
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা মাত্র। ১৯৭২ সালের ৩০ জুন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ প্রথম রাষ্ট্রীয় বাজেট ঘোষণা করেন। যার মধ্যে রাজস্ব বাজেট ছিল ২৮৫ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন বাজেট ছিল ৫০১ কোটি। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এই বাজেট আজ অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেছেন। ১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল মাত্র কয়েকশত কোটি টাকার বাজেট দিয়ে, যা আজ ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার কোটি টাকায় পৌছেছে। একবার ভাবুন তো, বাংলাদেশ আজ কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে .....
একদা আমাদের সিংহভাগ বাজেট বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীল ছিল। প্রতিবার বাজেটের আগে উন্নয়ন সহযোগীরা এপ্রিল মাসে প্যারিসে এইড ক্লাবের মিটিং করে বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করে দিতেন। এখন আর সেইদিন নেই, বাংলাদেশ এখন নিজেদের পরিকল্পনা নিজেরাই করে থাকে।
বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে যাত্রা শুরু করা কয়েকশত কোটি টাকার বাংলাদেশ, তারই কন্যার হাত ধরে এখন কয়েক লক্ষ হাজার কোটি টাকায় গিয়ে পৌঁছেছে।
এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, এগিয়ে যাচ্ছি আমরাও।
Shahalam Sajeeb ভাইয়ের এই বক্তব্যের সাথে মিলিয়ে কিছু কথা না বললে নয় -
একটা দেশের বাৎসরিক বাজেট সেই দেশের অর্থনীতির প্রতিচ্ছবি হয়ে সামনে আসে । এই কথাটা না মেনে কোন উপায় নেই ।
হাজার দুর্নীতি (সম্মিলিত সকল দলের) হাজার অর্থ পাচার (সম্মিলিত সকল দলের) হাজারও অনিয়ম (সম্মিলিত সকল দলের) থাকা স্বত্বেও বাংলাদেশের আজকের বাজেট বলে দেয় - বাংলাদেশ উঠে দাঁড়িয়েছে ।
মাথা উঁচু করেছে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে । তার সাহসী পদক্ষেপ , অত্যান্ত কৌশলী কুটনীতি, মুক্তবাজার অর্থনীতিকে করায়ত্ব করা, এবং সেই অনুসারে বাংলাদেশে অবকাঠামো ও বিদ্যুতে আত্মনির্ভর করে , আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল রেখে বিনিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক মহলকে আকৃষ্ট করে, আঞ্চলিক ক্ষমতার ভারসাম্যকে ধরে রেখে যে নেতৃত্বের উদাহরণ তিনি জন্ম দিলেন সেটা আর কারো পক্ষে সম্ভব কিনা সেটা অবশ্যই ভেবে দেখতে হবে বিরোধীদের ।
আজকের বাজেট প্রমাণ করেছে বিগত দিনে বিরোধী শিবিরের যতো বুদ্ধিবেশ্যার দল , দেশে ও বিদেশে বসে চক্রান্ত করে যে সব কথা বলেছিলো, সেসবই এই দেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্য ।
প্রশ্ন হলো - কেন তারা এই দেশের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে চায় ? তারাওতো এই দেশের নাগরিক । এই দেশ স্বাবলম্বী হলে তাদের নিজেদেরও লাভ , তাহলে কেন তারা বিরোধিতা করবে , অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেবে ।
উত্তর খুবই সহজ - যেদিন এই দেশের জন্য বঙ্গবন্ধু হুংকার ছেড়েছিলেন, সেদিন পাকিস্তান, আমেরিকা এবং তাদের বলয় বাংলাদেশের হয়ে বঙ্গবন্ধুর হুংকারকে মেনে নেয় নি । এই দেশকেও না । আজও তারা মেনে নেবে না ।
বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার মূল পরিকল্পনা ছিলো, এই দেশের অগ্রযাত্রা চিরতরে থামিয়ে দিতে এবং চিরকাল পাকিস্তান , আমেরিকার গোলাম বানিয়ে রাখতে । তারা জানতো একমাত্র শেখ পরিবারই এই দেশকে টেনে তুলবে বা তুলতে পারে , আর তাই ছোট্ট রাসেলও সেদিন নিস্তার পায়নি । ভাগ্যজোরে বেঁচে গিয়েছিলো শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ।
সেদিনের সেই পরিকল্পনার চাক্ষুস চিহ্ন আজকের বিএনপি সহ তাদের দোসররা । একই ভাবে তাদের বিরোধিতা এবং শেখ হাসিনাকে হত্যার নীলনক্সা একের পর এক কার্যকর করার জন্য পাগলের মতো ছুটছে । শেষ অবধি ধর্মের কল বাতাসে নড়েছে । সেই শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ আজকের অবস্থানে এসেছে ।
বিশ্বব্যাংক, আই এম এফ , জাতিসঙ্ঘ এসবই আমেরিকার দাস । চাবি আমেরিকার হাতে । তারা কখনই চাইবে না কোন দেশ স্বাবলম্বী হয়ে বিশ্বব্যাংক, আই এম এফ ইত্যাদি অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে যাক । তাদের প্রচেষ্টাই দুনিয়ার সব দেশকে দুর্বল করে রেখে তাদের নিকট হাত পাততে বাধ্য করা ।
শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু বানিয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছে । বিশ্বব্যাংক যে দুর্নীতির কথা বলেছিলো, কানাডার আন্তর্জাতিক আদালত সেটাকে হাস্যকর কল্পকাহিনী বলে উল্লেখ করে প্রমাণ করে দিয়েছে ষড়যন্ত্র ছিলো ।
সকল ষড়যন্ত্র ছিন্ন করে এক শেখ হাসিনার কৌশলের নিকট পরাজিত পাকিস্তান, আমেরিকা সহ বিশ্বব্যাংক সহ নানা অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান । অথচ আমাদের দেশের মধ্যে সেই পাকিস্তানের এজেন্টগণ সমানে মিথ্যাচার করেই চলেছে । যখন মিথ্যাচার করে করে পদ্মাসেতু থামাতে পারেনি, তখন তারা নিজেরাই দাবি করছে পদ্মাসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথা । অথচ তারা যে সময়ের কথা বলছে , তার আগের টার্মে শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিলো তখনই পদ্মাসেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছে , আর সেটা করেছেন শেখ হাসিনা নিজেই ।
জাইকার হিসাব নিকাশ দিয়ে যে বক্তব্য তারা তুলে ধরার চেষ্টা করেছে সেটাও যে জাইকা বাতিল করেছিলো তাদের আমলে সেই কথা বলছে না ।
আজকের বাজেট চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে শেখ হাসিনা মিথ্যা, চক্রান্ত, আন্তর্জাতিক রক্তচক্ষুর বিরুদ্ধে এক আপোষহীন নেতা । যার বিকল্প তিনি নিজেই ।
জয়তু শেখ হাসিনা।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: