• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ০১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

ঢাকা  রবিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ;   ০১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপির চরিত্র নির্মানে মুনাফেকদের নগ্ন সততা

আহসান হাবীব (মামুন)
Daily J.B 24 ; প্রকাশিত: শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১০:১৩ পিএম
বিএনপি , মোনাফেক , নগ্ন সততা , বাংলাদেশ , রাজনীতি

 

"সবার মনে রাখা উচিৎ আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। কিন্তু কষ্ট লাগে চারপাশের মানুষের দ্বৈত আর মুনাফেকি চরিত্র দেখে।"


ডাঃ মুরাদ হাসান কোন দেশদ্রোহী বা রাজাকার ছিলেন না। মুরাদ হাসান দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত নন। তিনি কোন ফৌজদারি মামলার ফেরারী আসামীও নন। তার অপরাধ তিনি ২ বছর আগে একজন অভিনেত্রীর সাথে ফোনে অশ্লিল ভাষায় কথা বলেছেন।এটা শুধুমাত্র তার ব্যাক্তিগত নৈতিক অবক্ষয় এবং মানষিক দৈন্যতার কারন বলে মনে করি। ব্যাক্তি জীবনে আমরা সবাই কম বেশি পাপী। প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা সবাই কিন্তু পীর, আউলিয়া, দরবেশ সেজে থাকি। একবার নিজের ভিতরের আমিকে (যদি মনুষ্যত্ব বা বিবেক থেকে থাকে) জিজ্ঞাস করে দেখুন তো বাহিরের আমি আর ভেতরের আমি এক কিনা? মুরাদ হাসানের নৈতিক স্খলনের কারনে ইতিমধ্যেই দল ও সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে যা জননেত্রী শেখ হাসিনার শৃষ্টাচার, বিচক্ষণতা ও দূরদর্শি নেতৃত্বের পরিচয় বহন করে। কিন্তু এর পরেও হেজাবি (হেফাজত+জামাত+ বিএনপি) ঘরানার লোকজন বরাবরের মত তাদের দ্বৈত মুনাফেকি চরিত্রের পরিচয় দিয়েই যাচ্ছে। কথায় কথায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের হাজারো দোষ যারা ধরেন তাদের কাছে আওয়ামীলীগ আজন্ম খারাপ মানলাম। তাহলে বাকি দুধে ধোয়া তুলশী পাতাদের কেন মুনাফেকি চরিত্র বলেছি আসুন হাজারো উদাহরনের মধ্য থেকে কিছু মিলিয়ে নেই-


বিএনপির চরিত্রঃ-


১। ৪ দলীয় জোটের ২০০১ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী তারা নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় গেলে পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাতিল, ভারতের সাথে পদ্মা,তিস্তা,গঙ্গার পানি চুক্তি, সিমান্ত চুক্তি বাতিল করবে। অথচ নির্বাচনের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর ইন্ডিয়াকে গোপনে গ্যাস দেয়ার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। মুখে সব সময় ইন্ডিয়া বিরোধী নীতি এবং ক্ষমতায় থাকলে ইন্ডিয়াকে প্রভু মেনে চলার নীতি এবং ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত কি কি করেছেন তা এখনো মানুষের মনে দগদগে ঘা হয়ে আছে।
২। জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবী করে আবার যুদ্ধাপরাধী জামায়াত কে নিয়ে জোট ও সরকার গঠন কি দ্বৈত চরিত্র আর জাতির সাথে প্রতারনা নয়?
৩। অবৈধ সরকার, অবৈধ সংসদ বলে, অথচ এই সংসদে তাদের ৭ জন প্রতিনিধি আছে।
৪। মুক্তিযুদ্ধের পর জানজুয়া ফেরত খালেদা জিয়াকে ঘরে নিতে অস্বীকৃতি জানানো জিয়াকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ও আমার বেটি হয়। হাসিনা,রেহানার মত খালেদা আমার আরেক মেয়ে। অথচ ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ভাবে সুবিধা গ্রহন, খুনিদের পুনর্বাসন ও পুরস্কৃত করা, ১৫ই আগস্ট  ভুয়া জন্মদিন পালন করা দল, নেতা-নেত্রী আর সমর্থকরা আজ শিষ্টাচার ও মানবতার সবক দেয়।
৫। ২০০৪ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা, আইভী রহমান,আহসান উল্ল্যাহ মাস্টার, শাহ্‌ এম এস কিবরিয়া,মমতাজ উদ্দিন সহ আওয়ামীলীগ ও প্রগতিশীল রাজনীতির ধারক,বাহক অনেক সাংবাদিক,বুদ্ধিজীবি সহ অন্যান্য পেশার মুক্তমনা ও মুক্ত চিন্তার মানুষ হত্যা, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের সাড়ে ২৬ হাজার নেতা কর্মী হত্যাকারী, ২০১৩-২০১৪ সালের অগ্নি সন্ত্রাসে মানুষ পুড়িয়ে মারা থেকে এখন পর্যন্ত গুজব,অপপ্রচারে নিমজ্জিত দলের কাছে মানবতার সবক সত্যিই হাস্যকর।
৬। পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে হালের করোনা টিকা নিয়ে সীমাহীন মিথ্যাচার আর গুজবের পরেও তাদের ভুমিকা জাতি দেখেছে। টিকায় গো-মূত্র আছে,টিকা বিএনপি নেতা কর্মীদের নিধনের জন্য এনেছে বলে মিথ্যাচার করেছে অথচ টিকা নেয়ার সময় পালিয়ে, ক্যামেরা, মিডিয়াকে লুকিয়ে ঠিকই প্রথম দিকে নিজেরা টিকা নিয়েছে।
৭। এরা ইন্ডিয়াতে বিজেপি এবং মোদী ক্ষমতায় আসার আনন্দে ঢাকায় মিষ্টি বিতরন করে আবার হেফাজত কে দিয়ে দেশ অস্থিতিশীল করার জন্য মোদী বিরোধী সাজে।
৮। এরা প্রতিটি নির্বাচনে যাবেনা যাবেনা বলে নাটক করে। নির্বাচনের আগে একই আসনে কয়েকজনের কাছে নমিনেশন বানিজ্য করে। ইলেকশানের দিন কয়েক ঘণ্টা পার না হতেই নির্বাচন বয়কটের নাটক করে। কারন এরা জানে এদের দল জিতবে না এবং এদের যুবরাজ মিঃ টেন % ভাইয়া দেশে আসবেনা। কত বোকা এই নেতারা। এই দিকে লন্ডনে চলে যায় হাজার কোটি নমিনেশন বিক্রির টাকা।
এই রকম হাজার হাজার মুনাফেকি চরিত্রের উদাহরন দিতে পারবো। 
আসুন দেখি হেজাবি (হেফাজত+জামাত+ বিএনপি) এর হেজা (আঞ্চলিক ভাষায় জঞ্জাল) হেফাজত+ জামাতের তুলশী পাতার মত চরিত্র কেমনঃ-

  • ১। আল্লামা আজিজুল হক ও মুফতি আমিনীরা ৪ দলীয় জোট করার আগে বলেছিলো নারী নেতৃত্ব মানিনা,নারী নেতৃত্ব হারাম। অথচ বিএনপির সাথে ৪ দলীয় জোট করার সময় উনারা খালেদায় আরাম খুঁজে পেলেন।
  • ২। ১৯৭১ এ জামায়তের ভুমিকা কি ছিলো তা আমরা সবাই জানি। ২০১০ সালে জন্ম নেয়া হেফাজত মূলত কউমী পন্থীদের সংগঠন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে কউমী বা ঐ সময়ের আমাদের ধর্মীয় নেতারা কেউই বাংলাদেশের পক্ষে ছিলোনা। যে কারনে আমাদের বীরশ্রেষ্ঠ, বীরউত্তম, বীরপ্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা,শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকায় তাদের কারো নাম নেই। অথচ আজকে তাদের ভুমিকা জাতি দেখছে। আজকে দেশ তাদের বলে গলা ফাটাচ্ছে।
  • ৩। এরা সাইদীর চাঁদে যাওয়া বিশ্বাস করে অথচ তার অশ্লিল ওডিও রেকর্ড ইডিট বলে গলাবাজি করে।
  • ৪। এরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে হারাম, নাজায়েজ বুঝে, অথচ জিয়া সহ তাদের আদর্শ পাকিস্থান, সৌদিআরব,তুরস্ক, মিশরের ভাস্কর্যে সোয়াব খোঁজে।
  • ৫। মামুনুলের লাইভ ভিডিও দেখেও তা সরকারের সাজানো নাটক ও ষড়যন্ত্র বলে,অথচ ২ বছর আগের মুরাদ হাসানের কল রেকর্ডে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের আনন্দে মজে।
  • ৬। সারা বছর ওয়াজের নামে টাকা, ফিতরা, জাকাতের নামে টাকা তোলে আর সেই টাকা তাদের ব্যাক্তিগত ব্যাংক একাউন্টে জমা পড়ে। আমাদের রাসুল (সাঃ) অত্যান্ত গরিবী হালে চলতেন বলে নিজেরা বিলাসী জীবন যাপন করে।
  • ৭। আজাহারীকে যখন এনায়েত উল্ল্যাহ আব্বাসী বেয়াদব বলেন তখন তারা আব্বাসীর উপর নাখোশ হন। আবার আব্বাসী যখন তাহেরী কে বাহাসের চ্যালেঞ্জ করে তখন এরা আব্বাসীকে আব্বা আব্বা করে। আবার চরমোনাই যখন বাতেল বাতেল করেন তখন তারা হয়ে যান কিচ্ছা কাহিনী নির্ভর পীর গ্রুপ আর কেউ মাজার পূজারী। আর হক বললেই সরকারের দালাল না হয় নাস্তিক, জাহান্নামি,কাফের, মুরতাদ। এরা আবার কথায় কথায় কিন্তু কাফের, জান্নাত, জাহান্নামের সার্টিফিকেটও দেয়।

 

আরো হাজারো উদাহরন দেয়া যাবে। এর বেশি বললে আবার আমাকেও নাস্তিক, মুরতাদ বানিয়ে ছাড়বে। আসুন দেখে নেই আমাদের সাধারন মানুষের দ্বৈত এবং মুনাফেকি চরিত্র গুলোঃ-

 

  • ১। যখন আমাদের নিজেদের স্বার্থে কোন কিছু পক্ষে থাকে তখন আমরা তা ঠিক ভাবি,যখন তা অন্যকারো পক্ষে যায় তখন তা নিয়ে সমালোচনা করি।
  • ২। আমি,আপনি যখন খেয়ে থাকি তখন ভাবি সারাদেশের মানুষই খেয়েছে। যখন নিজে ক্ষুধার্ত থাকি তখন ভাবি সারা দেশ না খেয়ে আছে।অথচ নিজে খাওয়ার সময় কিন্তু ক্ষুধার্তের কথা ভাবিনা।
  • ৩। জ্যামে রাস্তায় বসে সরকারের গুষ্টি উদ্ধার করি,আবার সুযোগ পেলে নিজেরা রং সাইডে ডুকি।
  • ৪। ফুটপাথে নিজে হাঁটার সময় এটাকে নিজের নাগরিক অধিকার মনে করি, হোন্ডা ফুটপাথে আসলে মনে মনে খিস্তি দেই,আবার নিজে যখন হোন্ডা চালাই তখন ফুটপাথকে নিজের অধিকার মনে করি। তেমনি রিকশায় চড়লে আমাদের একরুপ, গাড়িতে চড়লে আরেক রুপ।
  • ৫। আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য মায়া কান্না করি, অথচ নিজের আত্নীয়-স্বজন, পাড়া- প্রতিবেশীর মধ্যে যারা সমস্যায় জর্জরিত বা কোন পথ শিশুর দায়িত্ব নেই না।
  • ৬। আমরা কথায় কথায় যারা ৯০% মুসলমানের দেশ বলে মুখে ফেনা তুলি তাদের কাছে জানতে চাই- রোজার আগে এবং রোজার সময় দ্রব্যমুল্যের দাম বাড়ায় কে? মাঠে ময়দানে এত ওয়াজ মাহফিলের পরেও কেন মসজিদের দান বাক্সে তালা দিতে হয়? কেন পবিত্র সিজদার জায়গা, আল্লাহর ঘর মসজিদে নোংরা জুতা নিয়ে সিজদার সামনে বাক্সে রাখতে হয়?
  • ৭। কেন রাস্তায় বসে মসজিদ, মাদ্রাসার নামে টাকা তোলার জন্য আমরা আল্লাহর নাম বেঁচে খাই?
  • ৮। নিজেদের মুসলমান ও ঈমানদার মনে করি, এক আল্লাহ বিশ্বাস করি অথচ সকল ধর্মের মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি কেন ভুলে যাই?
  • ৯। সকল সৃষ্টিই মহান আল্লাহর। আমরা সৃষ্টির সেরা জীব তারপরেও কেন অবলা পশুর গায়ে গরম পানি মারি, ঢিল ছুড়ি?
  • ১০। অবমাননা শব্দের অর্থ না মানা বা অসন্মান করা। আমদের পবিত্র কোরআন সবচেয়ে বেশী অবমাননা করি আমরাই। কোরআন আল্লাহ দিয়েছেন বুঝে পড়ার জন্য এবং সেই অনুযায়ী চলার জন্য। আমাদের ৯৮% মুসলমানের ঘরে কোরআন শরিফ কি হালে আছে তা আমরা সবাই জানি। চেয়ে দেখেন কোরআন শরিফের গিলাফের উপর ধূলোর আস্তর পড়ে আছে।কোরআনে ৫ ওয়াক্ত নামাজ
  • ,রোজা,হজ্জ্ব,যাকাত,হারাম,হালাল,বান্দার হক থেকে শুরু করে প্রতিটি বিষয়ে সুস্পষ্ট বলা আছে, অথচ মানি আমরা কয় জন? অথচ বলার সময় আমরা কিন্তু ৯০% মুসলমানের দেশের মানুষ!
  • ১১। আমরা মোবাইল ব্রাউজ করে সানি লিওন,মিয়া খলিফা থেকে শুরু করে হালের পরিমনি সবই দেখি, লাইক দিয়ে বিকৃত সুখ অনুভব করি। আবার সুযোগ পেলে কমেন্টে, পোস্টে তাদের নসিহত করি।
  • ১২। আমরা আজহারীর লন্ডনে প্রবেশ বাঁধায় চুপ করে থাকি আর র‍্যাব প্রধানের উপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞায় তাচ্ছিল্যের হাসি দেই, ট্রোল করি।
  • ১৩। আমরা প্রায়ই বলি আমরা জাস্টিন ট্রুডোর মত প্রধানমন্ত্রী চাই, অথচ আমরা যেখানে সেখানে কফ থুতু আর প্রস্রাব করি যা কানাডার লোকজন করে না। শুধু এটুকুই উদাহরন হিসাবে দিলাম।এর বেশি লিখলে নিজেদের ছোট করা হবে।

 

এই রকম হাজার হাজার দ্বৈত চরিত্রে আমরা প্রতিনিয়ত অভিনয় করি আর ভাবি আহ!!! আমি মুমিন,ঈমানদার।মরলে চেলচেলাইয়া বেহেস্তে চলে যাবো। নিজেদের অতি মুমিন ভাবা আমরা একেকজন আসলে মিচকা শয়তান। আমরা মুলত ইবলিশকে লালন করি নিজেদের মধ্যে। আসলে আমাদের নিজেদের নাই কোন চরিত্র, আর আমরা সরকার খুঁজি পবিত্র। 
না ভাই খুব কঠিন নয়, রিয়া বিহীন ইবাদত করেন, কোরআন,হাদিসের আলোকে জীবন যাপন করেন তাহলেই আমাদের শান্তি।


আসুন মূল কথায় যাইঃ-


মুরাদ হাসানের ১৯৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার দাবীর সাথে আমরা যারা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি তারা সবাই একমত। রাস্ট্র কোন ব্যাক্তি নয় যে রাস্ট্রের ধর্ম থাকতে হবে। পরকালে বিচার হবে আমার,আপনার। কোন ভূখন্ডের নয়। আচ্ছা এরশাদ সংবিধানে বিসমিল্লাহ এবং জিয়া রাস্ট্র ধর্ম কেন যোগ করেছিলো? সেই প্রশ্ন গো মস্তিকের মানুষদের না করে সহজ প্রশ্ন করছি- রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করার আগে আপনারা,আপনাদের বাবা,দাদারা কোন ধর্ম পালন করতেন? বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলমান সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রধর্ম কি? গিরিশ চন্দ্র সেন প্রথম বাংলায় পবিত্র কুরআনের অনুবাদ করেছেন। তার মানে কি তিনি ঈমানদার আর মুমিন হয়ে গিয়েছিলেন? ইসলাম মানতে হলে এবং মুসলমান হতে হলে আগে আপনাকে ঈমান আনতে হবে। আপনি যদি না জানেন, না বুঝেন তাহলে আপনি পালন করবেন কি? এ কারনে কুরআনের প্রথম লাইন "পড় তোমার প্রভুর নামে।" তার মানে কোরআন শরিফ আগে পড়তে হবে,জানতে হবে তারপর সেই আলোকে মানতে হবে। কাউকে জোর করার বিধান ইসলামে নেই এবং তা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নিষেধ করেছেন। তাহলে সংবিধানে যখন বিসমিল্লাহ লাগালো তখন কি বিধর্মী বা অন্য ধর্মের অনুসারীদের কথা ভাবা হয়েছে?যাদের ঈমান নাই তাদের দিয়ে কি জোর করে,চাপিয়ে দিয়ে বিসমিল্লাহ্‌ বলাবেন? এই ব্যাপারে কোরআনে স্পষ্ট বলা রয়েছে  যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। শুধু মাত্র অবৈধ উপায়ে ক্ষমতায় এসে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য সংবিধানে বিসমিল্লাহ এবং রাষ্ট্রধর্ম সংযোজন করা হয়েছে। আচ্ছা বলুন তো আমাদের রাসূল (সাঃ) এর সময়ে উনি কি মক্কা মদিনায় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করেছিলেন? না কি সকল মত-পথের মানুষের জন্য মক্কা,মদিনা উন্মুক্ত রেখেছিলেন? মদিনা সনদ কি? এবং মদিনা সনদে কি কি আছে তা কি আমরা জানি? ইসলাম অসাম্প্রদিয়কতার, মানবতার এবং শান্তির ধর্ম। ইসলাম সবার জন্য উন্মুক্ত। যে কেউ চাইলেই যখন তখন আল্লাহর উপর ঈমান এনে ইসলাম গ্রহন করতে পারে। মনে রাখতে হবে রোজ হাসরের দিনে যার যার হিসাব তাকে দিতে হবে।তাই না বুঝে অন্যের উপর জুলুম, মিথ্যা,গুজব চাপিয়ে দেয়া যাবেনা, করা যাবে না।


জাইমা রহমান কে নিয়ে মুরাদ হাসান যা বলেছেন তা একজন সভ্য মানুষ হিসাবে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে সমর্থন করিনা। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি, এবং প্রতিপক্ষ বিএনপি জামাত, এবং তাদের সমর্থকদের সিরিজ মিথ্যাচার, গুজব আর ষড়যন্ত্রই আমি মনে করি এই পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে।স্বয়ং খালেদা জিয়া যখন আওয়ামীলীগকে গালি দেন তখন কোথায় ছিলো সুশীল ভাব? তারেক রহমান যখন বঙ্গবন্ধুকে পাকবন্ধু বলেন তখন আজকের এই সুশীলরা কই ছিলেন? পাপিয়া,মনি, আলাল, ইশরাকদের বিচার চাওয়ার আগে আমি ব্যক্তিগত ভাবে খালেদা,তারেকের বিচার চাই। মনে রাখবেন বিচার হীনতার সংস্কৃতি অন্যায় কে প্রশয় দেয় এবং অনুপ্রাণিত করে।
প্রায় ১৪ বছর দল টানা ক্ষমতায় থাকার কারনে দলের রন্দ্রে রন্দ্রে ঘুনে ধরেছে। আওয়ামীলীগ বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ থেকে আজ অনেকটাই বিচ্যুত, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি আর ১৯৭২ সালের সংবিধান থেকে যোজন যোজন দূরে সরে যাওয়ার কারনে আজ আওয়ামীলীগের এই অবস্থা।

 

দলে হাইব্রিড,নব্য, হেফাজত, জামাত, বিএনপি লীগের দাপটে আজ প্রকৃত আওয়ামীলীগ আর তৃণমূল নিষ্পেষিত,অবহেলিত। সবাই আছে নিজেদের আখের গোছানোর কাজে ব্যাস্ত। একমাত্র নেত্রী ছাড়া কেউ দলের কথা ভাবেননা। অনলাইনে আমাদের মত গুটিকয়েক এক্টিভিস্ট নিজের খেয়ে সব সময় দলের জন্য কোন স্বার্থ ছাড়া শত প্রতিকুলতার মাঝেও লড়াই চালিয়ে যায়।এর মাঝেও আমাদের আইডি হ্যাক হয়,আমরা ব্লক খাই,সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা খাই। আর সম্প্রতি ডাঃ মুরাদ হাসান আর নাহিদ হেলাল যাদের তোপে পড়ে হেজাবিরা (হেফাজত+ জামাত+বিএনপি) ম্যাও ম্যাও করছিলো ঠিক তখনই ডাঃ মুরাদ হাসানের ইস্যু আমাদের জন্য একটা বড় ধাক্কা। আমাদের থামিয়ে দিলে বা মুরাদ হাসানদের স্তব্ধ করে দিতে পারলে কারা লাভবান হবেন?


"বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- যখন আপনি ভদ্রলোকের সাথে খেলবেন তখন আপনাকে ভদ্র ভাবে খেলতে হবে। কিন্তু যখন আপনি কোন বাস্টার্ডের সাথে খেলবেন তখন যদি আপনি জিততে চান তাহলে আপনাকে তার চেয়ে বড় বাস্টার্ড হয়ে খেলতে হবে।" 


দলের দুঃসময়ে দলের সবাই যখন চুপচাপ থেকে সব কিছু নেত্রীর কাঁধে চাপিয়ে দেন সেই মুহূর্তে হেজাবিদের জাত করার জন্য মুরাদ হাসানরাই যোগ্য খেলোয়াড় হিসাবে মাঠে থাকা উচিত বলে মনে করি যখন আপনার প্রতিপক্ষ হেফাজত+জামাত+বিএনপির মত অভিশপ্ত রাজনৈতিক শক্তি।


পাদটিকাঃ

যে দেশের জনগন যেমন, সে দেশের শাসকও তেমনই হয়। এ কারনেই আপনাদের কাছে শত দোষে দুষ্ট আওয়ামীলীগকে বিনা ভোটের অথবা তাহাজ্জুদ পড়ে ভোট দেয়া সরকার বা যে নামেই ডাকুন না কেন আরো কমপক্ষে তিন টার্ম ক্ষমতায় থাকতে হবে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে সঠিক কক্ষপথে ধরে রাখার জন্য। চুলকানি আর অস্বস্তি আসলে আওয়ামীলীগে নয়, সব জ্বালা আসলে ১৯৭১ সাল থেকে এই বাংলাদেশ নামে। যাদের সহ্য হবে না দয়া করে দেশে বসে ঘেউ ঘেউ,গুজব,অপপ্রচার আর মুনাফেকি না করে পেয়ারে পাকিস্থান বা আফগানিস্থান চলে যান। বিশ্বাস করেন কেউ আপনাকে আটকাবেনা এবং বাংলাদেশের কোন ক্ষতিও হবেনা। বরং জাতিকে পিছন থেকে টেনে ধরার অপশক্তি কমে যাবে। সুস্থ এবং ভালো থাকবে আমাদের প্রাণের দেশ।


দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা, শুধিতে হইবে ঋণ। তাই মনে রাখবেন যা করেছেন আর যা রিটার্ন পাচ্ছেন সব মহান আল্লাহ্‌র বিচার। শুরুতে বলেছিলাম আল্লাহ্‌ ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না, শেষেও একই কথা দিয়ে শেষ করছি।
জয় বাংলা - জয় বঙ্গবন্ধু ।


Awami Warrior 
আহসান হাবীব (মামুন)
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের উত্তরসূরী এবং শেখ হাসিনার কর্মী।
এডমিন, মিডিয়া সেল 

 

 

Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ