
প্রশ্নটা শুনে লাফ দিয়ে উঠে কেউ নিজের কোমর ভাংবেন না । হ্যাঁ আমি যৌক্তিক ভাবেই তুলে ধরছি, রুমিন ফারহানা দুদিন আগে যাই থাক, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পতনের নামে রুমিন ফারহানা বিভিন্ন মিডিয়া, রোড শো, বক্তব্য বিভিন্ন ভাবে যে ভাবে আওয়ামীলীগ তথা শেখ হাসিনার বিপক্ষে দিয়ে চলেছে সেটা যদি একটু ঘুরিয়ে ধরেন তাহলে দেখবেন - সে সম্পূর্ণ ইচ্ছা করে বিভিন্ন কথা বলে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার কথা বলে, পক্ষান্তরে বিএনপি ও তার মিত্রদের কোন কোন ইস্যু দিয়ে ঘায়েল করতে হবে, সেই পথই উম্মুক্ত করছে ।
মা বাবার একমাত্র সন্তান সে, সম্পত্তি কি পাবে না পাবে সেটাতো আছেই , কিন্তু সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করে, মাল্টি ট্যালেন্ট ভিক্ষুক সেজে যখন তার ভাষায় অবৈধ সরকারের নিকট ফ্লাট বরাদ্দ চায় , তখন বুঝতে বাকি থাকে না - ডালমে কুচ কালা হায় ।
অন্যদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে দুইহাত উঁচু করে তাদের সমর্থন জানিয়ে যখন নিজেই হয় কোটা ভিত্তিক সাংসদ -আর সরকার সেখানে দেয় গ্রিন সিগন্যাল , তাহলে বিষয়টি যে আরো পরিষ্কার হয় সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না ।
সুন্দর ভাবে মিথ্যা বলা একটা স্পেশাল গুণ , নিঃসন্দেহে সেটা রুমিন ফারহানা রপ্ত করেছে তারই বাবা মায়ের নিকট হতে , সেই সাথে শিক্ষিত মূর্খ হিসাবে নিজেকে মেলে ধরতে তার জুড়ি মেলা ভার । এতো সব মাল্টি টয়ালেন্ট গুণের অধিকারী হয়ে সেটা থেকে সে ফায়দা লুফে নেবেনা সেটা কি করে হয় ? আমি বা আপনি হলেও নিতেন না ? বা নিতাম না ? আর এটার জন্য হতে হয় মোটা দাগের বেয়াদপ ।
যাইহোক , সেই ফায়দা লুফে নিতে গিয়ে একদিকে যেমন বিএনপিকে সামলাচ্ছে, অন্যদিকে তারেককে সামলাচ্ছে , আবার এমন সব বিষয় নিয়ে ময়দানে কথা বলছে , যেসব ক্ষেত্রে বিএনপি'র জন্ম থেকে সবচেয়ে নির্লজ্জ অপরাধবোধ রয়েছে, পরাজয় রয়েছে, চক্রান্তের দলিল রয়েছে ।
রুমিন ফারহানা খুব ভালো করেই জানে -
বিদ্যুৎ উৎপাদন , বা পদ্মাসেতু বা অন্যান্য বৃহৎ অর্জনে আওয়ামীলীগ কতটা এগিয়ে । সে এটাও জানে এই বিষয়ে কোথাও আঙুল প্রবেশ করানোর ক্ষমতা বিএনপি সহ তাদের মিত্রদের নেই । আর তাই একটি কম ছবক- "সব ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগ চোর ও দুর্নীতিবাজ" এই একটা বিষয় ঢুকিয়ে দেবার চেষ্টা সে করে ।
দুর্নীতি এমন একটা বিষয়, যা আওয়ামীলীগের একক ফসল নয় , এটা সার্বজনীন । আর তাই কেউ আওয়ামীলীগ সেজে, কেউ আওয়ামীলীগ হয়ে, কেউ আওয়ামীলীগের ভাড়া খেটে, কেউ আওয়ামীলীগের বাইরে বসে এমন গুণের অধিকারী। আর তাই দুর্নীতি নেই সেটা না বলে , দুর্নীতি আছে তএ সেই দায় কোন ভাবেই আওয়ামীলীগের একক নয়, সেটা সকলে মিলে করিকাজ, হারি জিতি নাহি লাজের মতো ।
উক্ত বিষয়টি রুমিন ফারহানা জানে, বোঝে কিন্তু যেহেতু সে মাল্টি টয়ালেন্ট , মাল্টি ট্যালেন্ট ফায়দা লুটতে ভাড়া খাটতেই হবে , আর তাই রুমিন ফারহানার সকল বক্তব্যের মধ্যে সেটাই জাগিয়ে তোলার চেষ্টায় দেখা যায় - যেটার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী বিএনপি, যেখানে বিএনপির ইতিহাস সবচেয়ে ঘৃণিত । যা রিকোভার করতে গিয়ে আওয়ামীলীগকেই পড়তে হচ্ছে নানা মুখী বিপাকে ।
আজ দেশের অধিকাংশ ঘাটতির দায় বিএনপির , বিএনপি যদি নিজেরা দুর্নীতিগ্রস্থ না হয়ে সঠিক কাজটি করতো , তাহলে আজকে হয়তো দেশ আরো অনেক স্টাবল হতো । একটা দেশের স্থিতিশীলতা অর্জনে যে সকল এলিমেন্ট দরকার তার সব ক্ষেত্রে বিএনপি লজ্জা জনক ভাবে ব্যার্থ । অন্যদিকে সেই দলের মাথায় পচন , রুমিন ফারহানা এর সবটাই জানে । আর তাই সেই সকল বিষয়ে তার চিৎকার চেচামেচি -পক্ষান্তরে আওয়ামীলীগ কর্তৃক জাগিয়ে তোলার সুযোগ করে দেয়ার সামিল । মানুষ চায় , তার অন্যায় , অপরাধ গোপন করতে, আস্তে আস্তে ভুলে যেতে, কিন্তু রুমিন ফারহানা কি সেটা হতে দিচ্ছে ? সেকি বিএনপির গ্লানি, অপরাধবোধ, লজ্জাজনক সকল অধ্যায় মুছে ফেলতে সয়ায়তা করছে ?
নাকি উলটা বিগত ১০ বছরে আওয়ামীলীগ ১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি বলে , বিএনপির বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাম্বা ব্যাবসা সামনে আনছে ? হাজার হাজার কোটি টাকা আওয়ামীলীগ চুরি করেছে এই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে রুমিন ফারহানা কি তারেকের খাম্বা ব্যাবসা , নাইকো দুর্নিতি মামলা ইত্যাদী সামনে নিয়ে আসছে না ?
কথা হলো, আওয়ামীলীগ বিদ্যুৎ জিরো থেকে সারাদেশে বিতরণ করার সকল মাপকাঠি অর্জন করেছে এটাতো মিথ্যা নয়, আন্তর্জাতিক ফোরাম গবেষনায় সেটা প্রমাণিত । এসব করতে গিয়ে যে, অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে সেটাতো মিথ্যা নয়। সেই অর্থের পরিমান কতো সেটা প্রজেক্টের আকার আয়তন ও ক্ষমতা দেখলেও অনুমান করা যায় । অথচ রুমিন ফারহানা বলছে -এসবই মিথ্যা , আওয়ামীলীগ চোর ।
তাহলে সরকার কি করবে এখন ? মিথ্যা প্রচারের দায়ে তাকে আইনের নিকট নিয়ে আসবে , কিন্তু সেটাতো দৃশ্যমান নয় - তাহলে কি রুমিন ফারহানা এসব কথা বলুক সরকার সেটাই চায় ? রুমিন ফারহানা এসব বলা মানেইতো - সরকারকে এটা প্রমাণ করা যে, বিএনপি এই সব ক্ষেত্রে কি করেছিলো, আওয়ামীলীগ কি করছে । আর আওয়ামীলীগের হাতে রয়েছে সাধারণ মানুষের স্বীকৃতি ও আন্তর্জাতিক সনদ । তাই রুমিন ফারহানা কি বললো কিছুই যকায় আসে না তাতে । যার ফলে বিএনপির ক্ষত স্থানগুলো শুকানোর কোন সুযোগ নেই । আওয়ামীলীগ নিশ্চিত ভাবেই বিএনপির কর্মকান্ড বারবার সামনে আনবে । এটাই স্বাভাবিক ।
আর তাই বলতে চাই - রুমিন ফারহানা তার ভাষায় অবৈধ সরকারের নিকট হত্তে সসকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে, মাল্টি টয়ালেন্ট ভিক্ষুক হয়ে ফ্লাট চাইছে । অথচ চট্টগ্রামে তার জমি বিক্রি করা হবে বলে বিজ্ঞাপন এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে । কোটা বিরোধী হয়েও কোটা সাংসদ হয়েছে । অন্যদিকে বিএনপি সহ তারেক কে সামলাছে নিজের চৌকসতায় । আবার আওয়ামীলীগের বিপক্ষে কথা বলে বিএনপির হাতে এখন হ্যারিকেন তুলে দিয়েছে ।
আমার ধারণা- অপেক্ষা করুণ , বিএনপিকে চূড়ান্ত ভাবে বাঁশ উপহার এই রুমিন ফারহানাই দেবে । তবে কি রুমিন ফারহানা লীগের এজেন্ট ?
মোঃ তৈমুর মল্লিক
কলামিস্ট
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: