
আওয়ামী রাজনীতিতে অন্যান্য দল থেকে এসে নাম লেখাতে পারবে এমনি একটি বক্তব্য আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবের নিকট থেকে পাওয়া গিয়েছিলো অনেক আগেই। এরপরে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। শোনা যায় জামাতের ৩০ হাজারের বেশি সদস্য আওয়ামী রাজনীতিতে প্রবেশ করেছে। এসেছে বিএনপি হতে। বাম ডান কোন দিক থেকেই কম আসেনি। আগামী জাতীয় নির্বাচন বিষয় মাথায় রেখে সকল দলই কৌশলগত অবস্থানে কাজ করছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আওয়ামিলীগের নীতি নির্ধারকগন নীতিগত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন - জামায়াত বাদে বিএনপি বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী যে কোনও দলের নেতাকর্মীরা আওয়ামী রাজনীতিতে নাম লেখাতে পারবেন। তবে বড় পদ পাবেন না তারা। এমনটাই শোনা গিয়েছে।
তারা এমনটাই ভাবছে যে, দলের নীতি-আদর্শে বিশ্বাস করলে নতুন যোগ দেয়া ব্যক্তিদের অনুপ্রবেশকারী মনে করা হবে না। বিভিন্ন নির্বাচনে দলের বিদ্রোহীদের বিষয়েও নমনীয় মনোভাব পোষন করছে বলে জানা গেছে ।
দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মি দলে অনুপ্রবেশ বিষয়ে বিভিন্ন সতর্ক বার্তা দিলেও বর্তমান চিন্তাধারা উল্লেখিত সকল বিষয়কে কৌশলী রাজনীতি বলে প্রতিয়মান হয় । আগামী ডিসেম্বর জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে এরইমধ্যে তড়িঘড়ি করে তৃণমূলের সম্মেলন আয়োজনে হাত দিয়েছে দলটির হাইকমান্ড। কিন্তু অভিযোগ আছে ।
সম্প্রতি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ইউনিট কমিটির সম্মেলনে সুযোগ পেয়েছেন অনেক অনুপ্রবেশকারী। এ নিয়ে অভিযোগ জানালেও নেতৃত্বে অসন্তোষের দায় এড়াতে এসব বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে চান না কেউই।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মারফত জানা যায়, অন্য দল থেকে আওয়ামী লীগে সুযোগ দেয়া হলেও দলীয় কৌশল হচ্ছে, তাদের রাতারাতি বড় কোনও পদ দেয়া যাবে না। বড় পদে পেতে অন্তত পাঁচ থেকে সাত বছর রাজনীতি করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, যদি কোনো হাইব্রিড বা অনুপ্রবেশকারী দলে এসে থাকে এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে , তার সমস্ত তথ্য আমাদের কাছে আছে। কেউ যদি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়, তাহলে তাকে আওয়ামীলীগে যোগদান করার অধিকার দলের গঠনতন্ত্রে দেয়া আছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছে এই ক্ষত্রে দলের যোগ্য নেতারা বঞ্চিত হচ্ছেন কিনা, সে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, দলের দুর্দিনে ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে অনেক জায়গায় একেবারে সদ্য যোগদানকারী নেতাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হচ্ছে। এটা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না, তৃণমূল পর্যায়ে। এ রকম অভিযোগ যদি থাকে, সেক্ষেত্রে আমরা সংশোধনের চেষ্টা করবো।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা অনুপ্রবেশকারী নেতাদের দলে সুযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানান । অন্যদিকে দলের বিদ্রোহীদের বিষয়ে নতুন কৌশল নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তারা।
দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, যারা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন, তারা দলের কেউ হতে পারবেন না; বিষয়টি এ রকম না। দলের নিশ্চয় কেউ হতে পারবে এবং দলেরই তারা সন্তান। আমাদের ঘরেরই ছেলে তারা। সামনে জাতীয় নির্বাচন, সুতরাং সে নির্বাচনকেও সামনে রেখে আমাদের অনেকগুলো বিষয় পুনর্বিবেচনায় এনে বিজয়ের ফসল ঘরে আনার জন্য বিভিন্ন কৌশল আমাদের নিতে হতে পারে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে কেউ দলের জন্য ক্ষতিকর কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন তারা। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেবে দলের হাইকমান্ড।
প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে -
জামাতের হাজার হাজার কর্মি ইতিমধ্যেই আওয়ামীলীগে যোগদান করেছে । তাদেরকে আওয়ামীলীগ কি সনাক্ত করতে পেরেছে ? বর্তমানে জামায়াত ছাড়া বিএনপি বা অন্যান্য দলের সাথে রক্তের সম্পর্কের মতো সম্পর্ক রেখে যদি বর্তমানে আওয়ামীলেগের জন্য কথা বলে , তাহলে তার কথা ও কাজকে সনাক্ত করার মতো যথেষ্ট আন্তরিকতা আওয়ামীলীগের নীতি নির্ধারকদের আছে কি না ! এই সিদ্ধান্ত আওয়ামীলীগ নাকি সারাদেশে ভাইলীগের জন্য নেয়া হয়েছে?
ইতিমধ্যে সারাদেশে হাইব্রিড বা অনুপ্রবেশকারীদের ভিড়ে ভাইলীগের জয়জয়কার আওয়ামীলীগ তথা শেখ হাসিনার জন্য কতটা নিরাপদ ও আস্থার কথা বলে ?
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: