• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ; ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

Advertise your products here

Advertise your products here

ঢাকা  শুক্রবার, ৬ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ;   ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

সাজিদ মীরদের মতো জঙ্গিদের হিরো ভাবে কারা ? ২/৪ টি জঙ্গি হামলায় দেশের কি হয় ?

Nazmul Haque Bhuiyan
Daily J.B 24 ; প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ, ১০:৩৩ পিএম
সন্ত্রাসবাদ , টেররিজম , পাকিস্তান , জঙ্গি হামলা
সংগৃহীত

দুই/চারটা জঙ্গি হামলায় কোন দেশের কিছুই হয়না - কিছু মানুষের প্রাণ যায় মাত্র । এমন ভাবনার মধ্যে রয়েছে রক্ত পিপাসু চিন্তা - ইসলাম কায়েম নয় । 

সাজিদ মীর নামের এক জঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে পাকিস্তানে। লাহোরের এন্টি টেরোরিস্ট কোর্ট সাজিদ মীরকে ১৫বছরের সাজা দিয়েছে টেরোরিস্ট কর্মকান্ডে অর্থের যোগান দেয়ার অপরাধে।


কিন্তু হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে এই সাজিদ মীরকে পা কি স্তা ন এতদিন ধরে মৃত ঘোষণা করে আসছিল। এখন এই মৃত জঙ্গী কিভাবে জীবিত হয়ে গ্রেফতার হলেন সেইটা একটা বড় প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। পা কি স্তা ন অবশ্য মুখে ঢিলা কুলুপ এটে বসে আছে। সরকারীভাবে এব্যাপারে কিছুই বলছে না। খবর বেরিয়েছে এফ বি আই এর এক কর্মকর্তার বরাতে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে। অবশ্য পা কি স্তা ন সরকার তাদের মিডিয়ায় জবাবদিহি না দিলেও তাদের আব্বুদেরকে খুশি করতে গোপন চেষ্টা ঠিকই যে বজায় রেখেছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে।


এফএটিএফ (FATF) অর্থাৎ ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স। তারা সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত দেয়ার অভিযোগে নানা শর্ত আরোপ করে পা কি স্তা নকে এতদিন তাদের লিস্টে ‘ধূসর তালিকা’য় রেখেছিল। এফএটিএফ-এর পক্ষ থেকে নাপা-ক সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছিল, শর্ত যদি ঠিক মতো পালন করা না হয়, তাহলে তাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। পা কি স্তা নে এখন নতুন সরকার। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার যে হাল তাতে নতুন করে ভিক্ষা না পেলে পা কি স্তা নকে দ্রুত শ্রীলঙ্কার মত অবস্থা বরণ করতে হবে। এমনিতেই চীন তাদের গোয়াদার বন্দর দখল করে বসে আছে। তাই এফএটিএফ কে খুশী করতেই এখন মৃত জঙ্গীদেরকে জীবিত করে কবর থেকে তুলে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এফএটিএফ খুশি না হলে পশ্চিমা ভিক্ষা পাওয়া যাবে না। 


কে এই সাজিদ মীর? তাকেই কেন?


কারণটা হচ্ছে ২০০৮ সালের ২৬ শে নভেম্বরের মুম্বাই হামলা। পা কি স্তা ন থেকে জলপথে কয়েকজন কুখ্যাত জঙ্গী ভারতের বৃহত্তম শহর মুম্বইতে অস্ত্রসহ গোপনে এসে হাজির হয়। ধারাবাহিকভাবে তারা ১০টিরও বেশি গুলিবর্ষন ও বোমাবিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায়। ২৬ নভেম্বর থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই হামলা চলে। ঘটনায় ১৬৪ জন (১০ জঙ্গি সহ) নিহত ও কমপক্ষে ৩০৮ জন আহত হন। সারা বিশ্বে এই ঘটনা তীব্রভাবে নিন্দিত হয়। পরবর্তীতে সবকটা জঙ্গীকে হত্যা করলেও আজমল কাসাব নামের একজনকে জীবিত গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় ভারত। তার জবানবন্দীতে জানা যায়  জঙ্গীরা ছিল পা কি স্তা নি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য। হামলাকারীরা পা কি স্তা ন থেকে এসেছিল এবং তাদের নিয়ন্ত্রণও করা হয়েছিল সেখান থেকে। পা কি স্তা নের গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) এই পুরো ঘটনায় তাদের মদত জুগিয়েছিল। এমনিতেই লস্কর-ই-তৈয়বাকে ভারত, পা কি স্তা ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘ জঙ্গি-সংগঠনের তালিকাভুক্ত করে রেখেছে তার উপর উইকিলিকসের রিপোর্টে এই হামলার সঙ্গে আইএসআই-এর যোগসূত্রের কথাও বেরিয়ে আসে।


পাকিস্তান প্রথমে ঘটনা সরাসরি অস্বীকার করে। কিন্তু বিভিন্ন তদন্তে পাওয়া এবং সারা দুনিয়ার মিডিয়ায় উঠে আসা তথ্যগুলোর উৎস এতটাই শক্তিশালী ছিল যে পরবর্তিতে স্মীকার করে নেয়া ছাড়া তাদের সামনে আর কোন রাস্তাই ছিল না। ২০০৯ সালের ৭ জানুয়ারি, পা কি স্তা নের তথ্যমন্ত্রী শেরি রহমান সরকারিভাবে স্বীকার করে নেন যে, আজমল কাসব পা কি স্তা নের নাগরিক ছিলো। ২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি, আভ্যন্তরিণ বিষয়ক মন্ত্রী রহমান মালিক বলেন, হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল পাকিস্তানেই। 


২০১০ সালের ৬ মে, একটি বিশেষ আদালত পাঁচটি অপরাধের জন্য জঙ্গী আজমল কাসবকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় ভারতে। এই মুম্বাই হামলার একজন অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিল আজকের গ্রেফতার হওয়া সাজিদ মীর। ভারতের খাতায় সাজিদ মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গির তালিকায় তো ছিলই সেই সঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা FBIও সাজিদের মাথার দাম দিয়েছিল ৫০ লক্ষ টাকা। পা কি স্তা ন এতদিন এই জঙ্গী সাজিদ মীরকে গ্রেফতার করার বদলে ঘোষণা দিয়ে আসছিল সে মারা গেছে। বহু বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়েই মীরকে খুঁজছিল। 


পাকিস্তানের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী হাম্মাদ আজহার বলেছেন যে, পাকিস্তান মীর এবং অন্যান্য মনোনীত সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, যা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেএফএটিএফ (FATF)।


কি ব্যাবস্থা নিয়েছে সে ব্যাপারে খোজ খবর নিতে যেয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন এফবিআই কর্মকর্তা বলেছেন যে মীর পাকিস্তানেই রয়েছে এবং সে জেলে রয়েছে।


এতদিন সাজিদদের মত জঙ্গীদের গ্রেফতার করার কথা পাকিস্তানের কোন সরকারই চিন্তা করতে পারে নাই। কারন সাজিদের মত জঙ্গীরা পাকিস্তানের জাতীয় হিরো। তাদের জানাজায় লাখো লোকের সমাগম হয়। সারা দেশের মোল্লাদের চোখের মনি হচ্ছেন এইসব জঙ্গীরা।


পাকিস্তানের লাখ লাখ মাদ্রাসার মোল্লারা প্রতিনিয়ত তাদের শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন সাজিদদের মত হাজার হাজার ফ্রাঙ্কেস্টাইন তৈরীতে। 

এফএটিএফ এর চাপে পড়ে একটা দুইটা সাজিদকে আপাতত ঝুলিয়ে দিয়ে পার পাওয়া গেলেও সাজিদদের প্রডাকশন পাকিস্তানে কখনোই বন্ধ হবে না আর ওদের লজ্জাও কোনোদিন হবে না। সরকারী মদদে অন্যদেশের ভেতরে নিজেদের ট্রেইন্ড জঙ্গী পাঠিয়ে আবার ধরা খাওয়াটা যে কতটা লজ্জাকর ব্যাপার সেটা তাদের মোটা মাথায় কখনোই ঢোকে না। উল্টা তাদের মোল্লা পার্টি এটা নিয়ে রীতিমতো গর্বে গর্ভবতী হয়ে থাকে। 


ভাবটা এমন, দেখসো মাত্র দশজন মুসলীম বীর গিয়েই পুরা ভারত কাপিয়ে দিয়েছে। গাজওয়াতুল হিন্দ হলে তো নিশ্চিত জয়।

 

লেখকঃ Nazmul Haque Bhuiyan 

 


 

Daily J.B 24 / সন্ত্রাসবাদ

খোলা-কলাম বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ