
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের মধ্যে ধীরে ধীরে ভয়ের জন্ম দেয় কারা ? সনাক্ত ও কঠোর হাতে দমন না করলে ফলাফলে গড়ে উঠবে বিজ্ঞান বিবর্জিত শিক্ষাহীন জাতি । এখন চলছে সনাতন ধর্মের শিক্ষকদের প্রতি আক্রমন, এরপরে নিশ্চই নারী শিক্ষক এবং তারপরেই নিশ্চই প্রগতীশীল মুসলিম শিক্ষক । না হয় প্রগতিশীল পরে নারী শিক্ষক ।
আজ হয়তো দেখছেন সনাতন ধর্মের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মের অবমাননা হচ্ছে এই অজুহাতে ন্যাক্কারজনক আক্রমণ চলছে। বিষয়টি অতি ক্ষুদ্র বা আদেও বিষয়টি ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করেছে কিনা সেটা বিচারিক সময় না দিয়েই কাজ যা করার সেটা সম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে। যার পিছনে রয়েছে ধর্মিয় উম্মাদনা, ধর্মিয় অন্ধত্ব, এবং সুদুরপ্রসারি পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ।
উপসর্গ যা বলছে, এতে ২য় ধাপে থাকবে হয় নারী প্রশিক্ষক বা ইসলাম ধর্মের অনুসারী অথচ ধর্মান্ধ নয়, বলতে পারেন প্রগতিশীল শিক্ষকগণ। কিন্তু কবে নাগাদ সেটা হবে, বিষয়টি নির্ভর করবে সনাতন ধর্মের শিক্ষকদের কত দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করে তার উপর। অলরেডি সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বী, প্রগতিশীল, নারী শিক্ষক সকলেই মারাত্মক ভিত। অনেকটা জিম্মি থাকার মতো। এবং ভয় বা ত্রাসের যে সময় সেই সময়কে লুফে নিতে শুরু করেছে এবং তার প্রয়োগ হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে যাকে পছন্দ করেনা অর্থাৎ পছন্দ নয় এমন ব্যাক্তির উপর।
যেখানে ছাত্র ছাত্রীদের অবনত মস্তকে শিক্ষকদের সামনে দাঁড়ানোর কথা, সেখানে শিক্ষকদের কেউ কেউ ছাত্র ছাত্রীদের সামনেই অবনত মস্তকে দন্ডায়মান। এক কথায় সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুপরিকল্পিত ভাবে ধর্মকে ব্যাবহার করে একটি ভয় বা ত্রাসের রাজত্ব গড়ে উঠেছে। যারফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাগ্রহণ বা প্রদান ব্যাহত বলাচলে শতভাগ। একজন শিক্ষক পাঠদানকালে বিভিন্ন উদাহরণ ব্যাবহার করে। সেই উদাহরণের মধ্যে ধর্মকে আঘাত করেনা এমন বিষয়ের খন্ডিত অংশ শ্রেনিকক্ষেই ভিডিও হয় এবং সেটাই প্রচার হয় সোশ্যাল মিডিয়াতে। ভগ্নাংসের হাত ধরে ফুসে ওঠে সেই ওতপেতে থাকা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। কোন বিচার ছাড়াই রায় হয়ে যায় পূর্বেই। যা ঘটার তা ঘটেই যায়। এরপরে সেটা নিয়ে মামলা হলেই কি, না হলেই কি। বিচারিক পক্রিয়ার ফাঁকফোকর ও দীর্ঘসূত্রতার হাত ধরে রায় বেরিয়ে আসার আগেই শিক্ষকের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়।
আর তাই চাইলেও শিক্ষকগণ পারছে না একটি পাঠদান সঠিক ভাবে উদাহরণ সহ উপস্থাপন করতে। পাছে কোন অংশ আবার ভিডিও হয়, কোন শব্দ ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় রিউমারস ছড়িয়ে পড়ে। ফেক আইডি খুলে জেহাদের ডাক দেয়া হয়। আপাতত আমরা দেখছি, নামে বেনামে সোশ্যাল মিডিয়া ছয়লাব আইডিতে। অথচ নেই কোন প্রতিকার।
শ্রেনিকক্ষে মোবাইল ব্যাবহার নিষিদ্ধ করতে পারিনি সারাদেশে। আইন থাকলেও প্রভাব ও পেশির জোরে মোবাইল নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলাচল শতভাগ। কোন এক অজ্ঞাত কারনে এসব আমরা বন্ধ করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যার্থতা নাকি অন্তর্নিহিত কোন ষড়যন্ত্র সেটা জানিনা। আর তাই ১ম ধাপে সনাতন ধর্মের শিক্ষদের অপমান কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা।
১ম পর্ব সমাপ্ত হলে ২য় পর্বে হয় নারী শিক্ষক বা প্রগতিশীল ইসলাম ধর্মের অনুসারী শিক্ষকদের প্রস্তুত থাকতে হবে একি পরিস্থিতি মেনে নেবার জন্য। এক কথায় অত্যান্ত চাতুরতার সাথে সূক্ষভাবে দেশের শিক্ষার উপর আক্রমণ শুরু হয়েছে। নিশ্চই বুঝতে পারছেন শিক্ষাহীন জাতির ভবিষ্যত কি। আপনারা এর প্রমান চাইলে পাকিস্তানের ইতিহাস পড়ুন এবং সেখানে কিভাবে শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি ধ্বংস করেছে কট্টরপন্থী মৌলবাদ। ৭১ এ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আক্রমণ ছিলো শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতিতেই। সেই আক্রমণ তারা কার্যকর করতে পারেনি, শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু ছিল বলে। আজতো আমাদের আছে শেখ হাসিনা সেই আশায় আমরাও বলতে পারি এবারও পারবে না। তবুও ভয় হয়, তবুও শঙ্কা জাগে। আমরা দ্রুত কোন অন্ধকারের দিকে চলে যাচ্ছিনাতো? আমরাতো চোখের সামনে পাপস্তান, আফগান দেখছি। যাদের হাতে ভিক্ষার ঝুলি ছাড়া আর কিছুই নেই।
তবে শেষ কথা বলে রাখি, অবস্থার উন্নতি না হলে প্রস্তুত থাকুন নারী শিক্ষক, প্রগতিশীল ইসলাম ধর্মের অনুসারী শিক্ষক। একই দিন আপনাদের জন্যও আসছে।
Daily J.B 24 / নিউজ ডেস্ক
আপনার মতামত লিখুন: