
কথা নেই বার্তা নেই বাংলাদেশের উপর মানবাধিকার হরণ, জোরপূর্বক গুম নিয়ে র্যাবের উপর কেন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র । এর পিছনে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন একটি আইন যার নাম "লেহি আইন"।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স এই আইন বিষয়ে তদারকি করে।
এটা সেই আইন যার মাধ্যমে ভিন্ন দেশের কোন সংস্থা যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয় তখন উক্ত সংস্থাগুলোর সহায়তাকে সীমাবদ্ধ করে।
মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশে নিরাপত্তা খাতে সহায়তা প্রদান করে থাকে, আর সেই সুযোগটা সৎব্যাবহার করে ভিন্ন কোন দেশের, যে দেশে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ প্রবল ভাবে চাহিদায় রয়েছে সেই দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে সহায়তা সীমিত করা সামনে রেখে সেই দেশকে বিভিন্ন সংস্থার উপর বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে চাপ সৃষ্টি করে। মূলত সেই চাপটি হলো মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ আদায়ের চাপ।
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র চিঠি মারফত বাংলাদেশকে তাদের তৈরি সেই লেহি আইনের প্রতি সম্মতি জানানোর জন্য ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। কারন আইনটি কার্যকর হবে ২০২২ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে।
আপনারা যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন, বাংলাদেশে র্যাবের উপর এবং প্রাক্তন আইজিপি বিরুদ্ধে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র স্যাংসান অর্থাৎ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ২০২২ এর ১লা জানুয়ারির পরে। তার আগে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র তাদের স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, জোরপূর্বক গুম এবং ধর্ষণকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
আমরা বিএনপি, জামায়াত, নুরু সহ দেশে বিদেশে বসে যারা অতিউৎসাহী হয়ে আরো স্যাংসান আসছে বলে প্রচার করেছে বা করছে তারা সবাই মার্কিন অর্থ ভোগ করে শেখ হাসিনা সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতেই প্রচার করেছে। যার প্রধান শক্তি তথাকথিত "লেহি আইন"। অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথায় কোন দেশে মানবাধিকার থাকবে না, আবার সত্যিকার মানবাধিকার হরণকারী দেশ হবে অতি মানবিক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথাই হবে মানবাধিকার বিষয়ে শেষ কথা।
যদি বুঝে থাকেন তাহলে এটুকুও মনে রাখুন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে দেশে প্রবল স্বার্থ আছে বলে মনে করে সেই দেশকে কাবু করতেই লেহি আইন হবে একটি মোক্ষম অস্ত্র। অন্যথায় তাদের স্যাংসান মেনে নিতে হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত যে দৌড়ঝাঁপ করছে সেটাও বাংলাদেশকে সেই তথাকথিত লেহি আইনে সম্মতি জ্ঞাপনের জন্যই। অন্যথায় তারা বিএনপির পক্ষ নেবে। কারণ অলরেডি বিএনপি লেহি আইনে সম্মতি দেবার গোপন চুক্তি করেছে বলেই মনে করি।
শেখ হাসিনা সরকার আজও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রনিত লেহি আইনে সম্মতি দেয়নি। ২০২২ সালের ১লা জানুয়ারি বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি নিয়ে সময় চেয়েছে। কবে নাগাদ বাংলাদেশ সরকার লেহি আইনে সম্মতি দেবে, এমন প্রশ্নে জানানো হয়েছে, বিষয়টি আইন মন্ত্রনালয় বিভিন্ন ভাবে পরিক্ষা নিরীক্ষা করছে।
এর অর্থ দাঁড়ায় শেখ হাসিনা সরকার এখনো লেহি আইনে সম্মতি দেয়নি। যেহেতু এখনো সম্মতি বা স্বাক্ষর করেনি বাংলাদেশ, সেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উক্ত আইনে কিছুই করতে পারবে না। প্রশ্ন থাকে, তাহলে কি নিরাপত্তা খাতে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র প্রদেয় সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে?
বাংলাদেশ ১৫ বছর আগে যে অবস্থানে ছিলো এখন সেই অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। এসেছে স্বাবলম্বীতা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মরন ফাঁদের দরকার কতটা আছে সেটা সবারচেয়ে ভালো বুঝবে শেখ হাসিনা।
আমরা সামনে বসে দেখছি, বিএনপি, জামায়াত, নুরু ইত্যাদি দল, গোষ্ঠী, ব্যাক্তি কিভাবে মার্কিন মরনফাঁদে নাম লেখাতে টাকায় বিক্রি হয়ে গলাবাজি করে। এরপরেও যদি আমরা তাদের খাতায় নাম লেখাই সেটা হবে দেশের সাথে বড় বেঈমানী।
বাকি বিষয়টি শেখ হাসিনা সরকারের উপর নির্ভর করে। ভূরাজনৈতিক এই জটিলতায় অনেক বিষয় এই লেহি আইন, ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চল, কোয়াড ইত্যাদি যুক্ত। আর তাই এই বিষয়ে আমি আপনি বাইরের থেকে কিছুই বুঝবো না। সবচেয়ে ভালো বুঝবেন শেখ হাসিনা।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
#usa #Bangladesh #SheikhHasina #আওয়ামীলীগ #AwamiLeague #BNP #USAmbassador #BNPJamaat
Daily J.B 24 / মোঃ তৈমুর মল্লিক
আপনার মতামত লিখুন: