারা পথচারি ও কৌতূহলী জগন, যান চলাচলে সমস্যার কারনে তারা সেখানে দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে । 
সোনালী ব্যাংক হতে রুপসা অভিমুখে অর্থাৎ ফেরিঘাট মোড় হতে রুপসা অভিমূখি যতো মানুষ ছিলো, তারা সবাই পথচারী ও কৌতূহলী জনগন । 
ডাকবাংলার পরে বা রেল স্টেশনের পরে শীপবাড়ি মোড় বা বৈকালী অভিমুখি সকল জনগন পথচারী ও কৌতূহলী জনগন । 


বিএনপির সমাবেশের মূল জনগোষ্ঠি ছিলো , রেলওয়ে স্টেশন এলাকায়, ডাকবাংলা মোড় হতে ফেরিঘাট মোড়ের মধ্যে প্রধান সড়কে । যে এরিয়ার মোট দুরত্ব 1km নয় ।  
সার্বিক ভাবে হিসাব করলে বিএনপির সমাবেশের জন্য আগত মোট জনসংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ হাজারের মধ্যে । 


এখন আসি উক্ত জনসংখ্যার কার্যকর জনবলের দিকে । ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষের মধ্যে ভাড়াকরা টোকাই এবং কিশোর গ্যাং এর সংখ্যা ছিলো ২০ থেকে ৩০ হাজারের উপরে । যাদের ভোট প্রদানের কোন সুযোগ নেই বয়সের কারনে । অবশিষ্ট মানুষের মধ্যে গ্রাম থেকে মফস্বল থেকে ভাড়া করে আনার সংখ্যা কমপক্ষে ১০ হাজার । 


বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা  মঞ্জুকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আবার বিএনপি কোলে তুলে নিয়েছে । মূলত তার বলেই খুলনায় এই লোক সমাগম হয়েছে। তার সাপ্লাই দেয়া রাস্তার টোকাই ও কিশোর গ্যাং এর উপস্থিতি ছিলো মারমুখি । পুলিশের সাথে যতটা বাকবিতন্ডা হয়েছে তাদের সামনে লাঠি হাতে দেখা গেছে বিএনপি নেতা মঞ্জুর সাপ্লাই দেয়া  জনবল । 


বিএনপির কথিত বৃহৎ সমাবেশে দেখা গিয়েছে কার্যকর ২০ হাজারের মতো মানুষকে । অবশিষ্ট সবই পরিবেশ অস্থিতিশীল করার জন্য কিশোরদের মহড়া । 
খুলনা বিভাগের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৫,৬৮৭,৭৫৯ জন (২০১১ আদমশুমারী অনুসারে) যদি অর্ধেক ভোটার না হবার দিকে রাখি তাহলেও ৮০ লক্ষের মতো মানুষ ভোট দেবার অধিকার রাখে । 
বিএনপির সমাবেশে যদি সব মিলিয়ে ৭০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে তাহলেও বাইরে থাকে ৭৯ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষ । এই সমাবেশের নাম বিএনপি দিয়ে তাদের সর্ব বৃহৎ সমাবেশ । (মোট হিসাবের সাথে ৫% কম বা বেশি হতে পারে । এটা মাঠ জরিপের ফলাফল । 


রাজনীতিকে সামনে রেখে মূলত পাক*স্তানি ও পশ্চিমা প্রেসকিপশনে বিএনপি এখন পাগল হয়ে উঠেছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা অধিগ্রহনের জন্য । ১/২ দিন নয় , দীর্ঘ বৎসর একটা একটা করে গুটি সাজিয়ে তারা এই টার্মে বপরোয়া হয়ে উঠেছে । তাদের একমাত্র পূঁজি  গণতন্ত্রের ফাঁকা আওয়াজ করে ভোটপ্রদানের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা । তারা দীর্ঘ সময় নিয়ে দেশের মানুষকে বুঝিয়েছে , দেশে ভোট প্রদানের কোন নিশ্চয়তা নেই । অথচ বিএনপি ও তার মিত্ররা নিজেরাই ভোট বয়কট করেছিলো, এবং পরবর্তীতে নিজেরা ভোট বয়কট করার কথা বলে কয়েকজনকে ঠেলে দিয়েছিলো সংসদে । যার দায় পুরাটাই শেখ হাসিনা সরকারের কাঁধে দিয়ে মানুষকে তারা ক্রমাগত বুঝিয়েছে দেশে ভোট প্রদানের কোন নিশ্চয়তা ও স্বাধীনতা নেই । মূলত তারা জনগণ বিমুখ ও দেশের স্বার্থে চিন্তিত নয় , থাকার কথাও নয় । কারন দলটি পাকিস্তান ও পশ্চিমার দেয়া অর্থের বিপরীতে সরকারকে ও দেশকে ক্ষতি করতে বদ্ধপরিকর । যা কিছু সমর্থন দেখি, সবই ধর্ম ভিত্তিক আবেগে উদ্ভাসিত। বাস্তবতার কোন মিল নেই তার সাথে । 

 


সেই ধারাবাহিকতায় বিএনপি বুঝতে পেরেছে, এবার নির্বাচন বয়কট করলে বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে । অন্যদিকে নিবন্ধন হারানো জামা**য়াত ভিন্ন নামে অথবা বিএনপির ব্যানারে নির্বাচনে আসার চাপ প্রয়োগ করে রেখেছে বিএনপির উপরে । সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে এই মুহুর্তে তারা আপ্রান চেষ্টা করছে দেশের মধ্যে আগুন জ্বালাতে । 

 


এখন তারা সারাদেশে সমাবেশের নামকরে সরকারকে জনগনের মুখোমুখি করতে চাইছে । শেখ হাসিনা সরকার অত্যান্ত কৌশলে ফাঁদে পা না দিয়ে সঠিক অবস্থান ধরে রেখেছে ।
যেহেতু বিএনপি ও তাদের মিত্রদের বৃহৎ সমাবেশ হয়েগেছে সেহেতু বাকি সমাবেশে লোক সংখ্যা কত হতে পারে সেটা অনুমেয়। যা মানুষকে ধোকা দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয় । 


কিছু মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় পেইড এজেন্ট হিসাবে বিএনপির এই সমাবেশকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে , ছবি এডিট করে প্রকাশ করে মানুষকে বোকা বানাতে চাইছে । কিন্তু বাঙালি এখন আসলেই কি এতো বোকা আছে ? 
তবে যাই কিছুথাক চক্রান্ত রয়েছে এটা নিশ্চিত , কারন বিএনপির সমাবেশে আমরা কোন ধর্মভিত্তিক দলকে দেখতে পাইনি । উপস্থিতি থাকলেও গোপনে । কিন্তু কেন? 

 


সরকারকে এই কেন এর উত্তর খুঁজতে হবে । আওয়ামীলীগ প্রকাশ্যে এখনও মাঠে নামেনি । ফাঁদে পা দেয়নি । জনস্রোত কাকে বলে নিশ্চিত আমরা দেখতে পাবো । শেখ হাসিনা হেরে যাবে সেটা তার জীবদ্দশায় অলীক কল্পনা । জয় আসবেই । বিএনপি ও জঙ্গিদল যতোই চেষ্টা করুক , এই দেশ পাকিস্তানের কথায় , তালেবানের কথায় , পশ্চিমাদের কথায় চলবে না । 


কাল্পনিক নয়, বাস্তবচিত্র। 
জয় বাংলা , জয় বঙ্গবন্ধু


Md Taimur Mollik

 

 

 

Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ