
২৫ মার্চ দিবাগত রাতে সোয়াত জাহাজ থেকে পাকিস্তানিদের পক্ষে অস্ত্র খালাস করতে যাচ্ছিলেন জিয়া,
• ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম একটি প্রবন্ধে জিয়া সম্পর্কে বলেছেন:
“চট্টগ্রাম থেকে আমরা খবর পেলাম পশ্চিম পাকিস্তান থেকে ‘সোয়াত’ জাহাজে করে অস্ত্র এসেছে। বঙ্গবন্ধু হাজী গোলাম মোর্শেদের মাধ্যমে চট্টগ্রামে মেজর জিয়ার কাছে একটি নির্দেশ প্রেরণ করেন। খবরটি ছিল সোয়াত জাহাজ থেকে যেন অস্ত্র নামাতে না দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে মেজর জিয়া কোনো সক্রিয় ভূমিকা পালন না করায় পরবর্তীকালে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা হয়নি।” [সূত্রঃ ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র’, (পঞ্চদশ খণ্ড) পৃ. ৫৫]
• মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেক্টর ১ এর সেক্টর কমান্ডার মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) তাঁর বইতে লেখেন:
“নিয়তির কি বিচিত্র বিধান! তার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। সে ছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ এর রাত। সেই দু’জন অফিসারের একজন-লে. কর্নেল এম. আর. চৌধুরীকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বন্দি করল। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানিদের যে বিশ্বাস করেছিলেন, ২০ বালুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে সেই বিশ্বাসের জবাব দিল। অফিসারদ্বয়ের অন্যজন, মেজর জিয়াউর রহমান, রাত সাড়ে এগারোটায় যাচ্ছিলেন চট্টগ্রাম পোর্টে ‘সোয়াত’ জাহাজ থেকে অস্ত্র গোলাবারুদ নামিয়ে ক্যান্টনমেন্টে আনার কাজে পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাহায্য করার জন্য।” [সূত্রঃ ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’, - রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, অনন্যা, দ্বাদশ মুদ্রণ, জুন ২০২১, পৃ. ৩১]
• “তার (জিয়ার) কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল জানজুয়ার নির্দেশে ‘সোয়াত জাহাজ’ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ নামিয়ে তা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে আসার জন্য তিনি চট্টগ্রাম পোর্টে যাচ্ছিলেন। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, চট্টগ্রাম নিউমার্কেট শাখার ম্যানেজার জনাব কাদের যখন ডা. জাফর ও কায়সারের কাছ থেকে আমার ‘ম্যাসেজ’টি নিয়ে ৮ম ইস্ট বেঙ্গলে গিয়ে পৌঁছেন, মেজর জিয়া ততক্ষণে বেড়িয়ে পড়েছেন কর্নেল জানজুয়ার কাছ থেকে নির্দেশ নিতে এবং তারপর রওয়ানা হয়েছেন চট্টগ্রাম পোর্টের অভিমুখে। জনাব কাদের তখন ম্যাসেজটি ৮ম ইস্ট বেঙ্গলের বাঙালি ডিউটি অফিসারকে দিয়ে চলে আসেন। এই ম্যাসেজ পেয়েই ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান মেজর জিয়াকে সর্বশেষ ঘটনা জানাতে এবং ‘সোয়াত’ জাহাজে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে একটি গাড়ি নিয়ে ছুটে চলল মেজর জিয়ার সন্ধানে।” [ সূত্রঃ ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’, - রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, অনন্যা, দ্বাদশ মুদ্রণ, জুন ২০২১, পৃ. ১৩৪]
• লেখিকা মিনা ফারাহ জিয়া সম্পর্কে লিখেছেন:
“২৫ মার্চ এই দিনেও জিয়া যুদ্ধে না গিয়ে, পূর্ব পরিকল্পনামতো পাকিস্তানের ২০ বালুচকে আগেভাগে আক্রমণ না করে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে বিশাল গণহত্যা ঘটতে দেয়। নিজের সৈন্যগুলোকে নিষ্ক্রিয় রেখে বরং রাত ১১.৩০ মিনিটে দুই পাকিস্তানি জওয়ানকে সঙ্গে করে ‘সোয়াত’ জাহাজে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দিল গণহত্যার জন্য বয়ে আনা পাকিস্তানের অস্ত্র খালাস করতে, যার সবই জিয়া জানত। জিয়া ’৭০ থেকেই চট্টগ্রামে পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করছিল। সোয়াত জাহাজের অস্ত্রসহ সব খবরই তার জানা।”[ সূত্রঃ ‘হিটলার থেকে জিয়া’, চারুলিপি, ৫ম মুদ্রণ-২০০৯, পৃ. ৯-১০]
• স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বেলাল মোহাম্মদ যদি ২৭ মার্চ পটিয়া থেকে কালুরঘাটে জিয়াকে ডেকে না নিয়ে আসতেন, জিয়া রেডিওতে আসতেনই না। এর আগেই এম এ হান্নান ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন। [ সূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর: একটি নির্দলীয় ইতিহাস, পৃ. ৮৮]
• জিয়াউর রহমান নিজেই লিখেছেন, “২৫ও ২৬ মার্চের মধ্যবর্তী কালরাত । রাত ১১ টায় আমার কমান্ডিং অফিসার আমাকে নির্দেশ দিলো নৌ বাহিনীর ট্রাকে করে চট্রগ্রাম বন্দরে গিয়ে জেনারেল আনসারির কাছে রিপোর্ট করতে “। [‘একটি জাতির জন্ম’, জিয়াউর রহমান, বিচিত্রা, স্বাধীনতা দিবস সংখ্যা, ১৯৭৪]
©Amader Muktijuddho
Daily J.B 24 / জয় বাংলা২৪ নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: