
বর্তমান সরকারের যে পরিকল্পনাগুলো সুদূরপ্রসারী এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে বড় ভূমিকা রেখেছে, তার মধ্যে একটি হলো বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ। তবে এটি উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে এখন অব্দি দেশবিরোধী ও বিএনপি-জামায়াত চক্রের অপপ্রচার চলছে। ৮ম শ্রেণি পাশ বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, যাকে কাগজে লিখে না দিলে কোনো বিষয়ে দুই লাইন বলতে পারেন না, তিনি এক সভায় স্যাটেলাইট নিয়ে বলেছিলেন- সরকার কী একটা আনছে, নিচে আগুন দিছে, আর আকাশে উড়ে হারায় গেল...।
তার এমন ভাঁড়সুলভ মন্তব্য ব্যাপক আনন্দ-বিনোদন যুগিয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের। সেই গণ্ডমূর্খরা আজও জানে না, স্যাটেলাইটের কাজ কী। এমনকি এ থেকে বাংলাদেশ যে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে এবং বিভিন্ন পরিষেবা বাবদ বিপুল অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় করছে, সেটিও তারা জানে না। এসব জ্ঞানপাপী এখন দেশে বন্যা পরিস্থিতিতেও স্যাটেলাইট নিয়ে ট্রল করছে। তারা উদ্ভট প্রশ্ন করছে- স্যাটেলাইট দিয়ে বন্যা থামাতে পারেনি কেন সরকার? প্রশ্ন যতই উদ্ভট হোক না কেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট এই দুর্যোগে কতটা ভূমিকা রাখতে পারছে, আসুন দেখে নেয়া যাক।
সিলেটে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট ব্যবহার করে জরুরি টেলিসেবা স্থাপন করার কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বন্যা কবলিত সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ কিছু এলাকায় দুর্যোগকালীন জরুরি টেলিযোগাযোগ সেবা স্থাপনে ব্যবহৃত হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।
বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) এরই মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ১২ ইউনিট ভিস্যাট যন্ত্রপাতি দিয়েছে, যার মাধ্যমে জরুরী টেলিযোগাযোগ সেবা স্থাপন করা হবে। এছাড়াও বিএসসিএল সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরকেও আরো ২৩ ইউনিট ভিস্যাট যন্ত্রপাতি দেওয়ার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে আরো ২৩টি বন্যা উপদ্রুত এলাকায় জরুরি টেলিযোগাযোগ সেবা স্থাপন করা হবে।
এসব ভিস্যাট যন্ত্রের মাধ্যমে দুর্যোগকালীন সময়ে নিরবিচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিএসসিএল ইতোমধ্যে একটি মনিটরিং সেল গঠন করেছে, যেটি মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করবে। এছাড়া বন্যা কবলিত নীলফামারীতেও আজ ভিস্যাট পাঠানো হবে।
এখানে উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের অজানাসংখ্যক ট্রান্সপণ্ডার বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর নিজস্ব ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে এসব ট্রান্সপণ্ডারের কার্যক্রম এবং কর্মপরিধি সম্পর্কে বিশদভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। আর এসব ট্রান্সপণ্ডার ব্যবহারের জন্য আলাদা করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সাথে বিএসসিএলের চুক্তিও আছে।
এই চুক্তির আওতায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অধীনস্ত তিন বাহিনী (সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনী) এবং ডিজিএফআইসহ কয়েকটি সংস্থা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ট্রান্সপণ্ডারগুলো ব্যবহার করে আধুনিক, নিরাপদ ও উন্নত টেলিযোগাযোগ স্থাপন আগেই সম্পন্ন করেছে।
Daily J.B 24 / Newsdesk
আপনার মতামত লিখুন: