• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ০১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

ঢাকা  রবিবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ;   ০১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

বোমা ফাটালেন ড. দেবপ্রিয়, প্রথম আলো!

সায়েদুল আরেফিন, কলামিস্ট ও উন্নয়ন কর্মী
Daily J.B 24 ; প্রকাশিত: রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:২৫ পিএম
ড. দেবপ্রিয়, প্রথম আলো , অর্থনীতি
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ চরম সংকটে, সংকটে সরকার। কেন এই সংকট এবং তা কতটুকু গভীর তা সবার জানা দরকার। কারণ ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার বা বদিউল আলম সাহেবরা যখন কোন অভিযোগ তোলেন, তখন তা নিয়ে চুপ করে থাকা দেশ, দেশের জনগণ ও সরকারের জন্য খুব ভালো না।  


ডেইলি স্টার গ্রুপ, প্রথম আল্যখন বলে যে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ফরেন রেমিট্যান্স, রাজস্ব আদায় সর্ব নিম্ন, বাণিজ্য ঘাটতির রেকর্ড, শুধু রপ্তানি আয় বেড়েছে। তখন বাংলাদেশের মানুষ আতংকিত হন, যা খুব স্বাভাবিক। 
অন্য দিকে ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যখন বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হলে বাংলাদেশ নাকাল হবে, হয়তো শ্রীলংকার মত হতে পারে এমন ইংগিত দেন তখন বাংলার মানুষ তো আতংকিত হবেনই। এত বড় খবরে আতংকিত হওয়া, স্বাভাবিক বিষয়। 


আসুন আমরা দেখে নিই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ফরেন রেমিট্যান্স, রাজস্ব আদায় সর্ব নিম্ন, বাণিজ্য ঘাটতির রেকর্ড হয়েছে এই বছর। কিন্তু এটা কোন সরকারের আমলের তুলনায়, তা কিন্তু বলা হয়নি। আসলে কি বিএনপি সরকারের তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ফরেন রেমিট্যান্স, রাজস্ব আদায় সর্ব নিম্ন, বাণিজ্য ঘাটতির রেকর্ড হয়েছে, না এ বছর হয়েছে গত বছরের তুলনায়? সেটা কিন্তু প্রথম আলোর রিপোর্টে বলা হয়নি বা উল্লেখ করা হয়নি। 


এবার আসি ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যখন বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ বিষয় নিয়ে। কবে থেকে কত টাকা হারে কিস্তি শুরু হবে তা তিনি বলে নি। তাই আমি একজন সদ্য বিদায়ী উন্নয়ন কর্মী হিসেবে আপনাদের সেটা জানিয়ে দিতে চাই। আমার কাছে থাকা তথ্য মতে ২০১৮ সালের আগে যেসব মেগা প্রকল্পের জন্য সরকার ঋণ নিয়েছে সেই সব প্রকল্পের কী অবস্থা বা ঋণের শর্ত কেমন ছিল, আর এখনই বা কেমন? 


২০১৮ সালের আগে নেওয়া প্রায় সব মেগা প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের সময় সীমা ৪০ বছর। এর মাঝে ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ড। মানে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবার পরে ১০ বছর ঋণ পরিশোধের কোন কিস্তি দিতে হবে না। যেমন আমরা ঢাকা শহরে বাড়ি তৈরির ঋণ নিলে বাড়ি নির্মাণ শেষ হবার পরে ব্যাংক ভেদে ছয়মাস বা ১ বছর পরে ঋণ পরিশোধ করতে হয়।  বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রেও একই ধরণের নিয়ম। 


পদ্মা সেতু হয়েছে নিজের টাকায়। পদ্মার রেল সেতুতে ঋণ আছে। এ ছাড়া এমন কোন মেগা প্রকল্প কি শেষ হয়েছে? একটু চিন্তা করুন আপনারা। তাহলে ঋণের কিস্তি শোধ হওয়া শুরু হবে কবে? আগামী বছর না আর অনেক পরে? সিম্পল ম্যাথ, এর জন্য অংকে পিএইচডি করা লাগবে কি? বা এটা বুঝার জন্য ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এর মত অর্থনীতিবিদ হওয়া লাগবে কি? 


গত ৩/৪ বছর হলো কিছু মেগা প্রকল্পে ঋণ পরিশোধের সময় সীমা ৩০ বছর। এর মাঝে প্রকল্প ভেদে ৫ থেকে ৭ বছর গ্রেস পিরিয়ড। মানে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবার পরে ৫ থেকে ৭ বছর ঋণ পরিশোধের কোন কিস্তি দিতে হবে না। 
এখানে একাটা প্রশ্ন পাঠকের সামনে তুলে ধরতে চাই। বৈদেশিক ঋণে বাস্তবায়িত কোন মেগা প্রকল্প কি এখনো শেষ হয়েছে? জবাব হচ্ছে না। হলেও তো গ্রেস পিরিয়ড আছে ১০ বছর, কারণ এসব প্রকল্পের ঋণ চুক্তি ২০১৮ সালের আগের। 


বণিক বার্তার খবরে বলা হয় যে, জিডিপি অনুপাতে বিদেশী ঋণের পরিমাণকে বিবেচনায় নেয়া হয়। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সীমা ধরা হয়েছে ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৬০ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। আর ওই বছর জিডিপির আকার দাঁড়ায় ২০৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। বিআরটি মডেলের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের জিডিপি ও বিদেশী ঋণের অনুপাত ২৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। অর্থাৎ সর্বোচ্চ সীমার বেশ নিচে ছিল এ অনুপাত। 


তাই বলা যায়, বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ঝুঁকি সীমার অনেক নিচে না ঝুঁকিতে রয়েছে? কারণ, এপ্রিল ১৬, ২০২২ এর  বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে সেই সময়ের বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় ঋণের পরিমাণ বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ। কারণ আমাদের জিডিপির গ্রোথ বেশি। 


এর পরেও যখন মাইনাস ২ ফরমুলার নায়ক ও দেশের উন্নয়নে নিজেদের নাজায়েজ সুবিধা আদায় করতে না পারা ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার বা বদিউল আলম সাহেবরা শ্রীলংকা জুজুর ভয় দেখিয়ে আতংক ছড়ায়, তখন তাঁদের কি বলা বা করা উচিৎ তা আপনারাই বিবেচনা করুন। গুজব ছড়িয়ে জনমনে আতংক সৃষ্টি করা কি ভালো কাজ না অপরাধ?
 

 

© সায়েদুল আরেফিন
কলামিস্ট ও উন্নয়ন কর্মী

 

 

 

Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক

সম্পাদকীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ