
অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে যদি বাংলাদেশকে রেকর্ড পরিমান পণ্য রপ্তানি করতে দেখা যায় সেখানে অবাক হবার কিছুই থাকবে না । করোনা যখন সমগ্র বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লো তখন কিছুটা থমকে হয়তো গিয়েছিলো রপ্তানি খাত, তবুও বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশ যে এগিয়ে ছিলো সেটা সকলের জানা । মহামারী করোনার ধাক্কা সামলে নিয়ে বানিজ্য খাতে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে বেশ ভালোভাবেই।সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি খাত একের পর এক রেকর্ড করে চলেছে।
নতুন রেকর্ড, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের দুই মাস বাকি থাকতেই পণ্য রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। জুলাই-এপ্রিল—এই ১০ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। দেশীয় মুদ্রায় যা পৌনে ৪ লাখ কোটি টাকার সমান।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এই পরিমাণ পণ্য রপ্তানি আগে কখনো হয়নি। সেই বিবেচনায় এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ। অথচ হাতে রয়েছে এই বছরের দুটি মাস। ফলে চলতি অর্থবছর শেষে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি হবে বলে আশাকরা যায়। কি পরিমান পণ্য রপ্তানি হবে সেটি এখন জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে দুইটি মাস ।
রপ্তানিকারকেরা আশা করছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পণ্য রপ্তানি পাঁচ হাজার কোটি ডলারের মাইলফলকে পৌঁছে যাবে বছর শেষে। এর আগে এক বছরে সর্বোচ্চ রপ্তানি হয়েছিল ২০১৮-১৯ অর্থবছরে, ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলার। করোনার কারণে পরের দুই বছরে রপ্তানি কমে যায়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর হিসাব মতে গত এপ্রিলে ৪৭৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। দেশীয় মুদ্রায় যা ৪০ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকার সমান। টাকার এই পরিমাণ বুঝতে পদ্মা সেতুর নির্মাণ খরচের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর প্রকল্পের ব্যয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।
এপ্রিলে ৩৩৭ কোটি ডলারের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তার বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৪৭৪ কোটি ডলারের পণ্য। তার মানে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় ৪০ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। আবার গত এপ্রিলে যে পরিমাণ রপ্তানি হয়েছে, তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি। তবে সার্বিকভাবে গত ১০ মাসে পণ্য রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৫ শতাংশ। জুন শেষে এই প্রবৃদ্ধি যদি কাছাকাছিও থাকে, তাহলে সেটিও হবে রেকর্ড। কারণ, ১০ বছরের মধ্যে গত অর্থবছর সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
অন্যান্য সময়ের মতো পণ্য রপ্তানিতে শীর্ষ স্থানে রয়েছে তৈরি পোশাক। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ৩ হাজার ৫৩৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি হোম টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত এবং প্রকৌশল পণ্য রপ্তানিতে ভালো করছে বাংলাদেশ।
Daily J.B 24 / জয় বাংলা২৪ নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: