
বিএনপি`র মধ্যে একটি বড় অংশ এখন সরকারবিরোধী নতুন করে আন্দোলন শুরুর পক্ষে।তবে বিএনপি`র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন পর্যন্ত এরকম আন্দোলনের পক্ষে না। আর তিনি না থাকার কারণে বিএনপি`র একটি অংশ এখনই বড় ধরনের আন্দোলনে যেতে অনাগ্রহী। বিএনপি`র মধ্যে মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ বেশ কিছু তরুণ নেতারা মনে করছেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনের এখনই সময়। কিন্তু মির্জা ফখরুল মনে করছেন, এখন আন্দোলন করার কোনো বাস্তব ইস্যু নেই। যে কারণে আন্দোলনের ব্যাপারে আগ্রহ নেই মির্জা ফখরুলের। সে কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে,
প্রথমত, বিএনপি এখনো সাংগঠনিকভাবে পূর্ণাঙ্গ নয়। সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে। এ অবস্থায় আন্দোলন গড়ে তোলার মতো সাংগঠনিক শক্তি বিএনপি`র নেই।
দ্বিতীয়ত, বেগম খালেদা জিয়া`র মুক্তি। এখন যদি বিএনপি সরকারবিরোধী কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং আন্দোলনে যায় তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে। মির্জা ফখরুল বিএনপির একাধিক নেতাকে বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির একটা চেষ্টা চলছে। এই অবস্থায় বড় ধরনের কোনো আন্দোলনে গেলে সেটি খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে।
তৃতীয়ত, জনগণ প্রস্তুত নয়। যৌক্তিক কারণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়, দেশের মানুষ ইতিমধ্যে বিষয়টি মেনে নিয়েছে। অতএব এসময় যদি সরকারবিরোধী আন্দোলন করা হয় তাহলে সেই আন্দোলনে জনগণ সায় দেবে না বরং জনগণ বিরক্ত হতে পারে।
চতুর্থত, মির্জা ফখরুল মনে করছেন নেতৃত্বের সংকট। এরকম একটি আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য একজন নেতা দরকার। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া এখন দলকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত নন। একইভাবে তারেক রহমান দেশের বাইরে। আর অন্য বিএনপি`র যে নেতারা আছে তাদের নেতৃত্বে আন্দোলন করার মতো সক্ষমতা বিএনপি`র নেই।
তবে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ আন্দোলনের পক্ষে যে সমস্ত নেতৃবৃন্দ আছেন তারা মনে করছেন, মির্জা ফখরুলের সঙ্গে সরকারের অঘোষিত একটি সম্পর্ক রয়েছে। বিএনপি`র একজন যিনি এখন থেকেই ধাপে ধাপে আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষপাতী তিনি বলেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে অনেক আগে থেকেই সরকারের গোপন সম্পর্ক রয়েছে এবং এ কারণেই তিনি ২০১৮ এর নির্বাচন নিয়ে রীতিমতো জোর করে বিএনপিকে নিয়েছিলেন। তার কারণেই বিএনপি`র হাতেগোনা কয়েকজন সদস্য সংসদে গিয়েছেন। তার কারণেই বিএনপি এখন একটি বিবৃতি সর্বস্ব দলে পরিণত হয়েছে। মির্জা ফখরুল যতদিন বিএনপি মহাসচিব থাকবে ততদিন বিএনপি`র পক্ষে কোনো আন্দোলন করা সম্ভব নয় বলেও তারা মনে করছেন। আর এই সব বাস্তবতাতেই মনে করা হচ্ছে যে, শেষ পর্যন্ত হয়তো আন্দোলনে বিভক্ত বিএনপি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।
Daily J.B 24 /
আপনার মতামত লিখুন: