
মধ্যপ্রাচ্যের ৩টি দেশের ৩০০ কোটি টাকা ব্যায়ে, সিআইএ ও আইএসআই-এর নিঁখুত পরিকল্পনায় দেশীয় বেঈমান মোস্তাক-জিয়া, ফারুক-রসিদ চক্রের সহায়তায় ১৫-ই আগষ্ট জাতির পিতা শেখ মুজিবকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বিশ্বের ইতিহাসে নির্মম এ হত্যাকান্ড ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের চরম এক ঘৃণ্য প্রতিশোধ। ১৯৭৪ সালে ভূট্টোর বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে দেশীও ষড়যন্ত্রকারীরা পূর্ণ উদ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সফল করতে মাঠে নামে।
শেখ মুজিব সরকারে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো “বঙ্গবন্ধুর” হত্যাকাণ্ড ঘটতে দেওয়া। এ ব্যর্থতা তৎকালীন শেখ মুজিব সরকারের সকল প্রশাসনের উপর বর্তায়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্র চলছে তা জানা সত্তেও তাঁর নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ হওয়ার দায়ও রাষ্ট্রের উপর পড়ে। হত্যা পরবর্তী পরিস্থিতে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ব্যার্থতার দায়ও দল হিসাবে আওয়ামী লীগ অস্বীকার করতে পারে না।
হত্যা এবং হত্যা পরবর্তী এই দুটো ঘটনায় প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধু ছিলেন সূর্যালোকের ন্যায় উজ্জল, যে আলোর আভায় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ আলোকিত হয়েছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং রাজনীতে আলোচিত হয়েছেন কিন্তু শেখ মুজিবের মৃত্যুতে সে উজ্জল আলো নিভে গেলে অন্যানরাও অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন, রুখে দাড়িয়ে নেতৃত্ব দিতে ব্যার্থ হয়েছেন এবং নির্বোধের মত তারাও ষড়যন্ত্রকারীদের হাতে নিহত হয়েছেন। তার মানে দাড়ায় শেখ মুজিব ছিলেন বাঙ্গলার আকাশে একমাত্র উজ্জল এক নক্ষত্র। বাকীরা তাঁর আলোয় আলোকিত হয়েছিলেন মাত্র। শেখ মুজিবের অনুপস্থিতে তারা নেতৃত্ব দিতে পুরোপুরি ব্যার্থ হলেন। কেউ মেনে নিক বা নিক এটা আমার একান্ত নিজেস্ব অভিমত।
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ একে অপরের পরিপূরক।
’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যার সফল বেনিফেসিয়ারী প্রথম সামরিক শাসক জেঃ জিয়া দেশ যেভাবে পরিচালিত করেছেন, সেখানে বাংলাদেশের মৌলিক চরিত্রের কিছুই তিনি বজায় রাখেননি। তখন বঙ্গবন্ধুকে শুধু মানুষের মন থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে তা নয়, সবকিছু তাঁর আদর্শের বিপরীতে চালানো হয়েছে দেশ। মুক্তিযুদ্ধ, জয় বাংলা ও বঙ্গবন্ধু শব্দগুলি উচ্চরণ করা পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল, এ সবই করা হয়েছিল পরিকল্পনানুযায়ী স্বাধীন বাংলাদেশের চেতনার বিরুদ্ধে।
২১ বছর পর বঙ্গবন্ধুর সেই দল ক্ষমতায় আসার পরে মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশ পরিচালনার প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে বারবার, কিছুটা পথ অগ্রসরও হয়েছে কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখনও সেই আদর্শ প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ সন্তোষজনকভাবে সফল হতে পেরেছে কি? আওয়ামী লীগের উচিত আরও অনেক বেশি দৃঢ়তা ও সাহসিকতার সঙ্গে স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক রীতিনীতি মেনে চলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা। একটি সমতাভিত্তিক, সামাজিক ন্যায়বিচারসম্পন্ন এবং মানবসত্তার মর্যাদা রক্ষায় নিবেদিত জাতি গঠনে রাজনৈতিক ও সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সুযোগের ওপর জোর দিতে হবে আওয়ামী লীগকে। শোক দিবসে জাতির পিতাসহ সকলের মাগফেরাত কামনা করে শেষ করলাম, সবাইকে ধন্যবাদ।
by Sheikh Saifuzzaman, Austria
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: