• ঢাকা
  • বুধবার, ৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ; ২২ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

ঢাকা  বুধবার, ৭ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ;   ২২ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

রাজনীতির বাস্তবতা সরল অংকে প্রতিফলিত হবে - কল্পনা বা আবেগে নয় ।

মোঃ তৈমুর মল্লিক
Daily J.B 24 ; প্রকাশিত: রবিবার, ০১ মে, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ০৩:১৯ পিএম
বায়তুল মোকাররম, খতিব , বসুন্ধরা গ্রুপ , ইসলাম, বাংলাদেশ
জয়বাংলা২৪ স্টক ইমেজ

যা লিখলাম সেটা আমার উপলব্ধি , আমি বলছিনা এটা মেনে নিতেই হবে আপনাদের । আমরা কিছুদিন আগে বায়তুল মোকাররমের নব নিযুক্ত #খতিব #মুফতি_রুহুল_আমীনকে পেয়েছি । এরপরে আমরা দেখেছি সোশ্যাল মিডিয়াতে এক ভিন্নধর্মি প্রতিক্রিয়া । আমরা নবনিযুক্ত খতিব সাহেবের বাবা বা তার পারিবারিক বিষয়ে নেতিবাচক বিষয় নিয়ে অনেক কথা বলেছিলাম । বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনি'র ২৫৬ পৃষ্টায় বর্নিত একটি ঘটনার আলোকে আমরা সেই পরিবারের ছেলেকে বাংলাদেশের জাতিয় মসজিদের খতিব হিসাবে দেখতে চাইনি এটা সত্য । 


আপনাদের ধারণা, হয়তো সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরা বিভিন্ন নেতিবাচক তথ্য #বাংলাদেশ_সরকারের দৃষ্টিতে যায়নি । এটা সম্পুর্ণ ভুল ধারণা । সরকার অবশ্যই দেখেছে, এবং সেই হিসাবে কি করনিয় কি অকরনিয় সেটা নিশ্চিত ভেবেও রেখেছেন ।  যেভাবেই হোক মুফতি রুহুল আমীনকে আমরা খতিব হিসাবে পেয়েছি, সেখানে তার বাবা বা তার পারিবারিক হিসাব যাই থাকুক ।  
আপনারা হয়তো বাংলাদেশের জাতিয় মসজিদের খতিবকে পাড়া মহল্লার মসজিদের ইমাম সাহেবের মতো ধরে নিচ্ছেন । ভাবছেন এই পদে যাকে ইচ্ছা বসানো যায়, আবার মনে চাইলে তাকে সাথে সাথে বের করেও দেয়া যায় । বিষয়টি ভুল শুধু নয়, অজ্ঞতায় নিমজ্জিত । 
মুফতি রুহুল আমীন এর পূর্বে ২০০৯ সালের ৫ জানুয়ারি মাওলানা সালাহ উদ্দিনকে বায়তুল মোকাররমের খতিব নিয়োগ দেয় সরকার। তিনি একটানা খতিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ বছর। ২০১৫ সালে তিনি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ কারণে তিনি আর বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়াতেন না। তার পরও সে সময় সরকার খতিব হিসেবে আর কাউকে নিয়োগ দেয়নি। একই বছরে মাওলানা মোহাম্মদ সালাহ্ উদ্দিন ৩ ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করলে এ পদটি খালি হয়। মাওলানা মোহাম্মদ সালাহ্ উদ্দিনকে যখন পদায়ন করা হয়, তখন মনে আছে কি আপনাদের কি ঘটেছিলো ? তখন তাকে মাজারপন্থী-বেদায়াতি উল্লেখ করে দেশের আলেমরা তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলও করেন আলেম-ওলামারা। অনেকে তিনি খতিব থাকালে বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়বেন না বলেও ঘোষণা দেন। তার পরও তিনি আমৃত্যু দেশের জাতীয় এ মসজিদের খতিবের দায়িত্বে ছিলেন। 


আপনাদের বুঝতে হবে ৯০ ভাগ মুসলমান (কথিত) দেশে ইসলাম বিষয়ে সবচেয়ে বড় অন্তরায় ইসলামের মধ্যে নানা মুখি বিভক্তি । যার ফলে মুফতি রুহুল আমীনকে নিয়োগ দেবার পূর্বে বর্তমান আলেম সমাজ বলেছে,  "যাকে নিয়োগ দেয়া হবে তার যেন ধর্মীয় ও নৈতিক অবস্থান দেখা হয়"। 
আপনারা একটা উত্তর দেবেন ? এই ধর্মিয় নৈতিকতা বলতে আসলে কি বোঝানো হয়েছে? উত্তর নিশ্চই একটি হবে না । যতো বিভক্তি ততো উত্তর হবে । সুতারং আমার ধারণা সরকার বুঝে শুনেই মুফতি রুহুল আমীনকে নিয়োগ দিয়েছেন । আর নিয়োগ দিয়েছেন বাংলাদেশের জাতিয় মসজিদে। পাড়া মহল্লার কোন মসজিদে নয় । আর তাই তাকে তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্তে বাতিল করবে সেটাও সম্ভব নয় । কারন এর সাথে ধর্মিয় সেন্টিমেন্টের ব্যাপার । আর দেশটা বাংলাদেশ । 
অন্যদিকে সরকারের হাতে রয়েছে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে বলা কথাগুলো । তাহলে এখন কি করনিয় ? একটা স্থানে সরকারকেতো যেতে হবে । যাকে সোজা কথায় বলা যায় - রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অনাকংখিত বিপর্যয় এড়াতে সরকারকে কোন একটা ব্যাবস্থা নিতে হবে । 
এখন আসি রাজনীতির সরল অংকে । 


আমরা দেখতে পেলাম, বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি রুহুল আমীনের উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে  বসুন্ধরা গ্রুপের এম ডি সায়েম সোবহান আনভীর কে । কেমন হতো বলেনতো , যদি শোনা যেতো - অস্ত্রধারী কোন সেনা কর্মকর্তাকে তার উপদেষ্টা করা হয়েছে ? 
মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র দিয়ে দুনিয়ায় সর্বত্র আগ্রাসন চালায় । চীন আগ্রাসন চালায় অর্থ দিয়ে। কোনটা বিপদজনক ? কোনটা বেশি তির্যক । সময় থাকলে ভেবে নেবেন । 
আমরা সায়েম সোবহান আনভীরকে দেখা মাত্রই সোশ্যাল মিডিয়াতে নেতি বাচক প্রচারণায় রয়েছি । আপনারা কি ভাবছেন, আপনারা যা ভাবছেন বা লিখছেন সরকার এটা জানেনা বা বোঝেনা ? বোঝে অবশ্যই। বরং আমার আপনার চেয়ে বেশি বোঝে ও জানে।  
সায়েম সোবহান আনভীরকে নিয়ে সবার সামনে যে কথাটি বেশি এসেছে, সেটি হলো - অর্থ । দুনিয়ার কোন দেশ সেই দেশের শিল্পপতি বা তাদের অর্থনীতি ছাড়া স্বাবলম্বী হতে পারেনা । কর্পোরেট এই পৃথিবীতে অর্থ ছাড়া দেশ চলবে না । আর তাই সায়েম সোবহান আনভীর এর অর্থ আছে এটা তার অন্যায় নয় । 
প্রশ্ন হলো- সায়েম সোবহান আনভীরতো ইসলামি লেবাস বা সেই শিক্ষায় শিক্ষিত নন, তাহলে তিনি কিভাবে জাতিয় মসজিদের খতিব সাহেবের উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ পান । 
এখন আমার প্রশ্ন আপনাদের প্রতি, 

 

১। তিনি কি উপদেষ্টা হয়েছেন না কি ইমাম হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন ?  

২। উপদেষ্টা হিসাবে তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন , তিনি কি ইসলামকে ব্যাখ্যা করতে বা প্রতিষ্ঠিত করতে উপদেষ্টা হলেন না কি এডমিনেস্ট্রেটিভ/প্রতিরক্ষা/সমন্বয়কারী হিসাবে উপদেষ্টা হলেন ? 

তিনি যদি জাতিয় মসজিদে ইমামতি, ইসলামকে ব্যাখ্যাকারি, বা প্রতিষ্ঠাকারী হিসাবে কাজ না করে অন্য কোন বিষয়ে উপদেষ্টা হন, তাহলে কি আপনাদের কি কোন আপত্তি আছে ? 


আমি একটু আগেই লিখেছি- যদি কোন অস্ত্রধারী সামরিক কর্মকর্তা উপদেষ্টা হতেন, তাহলে কি বলতেন ? তারপরেই উল্লেখ করেছি আমেরিকা ও চীনের সম্রাজ্য বর্ধনে নীতির কথা । 
যেহেতু সরকার  মুফতি রুহুল আমীনকে নিয়োগ দিয়েছেন, এবং বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনিতে একটা দিকের জন্য দেশের মানুষ সেই নিয়োগকে নেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, আবার তিনি কওমি ঘরানার মানুষ, কওমি ঘরানায় রয়েছে স্কুল কলেজ থেকেও অধিক বিদ্যালয় - যাদের মধ্যে প্রবেশ করে বসে আছে উগ্রবাদী, কট্টরপন্থী, জঙ্গিবাদের নানা দিক - সেই সময়ে সায়েম সোবহান আনভীরকে উপদেষ্টা নিয়োগ যদি আপনাদের বোধগম্য না হয় তাহলে বলার কিছুই থাকে না । 
আমরা সায়েম সোবহান আনভীরকে রাজনীতিতে সরাসরি অংশ নিতে দেখিনি - তাই বলে তিনি দেশের জন্য কাজ করবেন না , বা করতে পারবেন না শুধু মাত্র ধর্মিয় উপাসনালয় বলে সেটা কতটা ঠিক ? আর যদি তিনি ধর্ম সংক্রান্ত না হয়ে অন্য কোন পজেটিভ ইফোর্টে তার অর্থনিতি নিয়ে এগিয়ে আসেন তাহলে আমরা কেন এতো চিৎকার করছি ? বরং ভিতরের কথা ভাবুন, উপরের স্তর নয় - রাজনীতির বাস্তবতা সরল অংকে প্রতিফলিত হবে - কল্পনা বা আবেগে নয় । 

 

  • মোঃ তৈমুর মল্লিক 
  • কলামিস্ট 
  • সাধারণ সম্পাদক 
  • দুর্জয় বাংলা সাহিত্য ও সামাজিক ফাউন্ডেশন 

Daily J.B 24 / জয় বাংলা২৪ নিউজ ডেস্ক

সম্পাদকীয় বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ