• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ০১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

ঢাকা  রবিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ;   ০১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

বিএনপি'র সাংসদদের পদত্যাগ আগামির সহিংস আন্দোলনের রোডম্যাপ

তৈমুর মল্লিক
Daily J.B 24 ; প্রকাশিত: সোমবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:১১ পিএম
PM, AwamiLeague, BNP, পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়, Sheikh Hasina

 

সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে তলানিতে চলে যাওয়া বিএনপি আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টায় রতঃ ছিলো । মিডিয়ার কল্যানে এবং প্রায় ১৫ বছর দেশের মধ্যে বিএনপি তেমন কোন রাজনৈতিক শোডাউন করতে না পারার কারনে দেশের মানুষ আচমকাই এই বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে অতিরিক্ত প্রেসারে পড়ে যায় । ভাবনাটা এমন হয় যে, বিএনপি এবার হয়তো আবার সেই জ্বলাও পোড়াও রাজনীতি শুরু করবে । আওয়ামীলীগ সরকার সেই প্রচেষ্টাকে বন্ধ করতে গিয়ে বিএনপির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যাবে । কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। আওয়ামীলীগ সরকার অতিমাত্রায় বুদ্ধিদীপ্তের পরিচয় দিয়ে বিএনপির পাতা ফাঁদে পা দেয় নি । যারফলে সারাদেশে বিএনপির সমাবেশে তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি । 


সারাদেশে বিএনপির সমাবেশে তারাই যোগ দিয়েছে, যারা বিভিন্ন অপরাধে, বিভিন্ন ভাবে আইন ভঙ্গকরে আইনের চাপে ছিলো । আওয়ামী সরকারের নিকট হয়েছিলো বিরাগভাজন । সকল প্রকার অপরাধিদের অপরাধ হতে মুক্তি পেতে বর্তমান সরকারের পরিবর্তন ছাড়া কোন উপায় তারা দেখছে না । যারফলে কিছু মানুষের সমাবেশ লক্ষ্যনীয় । অন্যদিকে ধর্মকে আবেগের স্থানে বসিয়ে , কিছু ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে মিসগাইড করে সমাবেশে নিয়ে গেছে বিএনপি । অবশ্যই এই মানুষের সমাগম ঘটেছে অর্থের বিনিময়ে । 


দেশের সকল বিভাগে বিএনপির নেতা কর্মীদের চাঙ্গা করতে বিএনপি খেলেছে দ্বৈত খেলা । একদিকে নেতাকর্মী্দের চাঙ্গা করা, অন্যদিকে বিশেষ বিশেষ তারিখ সমাবেশের জন্য নির্ধারন করে আন্তর্জাতিক মহলকে আওয়ামীলীগ সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ম্যাসেজ প্রদান করা । যার মধ্যে অন্যতম "মানবাধিকার নেই", রাজনীতির জন্য "লেবেল প্লেইং ফিল্ড নেই"। কিন্তু আওয়ামীলীগের চৌকশ রাজনীতিতে বিএনপি সম্পূর্ণ ধরাশায়ী হয়েগেছে । তারা যে লক্ষ্যে তাদের কথিত আন্দোলন সমাবেশ আকারে পরিচালিত করেছে , সেই লক্ষ্য সম্পুর্ণই ব্যার্থ হয়েছে । বলাচলে বিএনপিকে রাজনীতির মাঠে আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টায় নতুন করে অর্থাৎ শূন্য থেকেই শুরু করতে হবে । 
বিএনপির হাই কমান্ড অর্থাৎ লন্ডন থেকে তারেক রহমান তার একক মেধায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক গেম খেলছে না সেটা অন্তত পরিস্কার । অপর কন মেধার সহযোগীতায় বিএনপির ৭ সাংসদকে পদত্যাগ করতে বলে । যেখানে ৬ জন বিভিন্ন এলাকা হতে নির্বাচিত সাংসদ, ১ জন সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিত । 


তারেক রহমান তাদের সাংসদদের পদত্যাগের মাধ্যমে প্রথম আন্দোলন (সমাবেশ পক্রিয়া) হতে খালি হাতে ফিরে না এসে, আগামীর জন্য রোপন করলো সরাসরি সংঘাতের ক্ষেত্র । 
উল্লেখিত ৭ জন সাংসদ বাংলাদেশ সংসদে অবস্থান করেছে প্রায় ৪ বছর। এই সময়ের মধ্যে কোন ভাবেই , কখনও তারা বলেনি - আমরা সংসদে কথা বলার জন্য ফ্লোর পাইনা, কথা বলতে দেয়া হয়না । তাহলে যারা নির্বাচিত সাংসদ তারা তার এলাকার মানুষের সাথে গাদ্দারি করে, কোন কারন না দেখিয়ে পদত্যাগ করার কথা বললেন । হয়তো পদত্যাগ কার্যকরও হবে । তাহলে কেন তারা পদত্যাগ করলেন ? কি কারন তার পিছনে ? পূর্বেই বলেছি , তারেক রহমান তাদের কথিত আন্দোলন হতে শূন্য হাতে ফেরত না গিয়ে সরাসরি সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরি করে রাখলো । 


১৯৯৪ সালের ৩০শে মার্চ থেকে ৯ মাস একটানা সংসদ বর্জন করেছিলো, তৎকালীন বিরোধীদল । অন্যদিকে তারা সংসদের বাইরে তত্ত্ববধায়ক সরকারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলে বিএনপি সরকারের বিপক্ষে । 
এরপরে ২৮ ডিসেম্বর আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির মোট ১৪৭ জন সাংসদ একযোগে  বিভিন্ন বাস্তবিক কারন দেখিয়ে সেই সময়ের স্পিকারের নিকট পদত্যাগপত্র জমাদেয় । কিন্তু বিএনপি তাদের পদত্যাগ গ্রহন না করে ১ বছর উক্ত ১৪৭ জন সাংসদ ছাড়াই সংসদ বহাল রাখে । এরপরে আদালত সেখানে প্রবেশ করে । তখন আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির আন্দোলন গণমানুষ সাথে নিয়ে জেঁকে বসেছে । একদিকে ১৪৭ জনের পদত্যাগ, অন্যদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য দাবি এক হয়ে গেলে আন্দোলন বজ্রের মতো ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র দেশে। এরপরে খালেদা জিয়া মধ্য ফেব্রুয়ারী ১৯৯৬ সালে নির্বাচন করে , তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় ।


তারেক রহমান কার্যত ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য যে আন্দোলন সেই সময়ের বিরোধীরাজনীতিতে গড়ে উঠেছিলো সেটাকেই পুঁজি করার চেষ্টা করেছে । কিন্তু বর্তমান বিএনপির সংসদ সদস্যের সংখ্যা কোন ভাবেইসেই ১৪৭ জন সংসদ সদস্যের সমকক্ষ নয়। ফলে তেমন কোন আন্দলন গড়ে ওঠার সুযোগ থাকার কথা নয় । 


উক্ত বিষয়টি তারেক রহমান ও তার বর্তমান সাহায্যকারী বৈদেশিক মেধা বেশ ভালো করেই জানে ও বোঝে । তারপরেও তারেক রহমান তার ৭ জন সাংসদকে পদত্যাগ করিয়েছে । নিশ্চই সেটার কারন রয়েছে । 
বর্তমান সময় হতে আওয়ামী সরকারের মেয়াদ হাতে রয়েছে এখনও ১ বছর । যার ফলে এই সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করা ৬ জন নির্বাচিত সাংসদের শূন্য স্থানে পুনঃ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে । তারেক রহমান দেশের এই ৬ টি এলাকাকেই বেছে নিয়েছে বলে মনে করি । উক্ত নির্বাচনে নিশ্চিত ভাবে আওয়ামীলীগ প্রার্থী সেখানে থাকবে । এই নির্বাচনকেই তারেক রহমান স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করে সাংঘর্ষিক করে তুলতে পারে। তুলতে পারে বললে ভুল হবে, তুলবেই । এই ৬ টি নির্বাচনি এলাকায় সংঘর্ষের জন্ম দেয়াই তারেকের উদ্দেশ্য থাকবে, সেখানে তার প্রার্থীর জয় বা পরাজয় বিবেচিত হবে না । সেই সংঘর্ষ এতটাই ভয়ংকর হতে পারে , যার প্রভাব গিয়ে পড়বে দেশের সমগ্র এলাকায় । অর্থাৎ রচিত হবে দেশব্যাপী বিক্ষুব্ধ আন্দোলন । 


বিএনপি এই নতুন ধারার আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ২য় পর্বের আন্দোলনের যাত্রা শুরু করবে বলে ধরে নেয়াই যায় । বিএনপির সমাবেশে দেশ ব্যাপী জামায়াত, শিবির, সন্ত্রাসী, জঙ্গি বাহীনীর সম্পৃক্ততা সরাসরি না দেখা গেলেও, আগামী ২য় পর্বের বিক্ষুব্দ আন্দোলনে সরাসরি দেখা যাবে এটা অন্তত আমার অভিমত । 


তারেক রহমানের বর্তমান বৈদেশিক থিংক ট্যাংক সেই সময়কেই লুফে নিয়ী আওয়ামী সরকারের উপর বাড়তি চাপ প্রয়োগ করতে পারে বিভিন্ন দিক দিয়ে । যার প্রমান আমরা আমাদের দেশে অবস্থানকারী ইউরোপীয় ইউনিয়নের বলয় ভূক্ত বৈদেশিক কূটনীতিদের ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দায়িত্বের বাইরে নাক গলানোর মাধ্যমে পেয়েগেছি । 

 

 

মোঃ তৈমুর মল্লিক 

কলামিষ্ট 

 

 

 

 

Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক

সম্পাদকীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ